কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক : আগামীকাল অর্থাৎ ২৭ অক্টোবর পেগাসাস আড়ি পাতা কাণ্ডের রায় শোনাবে দেশের উচ্চ আদালত। গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি এনভি রামান্নার বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছে। তারপর থেকেই স্থগিত ছিল রায়দান। ৫ রাজ্যের নির্বাচনের আগেই বুধবার সেই এই মামলার রায় দেবে সুপ্রিম কোর্ট।
পেগাসাস ব্যবহার করে এদেশের বহু রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, বিচারপতি, শিল্পপতি, ব্যবসায়ী, সমাজকর্মীদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছে৷ ২০১৯ সালের পর দ্বিতীয়বার সাইবার হামলার ঘটনা দেশজুড়ে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে৷ খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে ইজরায়েলি সংস্থা এনএসও-র নাম৷ এদের তৈরি সফটওয়্যারই হল পেগাসাস স্পাইওয়্যার৷ যেটি চারটি মহাদেশের ভারত-সহ ১০টি দেশের প্রায় ১ হাজার ৪০০ জনের ফোনে ঢুকিয়ে গোপন তথ্য হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ৷ জুলাই মাসে এই আড়ি পাতার ফরেন্সিক রিপোর্ট প্রকাশ্যে আনে বিশ্বের ১৭টি সংবাদমাধ্যম
কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে এই স্পাইওয়্যারের মাধ্যমে দেশের রাজনীতিক থেকে শুরু করে সাংবাদিক, শিল্পপতি, সমাজকর্মীদের ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে যে অভিযোগ ওঠে৷এরপর পেগাসাস ইস্যু নিয়ে উত্তাল হয়েছে সংসদ। বাদল অধিবেশনে নিত্যদিন আড়ি পাতা নিয়ে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। সেই পেগাসাস নিয়ে পরে মামলা দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে।
আরও পড়ুন – যোগী সরকারকে লখিমপুর কাণ্ডের সব সাক্ষীদের সুরক্ষা দিতে হবে, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এরপর পেগাসাস আড়িপাতা কাণ্ডে সুপ্রিমকোর্ট কেন্দ্রকে হলফনামা জমা দিতে বলে। কিন্তু কেন্দ্র এ ব্যাপারে হলফনামা জমা দিতে অস্বীকার করে৷ জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়৷ কেন্দ্রের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা আদালতকে জানিয়েছিলেন, হলফনামা জমা দিয়ে বিষয়টিকে প্রকাশ্যে আনা ঠিক হবে না৷ এর সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িয়ে আছে।
কেন্দ্রের বক্তব্য শুনে বিরক্ত হয় আদালত৷ সুপ্রিম কোর্ট তখন জানিয়েছিল, আমরা জাতীয় নিরাপত্তার কথা জানতে চাই না৷ বিষয়টা হচ্ছে, দেশের নাগরিকরা বলছেন তাঁদের ফোনে আড়ি পাতা হয়েছিল৷ বিচারপতি সূর্য কান্তের প্রশ্ন ছিল, ‘আমরা জাতীয় নিরাপত্তায় হস্তক্ষেপ করতে চাই না৷ কিন্তু অন্যের ফোনে আড়ি পাতার ক্ষমতা কোন এজেন্সির আছে এটা জানতে চাই৷ এজেন্সির ফোনে আড়ি পাতা কী আইনত সম্মত?’
আরও পড়ুন – গোয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ও ফ্লেক্স ছেঁড়ার ঘটনায় বিজেপিকে কাপুরুষ বলে খোঁচা ডেরেকের
এরপর কেন্দ্র আদালতে হলফনামা জমা দেয়। তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রকের দেওয়া দু’পাতার হলফনামায় মামলাকারীদের সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল কেন্দ্র। এরপর পেগাসাস মামলার তদন্ত করতে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)৷ সেই কমিটি ফোনে আড়ি পাতা নিয়ে তদন্ত করেছে। এই তদন্তের পর বিচারপতি এন ভি রমানার নেতৃত্বে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি হিমা কোহলির ৩ সদস্যের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি চলেছে। সেই শুনানি শেষ হয়েছে ১৩ সেপ্টেম্বর। এই বহু প্রতিক্ষিত মামলার রায়দান হবে বুধবার।