কলকাতা: তাঁকে কেউ নিষেধ করেনি। পরিস্থিতি যেদিকে এগিয়েছে তাতে বাধ্য হয়েই সোশাল মিডিয়ায় আসতে হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁর ফেসবুক লাইভ প্রসঙ্গে এভাবেই সাফাই দিলেন কামারহাটির বিধায়ক মদন মিত্র। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, যদি তিনি দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে থাকেন, তাহলে দল যা শাস্তি দেবে তা তিনি মাথা পেতে নেবেন।
মদন মিত্র। নামটাই যথেষ্ট। কখনও বিতর্কে। কখন সমালোচনায়। কখনও হুমকিতে। কখনও গানে। সব সময়ই যেন কালারফুল তিনি। এহেন মদনের ধারাবাহিক ফেসবুক লাইভ নিয়ে কালীঘাটের অন্দরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছিল। কেন দলীয় নেতৃত্বকে না জানিয়ে যে কোনও বিষয়ে সোশাল মিডিয়ায় মুখ খুলছেন তিনি, তা নিয়ে প্রশ্নও উঠছিল। মদনের এই ফেসবুক আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মদনের সামনেই বলেছিলেন, যেন বেশি কথা না বলে সে।
কিন্তু মদন ছিলেন মদনেই। নেত্রী যখন সাংগঠনিক বৈঠকে স্পষ্ট করেছিলেন কোন কথা কার কাছে বলবেন, তখনও কিন্তু দলের রীতির বিরুদ্ধে দেখা গিয়েছে কামারহাটির বিধায়ককে। নেত্রীর নির্দেশ ছিল, সাংসদদের অভাব-অভিযোগ প্রথমে জানাতে হবে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বিধায়করা কথা বলবেন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। আর পাঁচজন নেতা-কর্মী যে কোনও অভাব-অভিযোগ নিয়ে সুব্রত বক্সি এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। কিন্তু কখনই প্রকাশ্যে কিছু বলা যাবে না।
আরও পড়ুন: Mamata-Madan: লাগামহীন ফেসবুক লাইভ, ‘বিরক্ত’ মমতা, দলীয় শৃঙ্খলা ভেঙে ‘শাস্তি’র মুখে মদন
নেত্রীর এহেন নির্দেশ কিন্তু ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়েছিলেন মদন মিত্র। যে কোনও বিষয়ে লাইভে এসে মন্তব্য করছিলেন। এমনকি দলের সাংসদ, বিধায়ক, মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন। যদিও সপ্তাহ কয়েক আগে হঠাৎই যেন ‘বোধোদয়’ হয় মদনের। ফেসবুক লাইভে জানান, তিনি কিছুদিন সোশাল মিডিয়া থেকে দূরে থাকবেন।
কিন্তু তাল কাটে বৃহস্পতিবার রাতে। পর পর তিনটি ফেসবুক লাইভ করেন। অভিযোগ করেন, প্রশ্ন তোলেন। এর পরই খবর, মদনের এমন আচরণে রুষ্ট কালীঘাট। যদিও কামারহাটির এই বিধায়ক বলছেন, ফেসবুক লাইভ করতে দল তাঁকে বারণ করেনি। লাইভে সৌগত রায় সম্পর্কে একাধিক ক্ষোভ উগরেছিলেন তিনি। এ প্রসঙ্গে তাঁর সাফাই, সৌগত রায় নিজেই দলীয় শৃঙ্খলা মানেন না। একই সঙ্গে বলেছেন, যদি তাঁর মন্তব্য দলবিরোধী হয়, দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি যদি কোনও রকম শাস্তি দেয়, তাহলে তিনি মাথা পেতেই নেবেন।