নয়াদিল্লি: গোটা শীতকালীন অধিবেশনে (Parliament Winter Session) লোকসভার বিরোধী দলনেতা অধীর চৌধুরী (Adhir Chowdhury) সহ ৩৩ বিরোধী সাংসদ ফের সাসপেন্ড (Suspended )। সোমবার সংসদে তুমুল হই হট্টগোলের পরই ৩৩ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করেন লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। এর আগেও ১৩ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে শীতকালীন অধিবেশনে দুই দফায় মোট ৪৬ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল। রাজ্যসভায় ৪৫ জনকে সাসপেন্ড করা হয়। লোকসভায় রঙিন ধোঁয়া কাণ্ডের প্রতিবাদে সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে বিশৃঙ্খলার অভিযোগ বিরোধী সাংসদদের বিরুদ্ধে।
লোকসভায় স্মোককাণ্ডের ঘটনায় সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিবৃতি দাবি করে আসছিলেন বিরোধীরা। এই ইস্যুতে সরব হয়েছেন তাঁরা। সোমবারও অধিবেশন শুরু হলে সংসদ হামলার ইস্যুতে উত্তাল হয়ে ওঠে সংসদ। তিনটে পর্যন্ত সভার কাজ মুলতুবি করে দেন স্পিকার। পরে অধিবেশন শুরু হলেও পরিস্থিতি শান্ত না হওয়ায় অধীর-সহ ৩৩ জনের বেশি সাংসদকে সাসপেন্ড করেন স্পিকার। সাসপেন্ড হওয়া সাংসদদের তালিকায় রয়েছেন বাংলার বেশ কয়েকজন তৃণমূল সাংসদও। কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, অপরূপা পোদ্দার, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, সুনীল মণ্ডল, সৌগত রায়, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, প্রতিমা মণ্ডল, অসিত মাল, শতাব্দী রায়কে সাসপেন্ড করেছেন স্পিকার। এ ছাড়া এই তালিকায় রয়েছেন ডিএমকের তিন সাংসদ টিআর বালু, এ রাজা এবং দয়ানিধি মারান। এই অধিবেশনে লোকসভা ও রাজ্যসভা মিলিয়ে মোট ৯২ জন সাংসদকে সাসপেন্ড করা হল।
আরও পড়ুন: কেজরি ‘চোর’, বিজেপি বিধায়কদের মার্শাল ডেকে বহিষ্কার
এদিকে বিরোধী সাংসদদের সাসপেনশন নিয়ে তৃণমূল নেত্রী এবং বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনদিনের সফরে মমতা এখন দিল্লিতে রয়েছেন। সোমবার বিকেলে তিনি দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী এবং আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠক করেন। মমতা বৈঠক সারেন তৃণমূলের সংসদীয় দলের সঙ্গেও। বিরোধীদের সাসপেন্ড হওয়া নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যা ঘটছে, তা হওয়া উচিত নয়। রীতিমতো স্বৈরতন্ত্র চলছে। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া রক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যা চলছে তা কাঙ্খিত নয়। আমি ভাগ্যবান যে, আমি সাংসদ নই এখন। এ তো দেখছি পুরো পার্লামেন্টই সাসপেন্ড হওয়ার মতো অবস্থা।
রাজ্যসভা এবং লোকসভা থেকে বিরোধী সদস্যদের সাসপেন্ড করার প্রতিবাদে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে এক্স বার্তায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
রাজ্যসভার বিরোধী নেতার কথায়, প্রথমে অনুপ্রবেশকারীরা হামলা চালাল সংসদে। পরক্ষণে মোদি সরকারের হামলা চলল সংসদ এবং গণতন্ত্রকে বিপন্ন করতে। গণতান্ত্রিক যাবতীয় বিধি আজ আঁস্তাকুড়েতে ছুড়ে ফেলে দিল এই সরকার। স্বৈরতান্ত্রিক মোদি সরকার ৪৭ জন এমপিকে সাসপেন্ড করে গণতন্ত্রকে বিপন্ন করার চেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, মাত্র দুটি দাবি ছিল বিরোধীদের। একটি হল সংসদের দুই কক্ষে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি। দ্বিতীয়ত, সংসদের নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা।
খাড়্গের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সংবাদপত্রেরসাক্ষাৎকার দিতে পারেন। কিন্তুু সংসদের প্রতি তাঁদের বিন্দুমাত্র দায়বদ্ধতা নেই। বিরোধীশূন্য সংসদে এবার সরকার আইনকে দলে-পিষে দেবে। গুরুত্বপূর্ণ আইনকে বিতর্কের অবকাশ না দিয়ে পাশ করিয়ে নেবে। এটাই ছিল এদের উদ্দেশ্য।
আরও অন্য খবর দেখুন