কলকাতা: দেখতে দেখতে ৫২ বছর কেটে গেল। শনিবার, ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় দিবস (Bangladesh Bijoy Dibosh)। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর আজকের দিনে পৃথিবীর মানচিত্রে জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র। এই দিনেই ভারতীয় সেনা এবং বাংলাদেশ মুক্তি বাহিনীর যৌথ নেতৃত্বের কাছে আত্মসমর্পণে বাধ্য হয় পাক বাহিনী।
শনিবার সকাল থেকেই বাংলাদেশে উৎসবের মেজাজ। সূর্যোদয়ের পরেই রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। পরে বাংলাদেশ যুদ্ধে আহত যেসব মুক্তিযোদ্ধা এখনও বেঁচে আছেন, তাঁরাও পুষ্পস্তবক দেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংস্থা, সমাজের বিশিষ্টরা স্মৃতিসৌধে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
নয় মাসের বাংলাদেশ যুদ্ধে ভারতীয় সেনা বাহিনীরও বিরাট ভূমিকা ছিল। সেই প্রেক্ষাপটেই জড়িয়ে গিয়েছিল কলকাতারও নাম। বাংলাদেশ বিজয় উতসব উপলক্ষে এদিন কলকাতার ফোর্ট উইলিয়মে শহীদ বেদিতে মালা এবং ফুল দেন বর্তমান ও প্রাক্তন সেনা অফিসাররা। কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও শ্রদ্ধা জানান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ৩১ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যরা হাজির ছিলেন।
আরও পড়ুন: নলহাটিতে প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক উদ্ধার, এএনআই তদন্তের দাবি বিজেপির
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের কালো রাতে পাক হানাদার বাহিনী পূর্ব পাকিস্তানের ঘুমন্ত সাধারণ মানুষের উপর চরম আক্রোশে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ট্যাঙ্ক, কামানের মতো মারণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছিল। সেই রাতেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযুদ্ধের আহ্বান জানিয়েছিলেন দেশের স্বাধীনতার লক্ষ্যে। তাঁর আহ্ববানেই দেশের ছাত্র, যুব, মহিলা, সাধারণ মানুষ পাক হানাদারদের সঙ্গে অসম এক যুদ্ধে শামিল হন। তাতে সাথ দেয় ভারতীয় সেনা বাহিনী। নয় মাসের এই অসম যুদ্ধে প্রায় ৩০ লাখ মানুষের প্রাণ গিয়েছিল। প্রায় দুই লাখ মা-বোনের ইজ্জত লুটে নিয়েছিল পাক হানাদাররা। ক্ষতি হয়েছিল বিপুল সম্পত্তির। নয় মাস পর ১৬ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর শীর্ষ কর্তারা জওয়ানদের নিয়ে যৌথ বাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হন। জন্ম নেয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।
এদিন সকাল থেকে বাংলাদেশের সর্বত্র বাজছে একটাই গান। তা হল বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি। স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর গত ৫২ বছরে বাংলাদেশের যা কিছু উন্নয়ন, তা সম্ভব হয়েছে জাতির পিতা মুজিবুর রহমানের আদর্শকে পাথেয় করে এবং আওয়ামী লিগের হাত ধরে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে মুজিবের স্বপ্ন সফল হবে। বাংলাদেশ ক্ষুধা এবং দারিদ্রমুক্ত সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত হবে। রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন বলেন, দেশের রাজনৈতিক দলগুলিকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে।
আরও অন্য খবর দেখুন