গুয়াহাটি: করোনার কারণে ধামাচাপা পরে গিয়েছিল নাগরিকত্ব আন্দোলন। পক্ষে বা বিপক্ষে সকল প্রকারের আলোচনাই প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এই অবস্থায় সেই বিষয়টি খুঁচিয়ে তুললেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘের প্রধান মোহন ভগবত। আর এই নাগরিত্ব আইন নিয়ে মন্তব্য রাখলেন আবার উত্তর পূর্বের রাজ্য অসমের মাটিতে।
আরও পড়ুন- চুক্তি সই নিয়ে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের সামনে সমর্থকদের বিক্ষোভ, পুলিশের লাঠিচার্জ
বুধবার ওই রাজ্যের রাজধানী শহর গুয়াহাটিতে হাজির ছিলেন মোহন ভগবত। সেখানে বক্তব্য রাখার সময়ে সঙ্ঘ প্রধান বলেন, “সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন(CAA) বা নাগরিকপঞ্জি(NRC) ভারতের কোনও নাগরিকের ক্ষতি করার জন্য তৈরি হয়নি।” একই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রণয়ন করা হলে ভারতের মুসলিমদের কোনও প্রকারের ক্ষতি হবে না।”
আরও পড়ুন- শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে বিজেপি বিরোধী জোটের ডাক মমতার
এই প্রসঙ্গে দেশভাগের সময়ের স্মৃতি টেনে এনেছেন মোহন ভগবত। তিনি বলেছেন, “দেশভাগের সময়ে দুই দেশের সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল যে সংখ্যালঘুদের বিষয়ে যত্ন নেওয়া হবে। আমরা অর্থাৎ ভারত আজও তা পালন করে চলেছি। কিন্তু পাকিস্তান তা করেনি।” বক্তব্যের মাঝে পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে ঘটে যাওয়া সংখ্যালঘুদের উপরে নির্যাতনের কথারও উল্লেখ করেন তিনি।
২০১৭ সালের শেষ দিনে শুরুর দিকে নাগরিকপঞ্জির খসড়া তালিকা প্রকাশ করা হয় অসমে। ২০১৮ সাল জুড়ে যা নিয়ে অনেক বিতর্ক হয়েছে। কারণ তালিকায় অনেক মানুষের নাম ছিল না। দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যদের নাম বাদ গিয়েছিল তালিকা থেকে। এরপরে ২০১৯ সালে নাগরিকত্ব আইন সংশোধন করা হলে সেই বিতর্ক আরও জোরাল হয়। শুরু হয় বড় আন্দোলন। সেই অসমের মাটিতে দাঁড়িয়েই বুধবার CAA এবং NRC নিয়ে বক্তব্য রাখলেন সঙ্ঘ প্রধান।
আরও পড়ুন- দিল্লির যন্তরমন্তরে কৃষকদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের অনুমতি দিল্লি পুলিশের
নাগরিকত্ব আইন বা নাগরিকপঞ্জি নিয়ে রাজনীতির কিছুই নেই বলে দাবি করেছেন মোহন ভগবত। তাঁর কথায়, “কিছু মানুষ এগুলি(CAA এবং NRC)তে রাজনীতির রঙ লাগাচ্ছে নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থে। অনেক আবার সাম্প্রদায়িক দিক থেকেও বিষয়টি দেখছেন। সবই হচ্ছে রাজনৈতিক কারণে। যে যা করছে করুক। আময়াদের সতর্ক থাকতে হবে যাতে নাগরিকত্ব নিয়ে কখনই রাজনীতি না হয়।”
আরও পড়ুন- শহিদ বেদীতে মাল্যদান, বিজেপির প্রতিবাদ অপ্রাসঙ্গিক, দাবি মুকুলের
চলতি মাসের শুরুর দিকে মোহন ভগবত বলেছিলেন, ‘গণপিটুনিতে যুক্তরা হিন্দুত্ববিরোধী৷ কোনও পক্ষপাত ছাড়া অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত৷’ গাজিয়াবাদে মুসলিম রাষ্ট্রীয় মঞ্চ আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেন সঙ্ঘ প্রধান৷ তিনি বলেন, ‘যদি কোনও হিন্দু বলে এখানে কোনও মুসলিমের থাকা চলবে না তাহলে সেই ব্যক্তি হিন্দু নন৷ গোরু পবিত্র প্রাণী৷ কিন্তু যাঁরা গণপিটুনির মতো ঘটনায় জড়িত থাকেন তাঁরা হিন্দুত্ব বিরোধী কাজ করছেন৷’