প্রবীণ কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদকে (Ghulam Nabi Azad) পদ্মভূষণ (Padam Bhushan) সম্মান দেওয়ার পর থেকেই দলের অন্দরে দেখা দিয়েছে কোন্দল। আজাদের ওই সম্মান গ্রহণ করার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না কংগ্রেসের অনেক নেতা। নীরব কংগ্রেস হাইকমান্ড। তবে কংগ্রেসে বিক্ষুব্ধ বলে পরিচিত অনেক নেতা তাঁকে শুভেচ্ছাও জানিয়েছেন। ওই শুভেচ্ছাদাতাদের মধ্যে অন্যতম হলেন কংগ্রেসের বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী ‘জি-২৩’র (G-23) প্রধান মুখ কপিল সিব্বল (Kapil Sibal)। তিনি টুইটে ‘ভাইজান’কে শুভেচ্ছা জানিয়ে লিখেছেন, কংগ্রেসের তাঁকে আর প্রয়োজন নেই। কিন্তু জনজীবনে আজাদের অবদানকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিয়েছে।
Ghulam Nabi Azad conferred Padam Bhushan
Congratulations bhaijan
Ironic that the Congress doesn’t need his services when the nation recognises his contributions to public life
— Kapil Sibal (@KapilSibal) January 26, 2022
আজাদকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর আরও দুই মুখ শশী থারুর (Shashi Tharoor) এবং জয়রাম রমেশ (Jairam Ramesh)। টুইটে শশীর বক্তব্য, আজাদকে উষ্ণ অভিনন্দন। তাঁর ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়েছে সরকার। তিনিই একমাত্র কংগ্রেস নেতা, রাজ্যসভার সদস্য হিসাবে অবসর নেওয়ার দিন যার জন্য সংসদে চোখের জল ফেলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। জাতির সেবায় আজাদ ৪৪ বছর কাটিয়েছেন। আশা করি, তিনি আবার ফিরে আসবেন।’
Warm congratulations to Shri @ghulamnazad on his Padma Bhushan. It is good to be recognized for one's public service even by a government of the other side. https://t.co/OIT0iVNPjo
— Shashi Tharoor (@ShashiTharoor) January 25, 2022
প্রবীণ কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশের টুইট, পদ্মভূষণ সম্মান গ্রহণ করে আজাদ ঠিক কাজই করেছেন। তিনি গুলাম নয়, আজাদ হয়ে থাকতে চেয়েছেন। এই প্রসঙ্গেই তিনি বাংলার প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পদ্ম সম্মান প্রত্যাখ্যানের বিষয়টিও উল্লেখ করেন।
আরও পড়ুন : পদ্মরাগে বাঙালির স্পর্ধা
গুলাম নবি রাজ্যসভার কংগ্রেস দলনেতা ছিলেন। কাশ্মীরের এই কংগ্রেস নেতা এক সময়ে ওই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হন। ২০১৯ সালে লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের বিপর্যয়ের পর একাধিক প্রবীণ নেতা দলের সংগঠনে রদবদলের দাবি তোলেন। রাহুল গান্ধীর নেতৃত্ব নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। নির্বাচনের মাধ্যমে স্থায়ী সভাপতি করা হোক, এই দাবিতে ২৩ জন নেতা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে চিঠিও দেন। রাজনৈতিক মহলে এই বিক্ষুব্ধ নেতাদের পরিচিতি হয় জি-২৩ বলে। ওই দলেই রয়েছেন গুলাম নবি আজাদ, শশী থারুর, কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মা সহ অনেকেই। কংগ্রেস সভানেত্রী ওই চিঠিকে গুরুত্ব না দিলেও মাস কয়েক আগে ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে বিক্ষুব্ধদের কার্যত হুঁশিয়ারি দেন। বিক্ষুব্ধদের প্রতি সোনিয়ার বার্তা ছিল, যাঁদের যা বলার আছে, তা যেন তাঁরা সরাসরি তাঁকেই জানান। মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁকে যেন কিছু না জানতে হয়। তবে এখনও পর্যন্ত কংগ্রেসের স্থায়ী সভাপতি নির্বাচনের ব্যাপারে কিছু শোনা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার পদ্ম তালিকায় গুলাম নবি আজাদের নাম ওঠার পরই জল্পনা ছড়ায়, তাঁর টুইটার প্রোফাইলে কংগ্রেসের উল্লেখ নেই। প্রশ্ন ওঠে, তিনিও কি দল ছাড়তে চলেছেন ? আজাদ অবশ্য ওই জল্পনায় জল ঢেলে দাবি করেন, টুইটার প্রোফাইলের কোনও পরিবর্তন হয়নি। উত্তরপ্রদেশের তারকা প্রচারকের তালিকায় নাম রয়েছে কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতার। করোনার কারণে এখনও উত্তরপ্রদেশে সরাসরি প্রচার শুরু হয়নি। তার আগেই আজাদের পদ্মভূষণ পাওয়া নিয়ে দলের অন্দরে বিতর্ক শুরু হয়েছে।