কাসগঞ্জ : উত্তরপ্রদেশে কাসগঞ্জ জেলায় পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় ২১ বছরের এক মুসলিম যুবকের। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এই ঘটনা ঘটে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, এক হিন্দু মহিলাকে অপহরণ করেছিল সে। পুলিশের দাবি, আত্মহত্যা করেছে ওই যুবক। তারা জানিয়েছে, ২১ বছরের ওই যুবক আলতাফ তার জ্যাকেটের দড়ি দিয়ে থানার ওয়াশরুমের ট্যাপ থেকে ঝুলছিল। পুলিশ তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানে পরীক্ষার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আলতাফের পরিবারের তরফে দাবি করা হয়েছে যে পুলিশে হেফাজতেই তাকে খুন করা হয়েছে।
আলতাফের বাবা কাহাদ মিঞা জানান, সোমবার রাত ৮টার সময় তিনি পুলিশের হাতে ছেলেকে হস্তান্তর করেছিলেন। কি হয়েছে জানার জন্য তিনি পুলিশের কাছে জানতে চাইলে পুলিশকর্মীরা তাঁর সঙ্গে খুব খারাপ ব্যবহার করেন এবং তাঁকে পুলিশ স্টেশনে আসতে বারণ করা হয়। কাহাদ মিঞা আরও জানান, স্থানীয় সাংবাদিকদের কাছ থেকে তিনি তাঁর ছেলের মৃত্যুর খবর পান। এই খবর পেয়ে যখন তিনি পুলিশ স্টেশনে পৌঁছলেন, তখন তাঁকে জানানো হয়, তাঁর ছেলেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি দাবি করেছেন যে, তাঁর ছেলে আলতাফ নির্দোষ ছিল। তার অতীতের কোনও অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। আলতাফের পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছে যে, মঙ্গলবার পুলিশ তাঁকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করেনি।
আরও পড়ুন : দেশে ৪৬ শতাংশ বেড়েছে মহিলাদের উপরে অপরাধ, অর্ধেকের বেশি উত্তরপ্রদেশে
কাসগঞ্জ পুলিশ সুপার রোহন প্রমোদ জানান, মঙ্গলবার ভোরে আলতাফকে জিজ্ঞেসাবাদের জন্য থানায় ডাকা হয়েছিল। প্রমোদ আরও জানান, সেই সময় আলতাফ ওয়াশরুমে যাওয়ার কথা বলে। তাঁকে থানার ভেতরের ওয়াশরুমে পাঠানো হয়েছিল। সেখানেই সে নিজের জ্যাকেটের দড়ি গলায় জড়িয়ে একটি কলের সঙ্গে বেঁধে শ্বাস রোধ করে আত্মহত্যা করে বলে জানান পুলিশ সুপার। আলতাফকে অচৈতন্য অবস্থায় দেখতে পেয়ে পুলিশি কাসগঞ্জ অশোকনগরের একটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী আলতাফের গলায় দড়ি ছাড়া অন্য কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না। দায়িত্ব অবহেলার জন্য ওই থানার ৫ পুলিশকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানান প্রমোদ। তিনি আরও বলেন যে, দোষী ব্যক্তিদের অবশ্যই শাস্তি দেওয়া হবে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমাজবাদী পার্টির তরফে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে বলা হয়েছে যে, পুলিশের হেফাজতে আরও একটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটল।