ওয়েব ডেস্ক: অভিভাবককে হারাল ভারতীয় থিয়েটার (Indian Theatre) জগৎ। অভিনয়ের মঞ্চে নেমে এল শূন্যতা। প্রয়াত বিশিষ্ট নাট্যকার (Dramatist), নির্দেশক ও শিল্পী রতন থিয়াম (Ratan Thiyam)। মঙ্গলবার, দুপুর দেড়টা নাগাদ শেষনিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। এই মহান নাট্যব্যক্তিত্বের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ গোটা দেশ। বিশেষ করে নাট্যমঞ্চের অঙ্গনে আজ নেমে এসেছে এক অদ্ভুত বিষণ্ণতা।
সৃষ্টির মাধ্যমে কৃষ্টির রচনা করতেন রতন থিয়াম। তিনি উত্তর-পূর্ব ভারতের অবহেলিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে জাতীয় মঞ্চে তুলে ধরেছিলেন। মণিপুরের কৃষ্টি, ভাষা, ইতিহাস ও দর্শনকে নাটকের মাধ্যমে মঞ্চস্থ করে জীবন্ত করে তুলেছিলেন তিনি। তাঁর নির্দেশনায় প্রাচীন ভারতীয় নাট্যধারা আধুনিক বোধে পুষ্ট হয়ে এক নতুন প্রাণ পেয়েছিল। তাইতো এই মহান ব্যক্তিত্বের পার্থিব মায়া ত্যাগ যেন অভিভাবকহীন করে তুলেছে ভারতের থিয়েটার জগতকে।
আরও পড়ুন: যোগীরাজ্যে এ কী কাণ্ড! ভুয়ো দূতাবাসের আড়ালে প্রতারণার ফাঁদ
অনেক বিশ্লেষকের মতে, থিয়ামের নাটক শুধুই নাটক ছিল না। কয়েকঘন্টার এই অভিনয় মঞ্চে তিনি রেখে যেতেন এক উপলব্ধি, এক গভীর আত্মানুসন্ধান। তাঁর অনন্য সৃষ্টি ‘চক্রব্যূহ’, ‘উত্তর প্রিয়দর্শী’, ‘হে নুংশিবি পৃথিবী’ এবং ‘চিংলোঁ মাপান তাম্পক আমা’ আজও ভারতীয় থিয়েটারপ্রেমীদের মনে গেঁথে রয়েছে। থিয়ামের প্রতিটি প্রযোজনায় মিশে থাকত গভীর দর্শন, দার্শনিকতা ও চিত্রভাষার সৌন্দর্য।
১৯৪৮ সালের ২০ জানুয়ারি জন্ম রতন থিয়ামের। দিল্লির ন্যাশনাল স্কুল অফ ড্রামা থেকে ১৯৭৪ সালে স্নাতক হন তিনি। পরবর্তী সময়ে তিনি এই অভিনয় প্রতিষ্ঠানের পরিচালকের দায়িত্বও সামলান। এভাবেই ৭৭ বছরের পার্থিব জীবনে থিয়েটার রুট আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা হয়ে উঠেছিলেন এই নাট্যশিল্পী। সেই সঙ্গে অনেকের মতে তিনি ভারতীয় নাট্যচর্চার গতিপথও পাল্টে দিয়েছিলেন। নাটকের পাশাপাশি চিত্রকলায় ও সঙ্গীতেও ছিল তাঁর দক্ষতা। শিল্পমাধ্যমে তাঁর বহুমাত্রিকতা তাঁকে করে তুলেছিল অনন্য। জীবনে তিনি বহু রাষ্ট্রীয় সম্মান পেয়েছেন। ১৯৮৭ সালে পান সঙ্গীত নাটক অ্যাকাডেমি পুরস্কার এবং ১৯৮৯ সালে ভারত সরকার তাঁকে পদ্মভূষণ সম্মানে ভূষিত করে।
দেখুন আরও খবর: