নয়াদিল্লি: মানবাধিকার কর্মী তিস্তা শীতলওয়ার এবং গুজরাতের দুই প্রাক্তন পুলিসকর্তা আর বি শ্রীকুমার ও সঞ্জীব ভাটের গ্রেফতারির তীব্র নিন্দা করল রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখা। অফিস অফ দ্য হাই কমিশনার ফর হিউম্যান রাইটস (ওএইচসিএইচআর) এক টুইটে ওই গ্রেফতারির নিন্দার পাশাপাশি অবিলম্বে তিস্তাদের মুক্তির দাবি জানিয়েছে।
এতে বেদম চটেছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র অরিন্দম বাগচী বুধবার এক বিবৃতিতে বলেন, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখার ওই মন্তব্য সম্পূর্ণ অনভিপ্রেত। তা আমাদের নজরে এসেছে। ওই মন্তব্য দেশের স্বশাসিত বিচার ব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপের শামিল। ইতিমধ্যেই তিস্তাদের গ্রেফতারির বিরুদ্ধে সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। রাজ্যে রাজ্যে তাঁদের মুক্তির দাবিতে হাজার হাজার মানুষ পথে নেমেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সুপ্রিম কোর্টের রায়েরও সমালোচনা করেছে।
সম্প্রতি শীর্ষ আদালত এক রায়ে গুজরাত দাঙ্গার ব্যাপারে গুজরাতের তখনকার মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ক্লিন চিট দিয়েছে। ২০০২ সালে গুজরাত দাঙ্গায় কংগ্রেস সাংসদ এহসান জাফরি-সহ ৬৪ জনের মৃত্যু হয়। তখনকার গুজরাত সরকার ওই ঘটনার তদন্তে রাজ্য পুলিসকে দিয়ে সিট গঠন করে। সিট তদন্তে মোদিকে ক্লিন চিট দেয়। তখন গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন বর্তমানে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। দাঙ্গায় নাম জড়ায় অমিতেরও। প্রয়াত সাংসদের স্ত্রী রাজ্য পুলিসের সিটের ক্লিন চিটের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। মামলায় তাঁর আইনজীবী ছিলেন তিস্তা।
সুপ্রিম কোর্ট গত সপ্তাহে সিটের সেই ক্লিন চিট তত্ত্বকেই বহাল রাখে। বলা হয়, মামলাকারী এবং তাঁর আইনজীবী বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়েছেন। শীর্ষ আদালত সাক্ষীদেরও সমালোচনা করেন। রায় প্রকাশের পরের দিনই অমিত শাহ একটি সংবাদমাধ্যমে তিস্তাদের আচরণের নিন্দা করেন। তার পরেই গত শনিবার গুজরাতে তিস্তার বাড়িতে হানা দেয় গুজরাত পুলিসের এটিএস বাহিনী। কোনও কারণ না দেখিয়েই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ, তাঁর শ্লীলতহানিও করেছে পুলিস। এই ঘটনারই নিন্দা করে রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার শাখা বিদেশ মন্ত্রকের তোপের মুখে পড়েছে।