কলকাতা: কোভিডের তৃতীয় ঢেউয়ের শুরুতেই প্রায় শীর্ষে কলকাতা। সংক্রমণের হিসেবে কলকাতার আগে রয়েছে মুম্বই শহর। ভারতের যে আট শহর চিকিৎসকদের চিন্তায় রেখেছে তার মধ্যে অন্যতম কলকাতা। কলকাতা, মুম্বই ছাড়া তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্রের থানে ও মুম্বই শহরতলি, তামিলনাডুর চেন্নাই, পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা, কর্নাটকের বেঙ্গালুরু এবং মহারাষ্ট্রের পুনে শহর।
কেন্দ্রের স্বাস্থ্যমন্ত্রকের দেওয়া তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত এক সপ্তাহের মধ্যে কলকাতায় কোভিডের রেকর্ড সংক্রমণ ঘটেছে। আঠাশ ডিসেম্বর থেকে যে সপ্তাহ শুরু হয়, তার হিসেব চমকে দেওয়ার মত। আচমকাই কোভিড গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী হয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়েছে। ৪ জানুয়ারির তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে কলকাতায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা ২৭ হাজার ৩৪৬। অর্থাৎ গড়ে প্রতিদিন সাড়ে সাত হাজার করে কলকাতাবাসী কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন।

অথচ বছরের শেষে ডিসেম্বরের চোদ্দ তারিখে এক সপ্তাহের নিরিখে গড়ে প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যা ছিল ২৩ জনের একটু বেশি। আর শুধুমাত্র মঙ্গলবারই কলকাতায় কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৭৫৬ জন মানুষ। কেন্দ্রের স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য জানাচ্ছে, ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এক সপ্তাহে কলকাতায় কোভিডের পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণ বৃদ্ধির হার ছিল ৫.৯ শতাংশ। চার সপ্তাহ পর চৌঠা জানুয়ারি সেই হার বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২৩. ১১ শতাংশ। অর্থাৎ চার সপ্তাহে সংক্রমণের হার প্রায় চার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন- Covid India: করোনা ৬ গুণ বেড়েছে মাত্র ৮ দিনে, অ্যাক্টিভ আক্রান্তের ১২ শতাংশই বাংলায় !
আচমকা সংক্রমণের এই ঊর্ধ্বমুখী রেখা চিকিৎসকদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে। অতিমারী বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়, চিকিৎসক অভিজিৎ চৌধুরীরা কলকাতা ও রাজ্যের মানুষকে এখনই সাবধান হতে বলছেন। বলছেন, ‘তা না হলে বড় বিপদের মুখে পড়বেন সাধারণ মানুষ।’ তৃতীয় ঢেউয়ের মোকাবিলায় চিকিৎসকদের একটাই দাওয়াই, ‘মাস্ক মাস্ট মাস্ট মাস্ট।’ বাইরে বেরলেই ‘মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।’ আর জমায়েত একেবারে নিষিদ্ধ। জানুয়ারিতে আর কয়েক দিন পরেই গঙ্গাসাগর মেলা। ২২ জানুয়ারি বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি পুরনিগমে ভোট। চিকিৎসকদের একাংশ পুরভোট আপাতত স্থগিত রাখার কথা বলেছেন। জমায়েত ও ভিড় এড়াতে গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ রাখার পরামর্শ দিয়েছেন।