বেঙ্গালুরু: কর্নাটক হাইকোর্টে দীর্ঘক্ষণ শুনানির পরেও হিজাব বিতর্কের (Karnataka hijab row) নিষ্পত্তি সোমবার হল না। মঙ্গলবার ফের বেলা আড়াইটে থেকে হাইকোর্টের (Karnataka High Court) বৃহত্তর বেঞ্চে এই মামলার শুনানি রয়েছে।
সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৫ উল্লেখ করে পিটিশনারদের তরফে আইনজীবী সওয়াল করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব (Hijab Controversy)পরে আসা যাবে কি যাবে না, তা নিয়ে কোনও নিষেধাজ্ঞা কলেজ কর্তৃপক্ষ আইনি ভাবে আরোপ করতে পারে না। অনুচ্ছেদ ২৫-এ তা স্পষ্ট করা রয়েছে। সেখানে স্থানীয় বিধায়ককে নিয়ে গঠিত কলেজ ডেভেলপমেন্ট কমিটি কী করে মুসলিম মেয়েদের ‘অধিকার’ নিয়ে (hijab) এমন নিষেধাজ্ঞা খাড়া করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পিটিশনাররা।
কর্নাটক হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ঋতুরাজ অবস্থির নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে হিজাব মামলার শুনানি চলছে। বেঞ্চের বাকি দুই সদস্য বিচারপতি কৃষ্ণ এস দীক্ষিও ও বিচারপতি জেএম কাজি। উদুপির কুন্দাপুরা কলেজের মামলাকারী ছাত্রীদের হয়ে হাইকোর্টে সওয়াল করছেন আইনজীবী দেবাদত্ত কামত।
বৃহত্তর বেঞ্চে কামত জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরে আসার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা অনুচ্ছেদ ২৫-এর আওতায় একমাত্র রাজ্য সরকার জারি করতে পারে। কলেজ ডেভেলপমেন্ট কমিটি এই মুসলিম মেয়েদের মৌলিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করতে পারে না।
আরও পড়ুন: Punjab Polls 2022: ভোটব্যাংকের গুরুত্বপূর্ণ ভাগীদার হয়েও পঞ্জাবের ভোটে উপেক্ষিত মহিলারা!
আদালতের কাছে তিনি আর্জি জানান, পিটিশনারদের হিজাব পরে ক্লাস করার অনুমতি দেওয়া হোক। যাতে আবেদনকারীরা তাঁদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন। সরকারের তরফে পালটা বলা হয়, হিজাব ইসলামে অপরিহার্য কি না, আগে তা নির্ধারিত হওয়া উচিত। পালটা পিটিশনারদের আইনজীবী বলেন, হিজাব ইসলামে অপরিহার্য কি না, রাজ্য সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। এটা মুসলিম ছাত্রীদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা উচিত। তাঁরা বছরের পর বছর ধরে হিজাব পরে আসছেন। এই সওয়াল-জবাবের মধ্যেই এ দিনের শুনানি শেষ হয়ে যায়।
গত প্রায় দু’মাস ধরে হিজাব বিতর্ক দানা বেঁধেছে। ডিসেম্বরে কর্নাটকের উদুপির পিইউ কলেজে ছয় ছাত্রী হিজাব পরে এলে, কর্তৃপক্ষ আপত্তি জানায়। এর প্রেক্ষিতে নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, কলেজে হিজাব পরে আসা যাবে না। সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে এই বিতর্ক দানা বাঁধলে, হিন্দুত্ববাদী ছাত্রদের একাংশ গেরুয়া উত্তরীয় গলায় ঝুলিয়ে কলেজে আসতে শুরু করেন। গোটা বিষয়টি ক্রমে সাম্প্রদায়িক দিকে গড়াতে থাকে। এমত অবস্থায় কলেজ কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যান পাঁচ মুসলিম ছাত্রী। সিঙ্গল বেঞ্চ থেকে মামলাটি পাঠিয়ে দেওয়া হয় বৃহত্তর বেঞ্চে।
আরও পড়ুন:Air India New CEO: ইলকার আয়সির হাতে এয়ার ইন্ডিয়ার দায়িত্ব দিল টাটা
হাইকোর্টে হিজাব বিতর্কের নিষ্পত্তি না-হলেও এর মধ্যে অন্তর্বর্তী নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তাতে বৃহত্তর বেঞ্চ জানায়, হিজাব বিতর্কের নিষ্পত্তি না-হওয়া পর্যন্ত কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ধর্মীয় পোশাক পরে যাওয়া যাবে না। পিটিশনাররা এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টেও গিয়েছেন। যদিও সুপ্রিম কোর্ট জরুরি ভিত্তিতে মামলাটি শুনতে রাজি হয়নি।