হায়দরাবাদ: মঙ্গলবার অদ্ভুত এক ঘটনার সাক্ষী হয়ে রইল তেলঙ্গনা সহ গোটা দেশ। তেলঙ্গনার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও (Telangana CM K. Chandrashekhar Rao)-এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রতিবাদ দেখাতে ব্যস্ত ওয়াইএসআরটিপি প্রধান শর্মিলা রেড্ডি (YSRTP Chief Sharmila Reddy)। প্রতিবাদ জানাচ্ছিলেন গাড়ির ভিতরে বসেই। গাড়ি নিয়ে তিনি তখন মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনের ভিতরে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কোনও সমাধান না পেয়ে পুলিশ তাঁর গাড়ি ক্রেন দিয়ে টেনে তুলে নিয়ে গেল, তখন শর্মিলা গাড়ির ভিতরেই বসে। সোমবার টিআরএস কর্মী-সমর্থকরা তাঁর উপর হামলা চালিয়েছিল, সেই অভিযোগ তুলে তিনি এদিন অভিনব প্রতিবাদের ভাষা বেছে নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অফিস ও বাসভবন প্রগতি ভবনে (Pragati Bhavan) প্রবেশের চেষ্টা করছিলেন।
একটি সর্বভারতীয় সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, গাড়ি ক্রেন দিয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ শর্মিলা রেড্ডিকে গ্রেপ্তার করে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে অনধিকার প্রবেশের অভিযোগে। পরে তাঁকে স্থানীয় থানায় স্থানান্তরিত করা হয়। ক্রেন দিয়ে শর্মিলার গাড়িটি টেনে নিয়ে যাওয়ার ভিডিয়ো টুইটার ভাইরাল হয়েছে। ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, শর্মিলা গাড়িতে বসে। তাঁর গাড়ির কাঁচ ভাঙা। চারদিকে ঘিরে রয়েছেন দলের কর্মী-সমর্থকরা। সেখানে সংবাদ মাধ্যমের লোকজনও রয়েছেন। তাঁদের মাঝেই গাড়িটি ক্রেন দিয়ে টানতে শুরু করে পুলিশ।
#WATCH | Hyderabad: Police drags away the car of YSRTP Chief Sharmila Reddy with the help of a crane, even as she sits inside it for protesting against the Telangana CM KCR pic.twitter.com/i7UTjAEozD
— ANI (@ANI) November 29, 2022
প্রসঙ্গত, সোমবার অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস জগন মোহন রেড্ডি (Andhra Pradesh Chief Minister YS Jagan Mohan)-র বোন ওয়াই এস শর্মিলার সমর্থক এবং তেলঙ্গনা রাষ্ট্রীয় সমিতি (Telangana Rashtra Samithi – TRS)-র কর্মীদের মধ্যে ঝামেলা বেঁধেছিল তেলঙ্গনার ওয়ারঙ্গাল জেলায় (Warangal District)। পুলিশ এরপর শর্মিলাকে গ্রেপ্তারও করে। গতকালই কিছু ব্যক্তি ওয়াইএসআরটিপি প্রধান শর্মিলার কনভয়ে থাকা ক্যাম্পেন বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর অভিযুক্তরা ঘটনাস্থল থেকে তৎক্ষণাৎ পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পুলিশ তারপর জানায় যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
রাজ্যের বর্তমান আইন-শৃঙ্খলার পরিস্থিতি জেরে পুলিশ গতকালের প্রজা প্রস্থনম (Praja Prasthanam) পদযাত্রার অনুমতি সাময়িকভাবে বাতিল করে দেয়। প্রগতি ভবনের উদ্দেশ্যে এদিন যে তিনি যাচ্ছিলেন, সে বিষয়ে পুলিশকে আগে থেকে কিছুই জানানো হয়নি। এদিন পঞ্জগুট্টা সার্কেল (Panjagutta circle)-এর কাছে পুলিশ যেখানে শর্মিলার গাড়ি আটকায়, তখন সেই সময় দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে নতুন করে ঝামেলা বাঁধে এবং একে অপরের বিরুদ্ধে স্লোগান দিতেও থাকেন তাঁরা।
উল্লেখ্য, গত ২২৩ দিন ধরে তেলঙ্গনায় পদযাত্রা করছেন শর্মিলা। এখনও পর্যন্ত তিনি সাড়ে ৩,৫০০ কিমি পদযাত্রা করেছেন তেলঙ্গনার ৭৫টি বিধানসভা কেন্দ্র জুড়ে। শর্মিলার বক্তব্য, তাঁর দলের পদযাত্রা রোজই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সেটাই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর কেসিআর দলের কাছে আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছে। যে কোনওভাবে তাঁদের থামানোর চেষ্টা চালানো হচ্ছে।