নয়াদিল্লি: তিনি ইয়ুথ আইকন। দেশজুড়ে তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। বামেদের মরা গাঙে ঢেউ আনতে দলের হয়ে প্রচারে একাধিক রাজ্যেও গিয়েছেন। বিধানসভা ভোটের প্রচারে বাংলায়ও এসেছিলেন। সেই কানহাইয়া কুমার মঙ্গলবার রাহুল গান্ধীর উপস্থিতিতে সিপিআই ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিলেন। কিন্তু কেন এই দলত্যাগ? সেই প্রশ্ন অনেকের মনেই জেগেছে।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় (জেএনইউ)-এর পড়ুয়া সংসদের প্রাক্তন সভাপতি কানহাইয়া সাংবাদিক সম্মেলনে পরিষ্কার করে দিয়েছেন তাঁর জার্সি বদলের কারণ। তাঁর মতে, দেশের সবচেয়ে গণতান্ত্রিক দল জাতীয় কংগ্রেস। বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিজেপির বিকল্প হিসেবে কংগ্রেসই সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে কংগ্রেসের ছাতার তলায় থাকা জরুরি।
আরও পড়ুন: কাস্তে ধানের শিস ছেড়ে রাহুলের হাত ধরলেন কানহাইয়া, সঙ্গী নির্দল জিগনেশও
কানহাইয়া বলেন, আমি কংগ্রেসে যোগদান করেছি কারণ কিছু মানুষ, যারা দেশ চালাচ্ছেন, তারা দেশের সংস্কৃতি পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। আমি দেশের সবচেয়ে গণতান্ত্রিক দল কংগ্রেসকে বেছে নিয়েছি। দেশের যুব সম্প্রদায় বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, কংগ্রেস শেষ হয়ে গেলে দেশের পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে।
বিজেপি শাসিত ভারতের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরতে হাজার দেশভাগের পূর্ববর্তী সময়ের কথা তুলে ধরেন তিনি। তাঁর কথায়, আমার মনে হয় দেশ ১৯৪৭-এর আগের অবস্থায় চলে গিয়েছে। গোটা দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। কংগ্রেস মহাত্মা গান্ধী, বি আর আম্বেদকর, জহরলাল নেহেরু, আসফাকুল্লা খানের নীতি মেনে রাজনীতি করে।
আরও পড়ুন: নভজ্যোত সিং সিধুর ‘পাশে দাঁড়াতে’ পদত্যাগ পঞ্জাব ক্যাবিনেট মন্ত্রী রাজিয়া সুলতানার
কানহাইয়ার মতে, কংগ্রেস ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই। কংগ্রেসের মতো বড় জাহাজকে যদি বাঁচানো না যায় তাহলে ছোট নৌকা হাল কী হবে, তা সহজেই অনুমেয়। বিরোধী দলগুলি ক্রমেই দুর্বল থেকে দুর্বলতারও হয়ে পড়ছে। যা নিয়ে দেশের জনগণ চিন্তিত। তিনি বলেন, লোকেরা বলে বিরোধী দল দুর্বল। এটা তাঁদের জন্য চিন্তার বিষয়। এই ধরনের পরিস্থিতিতে শাসকরা স্বৈরাচারী হয়ে ওঠে।
ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা কানহাইয়া ২০১৯ সালে প্রবেশ করেন রাজনীতির আঙিনায়৷ লোকসভা ভোটে তিনি ছিলেন সিপিআইয়ের তুরুপের তাস৷ সিপিআই তাঁকে বিহারের বেগুসরাইয়ে প্রার্থী করেছিল৷ কিন্তু বিজেপি প্রার্থী গিরিরাজ সিংয়ের কাছে পরাস্ত হন কানহাইয়া৷
আরও পড়ুন: ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির দ্বিতীয় সংস্করণ অ্যামাজন, দাবি সঙ্ঘের
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপির সঙ্গে টেক্কা দিতে পারে এমন দল ভারতে একটিই রয়েছে। বর্তমানে দেশে কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে জাতীয় স্তরে কোনও দল সেভাবে উঠে আসতে পারেনি। সারাদেশে কার্যত দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয় বাম দলগুলিকে। তরুণ নেতা কানহাইয়া বুঝেছেন, ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের আগে মোদি বিরোধী মুখ হিসেবে নিজেকে সুপ্রতিষ্ঠিত করতে কংগ্রেসই একমাত্র পথ।