ওয়েব ডেস্ক: বাজেট (Union Budget 2025) ঘোষণার পর থেকেই দেশজুড়ে আলোচনা তুঙ্গে। একদিকে কেন্দ্রীয় সরকার এটিকে উন্নয়নমুখী বাজেট হিসেবে তুলে ধরছে, অন্যদিকে অর্থনীতিবিদদের একাংশ বলছেন, এটি সাধারণ মানুষের জন্য এক ভয়াবহ সংকেত। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অমিত মিত্র (Amit Mitra) এই বাজেটকে ‘একটি গভীর ষড়যন্ত্র’ বলে অভিহিত করেছেন।
অমিত মিত্রর দাবি, এই বাজেটে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে সামাজিক খাতে। তাঁর প্রশ্ন, “এই বাজেট কী করল? সামাজিক পরিষেবায় ১৬ শতাংশ হ্রাস করা হয়েছে। আবাসন খাতে কমানো হয়েছে ৪.৩৮ শতাংশ।” সবচেয়ে আশঙ্কার বিষয় হল, সমাজকল্যাণ, তফসিলি জাতি ও উপজাতি উন্নয়ন খাতে বরাদ্দ প্রায় ৩ শতাংশ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, সমাজকল্যাণ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য ৫ শতাংশ বরাদ্দ কমানোর কথাও বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: বাজেটে কোন কোন জিনিসের দাম বাড়ল? জেনে নিন এক ঝলকে
এই বাজেটে খাদ্য ভর্তুকির ক্ষেত্রেও ১ শতাংশ কাটছাঁট করা হয়েছে, যা গরীব মানুষের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে। বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে খাদ্যদ্রব্যের দাম লাগামছাড়া, আর তার মধ্যেই ভর্তুকি কমানো সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাকে আরও কঠিন করে তুলবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমানে দেশে বেকারত্বের হার ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। সমীক্ষা বলছে, মোট বেকারের মধ্যে ৩০ শতাংশ যুবক স্নাতক ডিগ্রিধারী। অথচ, তাঁদের জন্য বাজেটে কোনও উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। গত বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে বেকারের সংখ্যা ৩ কোটি ৭০ লাখেরও বেশি পৌঁছে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও এই বাজেটে নতুন কর্মসংস্থানের কোনও রূপরেখা দেখা যাচ্ছে না। অমিত মিত্রের প্রশ্ন, “যেখানে এত বিশাল সংখ্যক যুবক-যুবতী বেকার, সেখানে কেন তাঁদের জন্য কোনও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হল না? নতুন শিল্প গড়ে তোলার কোনও পরিকল্পনা কেন বাজেটে নেই?”
এই বাজেটে বীমা খাতের জন্য ১০০ শতাংশ বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন করা হয়েছে। এর ফলে ভারতীয় বীমা সংস্থাগুলোর উপর বিদেশি সংস্থাগুলির নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অমিত মিত্রের মতে, এটি একটি বড় ধরনের পরিবর্তন, যা দেশের অর্থনীতির ওপর সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলতে পারে। পশ্চিমবঙ্গ সরকার যখন জীবন বীমার উপর ১৮ শতাংশ পরিষেবা কর কমিয়ে শূন্য শতাংশ করার চেষ্টা করেছিল, তখন কেন্দ্রীয় সরকার তা স্থগিত করে দেয়। এই প্রসঙ্গে অমিত মিত্র প্রশ্ন তুলেছেন, “এটা কি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে? কার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? জনগণই এর উত্তর দেবে।”
দেখুন আরও খবর: