কলকাতা: উত্তর ২৪ পরগনার ইছাপুরের তৃণমূল নেতা খুনে পুলিস যাকে গ্রেফতার করেছে, সেই বিজয় মজুমদার (Bijoy majumder BJP) বিজেপি কর্মী (Ichapur TMC leder Mudder)। রাজনৈতিক মহলে তিনি ব্যারাকপুরের বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং (Arjun Singh) ঘনিষ্ঠ বলেই পরিচিত। কিন্তু বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumdar) এই খুনের ঘটনায় দলের যোগসূত্র নস্যাত্ করে দিলেন (Ichapur mudder case)। রবিবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বঙ্গ বিজেপি সভাপতির দাবি, ‘তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্বেই এই খুন।’
ইছাপুরের এই খুনের প্রসঙ্গে মমতা-অভিষেকের সম্পর্ক টেনে আনেন সুকান্ত। সরাসরি নাম না-করে, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দাবি করেন, সংগঠন নিয়ে তৃণমূলে পিসি-ভাইপোর লড়াই শুরু হয়েছে। আগামী দিনে তা আরও ভয়ংকর আকার নেবে। ঘাসফুল শিবিরের উদ্দেশে বলেন, ‘কিছুটা অযাচিত ভাবেই বলছি, তৃণমূলের সভ্য নেতারা পার্টি থেকে দূরে থাকুন। তা না হলে আপনারাও কোন দিন খবর হয়ে যাবেন!’ সরাসরি না বললেও সুকান্ত মজুমদারের এই মন্তব্যে ইঙ্গিত রয়েছে পিসি-ভাইপোর অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরেই খুন তৃণমূল নেতা।
ইছাপুরের তৃণমূল নেতা, নোয়াপাড়া বিজেপি-র প্রাক্তন সভাপতি গোপাল মজুমদার খুনে অর্জুন সিংয়ের হাত রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ করেন রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। এই মন্তব্যের নিন্দা করে বঙ্গ বিজেপি-র সভাপতি বলেন, ‘একজন নির্বাচিত সাংসদ সম্পর্কে এ ধরনের অভিযোগ গণতন্ত্রের জন্য সমীচীন নয়। লোকে তাঁকে ভোট দিয়ে সাংসদ করেছেন। অর্জুন সিং এর আগে কয়েক বার বিধায়কও হয়েছেন। তাই জনপ্রতিনিধিকে নিয়ে এই ধরনের মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকা উচিত।’
আরও পড়ুন: CBI Cash Prize: অভিজিৎ খুনে ফেরার ৫ অভিযুক্তের খোঁজ দিলে CBI দেবে নগদ পুরস্কার
জ্যোতিপ্রিয়র উদ্দেশে প্রচ্ছন্ন হুমকির সুরে তিনি বলেন, ‘ওনার সম্পর্কেও তো অনেক কথা শোনা যায়। উনি খাদ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বাংলাদেশ সীমান্তে চাল ধরা পড়েছিল। মিডিয়ার সামনে পুরনো কাসুন্দি ঘাঁটলে কি ভাল লাগবে?’
সুকান্ত মজুমদারের সাফাই, ‘বিজেপি কেন ইছাপুরের তৃণমূল নেতাকে গুলি করতে যাবে? ৪২টি সাংগঠনিক জেলায় বহু বিজেপি কর্মী এখনও ঘরছাড়া। বিজেপি যদি গুলিই করত, তা হলে দলের এত কর্মী-সমর্থক বিধানসভা ভোটের পর থেকে এ ভাবে ঘরছাড়া থাকত না।’
আরও পড়ুন: Ichapore Murder: ইছাপুরে তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেফতার বিজেপি নেতা
শনিবার রাতে পার্টি অফিস থেকে ফেরার পথে দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হন গোপাল মজুমদার। ইছাপুর মানিকতলার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাছে দুই দুষ্কৃতী বাইক নিয়ে তাঁর পথ আটকায়। প্রথম তাঁকে গুলি করা হলেও তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় এলোপাথাড়ি কোপ মারা হয়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই মৃত্যু হয় তৃণমূল নেতার। এই খুনের ঘটনায় পরিবারের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাতেই আটক করা হয়েছিল বিজেপি নেতা বিজয় মুখোপাধ্যায়কে। জেরার পর অর্জুন-ঘনিষ্ঠ বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিস।