কলকাতা: কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগের শেষ নেই। জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, বেসরকারিকরণ, কৃষক বিরোধী নীতি ইত্যাদি। তার মধ্যে অন্যতম উল্লেখযোগ্য অভিযোগ, বেকারত্ব। নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আমলে দেশে গত ৪৩ বছরের বেকারত্বের হার সর্বোচ্চ ছুঁই ছুঁই। দাবি বিরোধীদের। অভিযোগের সংসদের উভয় কক্ষের বহুবার অধিবেশন সভাপতি হয়ে ওঠে। সেই অভিযোগ নিয়ে প্রাক্তন বিজেপি নেতা মুকুল রায় মঙ্গলবার আচমকায় মোদী-অমিত শাহকে আক্রমণ করলেন। একইসঙ্গে অমিত শাহের পুত্র জয় শাহের কোম্পানির নজিরবিহীন সম্পত্তির বিষয়টিও তুলে ধরেছেন মুকুল রায়। মঙ্গলবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবরের লিংক নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে পোস্ট করে মুকুল রায় বেকারত্ব নিয়ে মোদি-অমিত শাহকে আক্রমণ করেছেন।
কী লিখেছেন টুইটারে মুকুল রায়? লিখেছেন, “Unemploymentnarendramodi শাসনের অধীনে যখন বেকারত্ব ৪৩ বছরে সর্বোচ্চ ছুঁয়েছে, @অমিত শাহের পুত্র কোম্পানি টার্নওভার ১৬,০০০ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে !! ভাবছেন টাকা কোথা থেকে এল?”
While unemployment touched 43 years high under the @narendramodi rule, @AmitShah's son company reported a turnover increase by 16,000 times!!
Wonder where the money came from?https://t.co/jlZugAmZJM— Mukul Roy (@MukulR_Official) September 7, 2021
তিন বছর আগে জাতীয় ডিজিটাল সংবাদ মাধ্যম
‘দ্য ওয়্যার’-এর দাবি করে, কেন্দ্রীয় সংস্থা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজকে দেওয়া টেম্পল এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের তথ্য অনুযায়ী ২০১৩ আর ২০১৪-র মার্চে শেষ হওয়া দুই আর্থিক বছরে তাদের ব্যবসায় ক্ষতি দেখানো হয়েছিল যথাক্রমে ৬ হাজার ২৩০ এবং ১ হাজার ৭২৪ টাকা। সংস্থাটি প্রথম লাভের মুখ দেখে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে। ওই বছর সংস্থাটির লাভের পরিমাণ ছিল ১৮ হাজার ৭২৮ টাকা। ওই বছর মোট ব্যবসা হয়েছিল ৫০ হাজার টাকার। তার পরেই ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ধূমকেতুর মতো উত্থান হয় কোম্পানিটির। ওই বছর জয় শাহের কোম্পানির বাৎসরিক টার্নওভারের পরিমাণ গিয়ে দাঁড়ায় ৮০ কোটি টাকায়।
আরও পড়ুন- ‘পাকিস্তান দূর হটো’ স্লোগানে তপ্ত কাবুল, গুলি ছুঁড়ল তালিবান
সেই খবর অনলাইনে ছড়িয়ে পড়তেই দিল্লিতে এআইসিসির সদর দফতরে সাংবাদিক সম্মেলন করে কংগ্রেস। প্রবীণ কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বল বলেন, ‘‘ক্ষমতার পালাবদলের পর মনে হচ্ছে কারও কারও কপাল খুলে গিয়েছে! কেন্দ্রীয় সংস্থা রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজের দেওয়া তথ্য বলছে, অমিত-পুত্র জয় শাহের সংস্থা ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে প্রথম লাভের মুখ দেখার পরের বছরেই তার ব্যবসা ১৬ হাজার গুণ বাড়িয়ে ফেলেছে!’’ সিব্বল গোটা ঘটনার তদন্তের দাবি জানান। সিব্বলের কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রীজি কি এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেবেন? নাকি ইডি-কে দিয়ে তদন্ত করাবেন এই ঘটনার। সিবিআই বা ইডিকে কি অপরাধীদের গ্রেফতার করতে বলবেন প্রধানমন্ত্রী? এটা যদি বিরোধী পক্ষের ঘটনা হত, তা হলে তো সঙ্গে সঙ্গে ইডিকে দিয়ে গ্রেফতার করানো হত।’’
আরও পড়ুন-শুভেন্দুকে রক্ষাকবচ সিঙ্গল বেঞ্চের, চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য
তখনই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করা হয় বিজেপির তরফে। বলা হয়, অমিতপুত্র জয় শাহ ১০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করছেন ‘দ্য ওয়্যার’-এর বিরুদ্ধে। বিজেপির রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল বলেছেন, ‘‘এ সব একেবারেই মিথ্যা অভিযোগ। ব্যবসার জন্য যে কেউ ঋণ নিতেই পারেন। নিয়ম মেনেই সেই ঋণ নেওয়া হয়েছে। ঋণ মেটানোর শর্তও মেনে চলা হয়েছে। তাই এর মধ্যে কোনও বেআইনি ব্যাপার নেই।’’