ওয়েবডেস্ক- ভুয়ো চিকিৎসক, ভুয়ো আইনজীবী, ভুয়ো পুলিশ অফিসারের অনেক খবর সামনে এসেছে, এবার ভুয়ো দূতাবাস! খোদ দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদে এই প্রকাশ্যে এসেছে ভুয়া ওয়েস্টার্টিকা দূতাবাসের (Fake Westarctica Embassy) খবর। গাজিয়াবাদের (Ghaziabad) এক ব্যক্তি দিনের পর দিন পুলিশের নাকের ডগায় বসে এই কাজ চালিয়ে আসছিল।
অভিযুক্তে নাম হর্ষ বর্ধন জৈন (Harshvardhan Jain) । ভুয়ো দূতাবাস চালানোর জন্য তিনি ব্যবহার করতেন জাল কূটনৈতিক প্লেট। অভিযোগ, ব্যবহার করতেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার ছবি ! আর সেই ছবি সামনে রেখে লোক ঠকানোর কাজ করে যাচ্ছিলেন বহাল তবিয়তেই।
শুধু তাই নয়, ওই ব্যক্তি নেতাদের মর্ফড ছবি (ডিজিটালি বিকৃত করা) ব্যবহার করে মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতেন। সাধারণ যুবক-যুবতীকে বিদেশে চাকরির টোপ দিতেন। হর্ষবর্ধন জৈন একজন নিজেকে ‘ব্যারন’ (Baron) বলে পরিচয় দিতেন।
আরও পড়ুন – নাগরিকত্ব যাচাইয়ের এক্তিয়ার ‘কমিশনের’ আছে: Election Commission
উত্তর প্রদেশ স্পেশাল টাস্ক ফোর্স- (Uttar Pradesh Special Task Force) এর নয়ডা (Noida) ইউনিটের তথ্য অনুযায়ী, গাজিয়াবাদের ওই ব্যক্তি কবি নগর এলাকায় ভাড়া বাড়িতেই দিনের পর দিন ভুয়ো দূতাবাস চালিয়ে যাচ্ছিলেন। এমনকী নিজেকে ক্ষুদ্র কয়েকটি দেশের অর্থাৎ মাইক্রোনেশনগুলির রাষ্ট্রদূত বলেও দাবি করতেন তিনি। ওই ব্যক্তির দাবি মতো তিনি, সাবোরগা, পুলভিয়া, পশ্চিম আর্কটিকা, এবং লোডোনিয়ার মতো দেশগুলির রাষ্ট্রদূত পদে কর্মরত। এসটিএফ কূটনৈতিক নম্বর প্লেট সহ চারটি বিলাসবহুল গাড়ি, ১৮টি নম্বর প্লেট, ৪৪ লক্ষ টাকা নগদ, বিদেশি মুদ্রা, জাল নথি এবং স্ট্যাম্প বাজেয়াপ্ত করেছে।
ওই ব্যক্তি নিজেকে সঠিক প্রমাণ করার জন্য জাল কূটনৈতিক নম্বর প্লেটযুক্ত যানবাহন ব্যবহার করতেন। অভিযোগ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিজের ছবি দেখাতেন। ওই ছবিগুলি ‘মর্ফড’ ছবি বলেই অনুমান পুলিশের।
তদন্তকারীর আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ওই ব্যক্তি কারবার চালাচ্ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। শেল কোম্পানির মাধ্যমে হাওলা র্যাকেট (অবৈধ অর্থ স্থানান্তর) ও চালাতেন। প্রাথমিক তদন্তে এসটিএফ জানতে পেরেছে, ওই ব্যক্তি আসলে একজন দালাল। বিদেশে চাকরি খুঁজে দেওয়ার পাশাপাশি গোপনে হাওলা র্যাকেটও চালাতেন। সেটাই ছিল তাঁর মূল কাজ।
তবে অপরাধমূলক কাজকর্ম সে আজ থেকে চালাচ্ছে এমনটা নয়। ২০১১ সাল নাগাদ ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে পুলিশে মামলা দায়ের হয়। একটি অবৈধ স্যাটেলাইট ফোন-সহ পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল। জানা গেছে, তার পরিচিতির সংখ্যাও বেশ দীর্ঘ।
গাজিয়াবাদে জৈন একটি বিলাসবহুল সম্পত্তি ভাড়া নিয়েছিলেন এবং ওয়েস্টার্কটিকার “নয়াদিল্লিতে কনস্যুলেট-জেনারেল” হিসেবে এটি পরিচালনা করেছিলেন। সেখানে ২০১৭ থেকে দূতাবাস চালাচ্ছিলেন বলে দাবি করেন।
মাইক্রোনেশন কী?
মাইক্রোনেশন হল স্বঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র, যা অন্যান্য দেশ দ্বারা স্বীকৃত নয়। প্রায়শই কৌতুকপূর্ণ বা শিল্পকলা অনুপ্রাণিত, এরা সাধারণত এত ছোট এবং অদ্ভুত যে “বাস্তব” দেশগুলো এদের উপস্থিতি বুঝতে পারে না। অনেক মাইক্রোনেশন পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থান হিসেবে পরিচিত।
দেখুন আরও খবর-