নয়াদিল্লি: ফের বিস্ফোরক বিজেপির বিদ্রোহী সাংসদ বরুণ গান্ধী (Varun Gandhi)। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (JNU) নতুন উপাচার্য শান্তিশ্রী ধুলিপুড়ি পণ্ডিতকে (New Vice-Chancellor) কার্যত অশিক্ষিত বলে কটাক্ষ করতে ছাড়লেন না বরুণ। নিয়োগপত্র পাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে সোমবার শান্তিশ্রী যে প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করেন, তাকেই হাতিয়ার করেছেন বিজেপির এই বিক্ষুব্ধ সাংসদ (BJP MP)। তাঁর দাবি, ইংরাজিতে লেখা ওই প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কিছু ব্যাকরণগত ভুল রয়েছে। এক টুইটে সেই বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গেই বরুণের কটাক্ষ, ‘নতুন উপাচার্যের প্রেস বিবৃতি অশিক্ষার প্রদর্শন ছাড়া কিছুই নয়। এ ধরণের মধ্য মেধার নিয়োগ আমাদের মানব সম্পদ এবং যুব সমাজের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করার পক্ষে যথেষ্ট।’
This press release from the new JNU VC is an exhibition of illiteracy,littered with grammatical mistakes (would strive vs will strive;students friendly vs student-friendly;excellences vs excellence).Such mediocre appointments serve to damage our human capital & our youth’s future pic.twitter.com/tSanmy3VfR
— Varun Gandhi (@varungandhi80) February 8, 2022
শান্তিশ্রীকে জেএনইউ-র উপাচার্য পদে সোমবার নিয়োগের পর থেকেই তাঁকে ঘিরে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জেএনইউ, দিল্লি ইউনিভার্সিটি, দিল্লি আইআইটির পড়ুয়াদের গত কয়েকবছরে নানাভাবে ব্যঙ্গাত্মক মন্তব্য করা হয়েছে। কখনও জেএনইউ পড়ুয়াদের বলা হয়েছে, ‘টুকরে টুকরে গ্যাং’, কখনও সিএএ বিরোধী আন্দোলন রত পড়ুয়াদের বলা হয়েছে ‘রাষ্ট্রদোহী’। শান্তিশ্রী অবশ্য দাবি করেন, ওই টুইটার অ্যাকাউন্ট তাঁর নয়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, সোমবার জেএনইউ-র উপাচার্য হওয়ার পরই শান্তিশ্রীর ওই টুইটার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শান্তিশ্রীকে উপাচার্য করায় বিভিন্ন মহল থেকে প্রতিবাদ উঠেছে। বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ ইরফান হাবিব বলেন, ‘কেন্দ্রের ভয়ানক সিদ্ধান্ত। জেএনএউ-র যেটুকু বাকি আছে তাও এবার শেষ হয়ে যাবে।’ সমালোচনায় মুখর হয়েছে জেএনইউ-র বামপন্থী ছাত্র সংসদ, আইসার (All India Students Association) মতো সংগঠনও। জেএনইউ-র প্রাক্তন উপাচার্য এম জগদীশ কুমারকে আবার বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (University Grants Commission) চেয়ারম্যান করা হয়েছে। বিতর্ক চলছে তা নিয়েও। জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের সভানেত্রী ঐশী ঘোষের মন্তব্য, গেরুয়া ঘেঁষা জাতীয় শিক্ষানীতি অক্ষরে অক্ষরে মানর জন্যই বিতর্কিত জগদীশ কুমারকে ইউজিসি-র চেয়ারম্যান করেছে কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন: Mamata Akhilesh: অখিলেশকে পাশে নিয়ে উত্তরপ্রদেশে ‘খেলা হবে’-র ডাক মমতার
শান্তিশ্রীর সমালোচনায় সকলকে ছাপিয়ে গিয়েছেন বিজেপির বিক্ষুব্ধ সাংসদ বরুণ। তিনি টুইটে যে ভাষায় জেএনইউ-র নয়া উপাচার্যকে বিঁধেছেন, তা নজিরবিহীন। গত দু-তিন বছর ধরেই বরুণ দলের অন্দরে বিদ্রোহী বলে পরিচিতি লাভ করেছেন। বিতর্কিত কৃষি আইন থেকে শুরু করে বিভিন্ন ইস্যুতে তিনি কেন্দ্রের সমালোচনা করতে ছাড়েননি। উত্তরপ্রদেশের পিলভিটের এই সাংসদ এবং তাঁর সাংসদ মা মেনকা গান্ধীকে এবার জাতীয় কর্মসমিতি থেকে বাদ দিয়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশে ভোটের মুখে বরুণের এইসব বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে অস্বস্তিতে বিজেপি। যদিও এখনও পর্যন্ত বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বরুণের বিরুদ্ধে মুখ খোলেননি। ভোটের পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।