কলকাতা: চারদিকে পুজোর গন্ধ। মাঠে-ঘাটে কাশফুল। ঝলমলে আকাশ, জানান দিচ্ছে পুজো চলে এসেছে। আর তো হাতেগোনা কয়েকটা দিনের অপেক্ষা। তারপরই শুরু হয়ে যাবে দেবীপক্ষের। সেজে উঠেছে শহর থেকে শহরতলি। আর পুজোময় শহরে অভিনেত্রী মধুমিতা সরকার কী করছেন? কলকাতা টিভি অনলাইনে সৌমীর সঙ্গে আড্ডায় কী জানালেন পড়ুন –
সৌমী: কেমন আছো?
মধুমিতা: আমি খুব ভালো আছি। কাজ চলছে, ব্যস্ততার মধ্যেই। ব্যস! ওটাই তো চাই। আর কী? তাই না!
সৌমী: ঠিকই তো! তাহলে পুজো পুজো গন্ধটা অনুভব করছো?
মধুমিতা: হ্যাঁ পাচ্ছি (উৎসাহের সঙ্গে)। এখন তো কলকাতার রাস্তায় বেরলেই পুজো পুজো গন্ধ। এখন যেখানেই বেরচ্ছি দেখা যাচ্ছে সব জায়গায় প্যান্ডেল তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি। পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে, সেই টেম্পোরারি ফ্লেক্সগুলো লাগানোর কাজও প্রায় শেষের দিকে। বিশেষ করে বলব, কলকাতার রাস্তায় মানুষের কেনাকাটির জন্য সেই ভিড়ই বলে দেয় পুজো শুরু। এই অ্যাম্বিয়ান্স ও অ্যাটমোসফিয়ারটা আমি ফিল করতে পাচ্ছি ভাল করে। সুতরাং, এই সব দেখে কিন্তু একটা আলাদা রকম এক্সসাইটমেন্ট কাজ করছে আমার।
সৌমী: ঠিকই বলেছ, তোমার পুজোর শপিং হয়ে গিয়েছে? নাকি কাজের চাপে এখনও সময় হয়ে ওঠেনি?
মধুমিতা: না (হালকা হেসে)। আমি পুজোয় কেনাকাটি করি না। লাস্ট কত বছর হয়ে গিয়েছে, আমার না ঠিক মনে নেই। ছোটবেলায় মা-বাবার থেকে প্রচুর জামাকাপড় পেয়েছি। ওটা ম্যান্ডেটরি ছিল, যে আমার ১০টা জামা লাগবেই (হেসে)। মানে পাঁচ দিন ষষ্ঠী থেকে দশমী, সকাল-বিকেল মিলিয়ে ১০টা জামা লাগবে, ঠিক এই রকম ছিল আমার ছোটবেলা। তবে এখন আর সেটা নেই। এখন যদি পুজোতে কোথাও যেতে হয়, তাহলে নিজেই কিনে নিই। এছাড়াও ডিজাইনার বন্ধুরা এখন বানিয়ে দেন, তাঁদের থেকেই নিই। কিন্তু আমি চেষ্টা করি পুজোতে ওয়েস্টার্ন না পরার, ইন্ডিয়ানটাই আমি বেশি প্রেফার করি পুজোতে।
আরও পড়ুন: পুজোয় কম খরচে ফরেন ট্রিপ? রইল ৪ ডেস্টিনেশন
সৌমী: পুজোর কয়েকটা দিন মধুমিতা কীভাবে সময় কাটায়? পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, কলিগ না প্রিয় মানুষের সঙ্গে?
মধুমিতা: বালিগঞ্জ প্লেসে ‘দুর্গাবাড়ি’ বলে একটা জায়গা আছে, সেখানেই পরিবারের সঙ্গে আমার বেশি সময়টা কাটে। আসলে আমার বড় হওয়া কিন্তু বালিগঞ্জেই। পুজোতে ওখানেই সময় কাটানো, ঠাকুরের ভোগ প্রসাদ খাওয়া, অঞ্জলি দেওয়া, সন্ধি পুজো বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই কেটে যায় আমার পুজো। এছাড়াও, পুজোতে তো আড্ডা, খাওয়া-দাওয়া মাস্ট। আমার বাড়িতেই বন্ধুদের সঙ্গে চুটিয়ে আড্ডা মারি (মিষ্টি হেসে)। আমি যেখানেই থাকি না কেন, পুজোতে কিন্তু আমকে দেশপ্রিয় পার্ক কিংবা ট্রায়াঙ্গুলার পার্কে কোথাও একটা দেখতে পাবেই নাগরদোলা চড়তে (খুব হেসে)।
সৌমী: পুজো মানেই কিন্তু ফ্যাশন। তোমার কাছে ফ্যাশন স্টেটমেন্ট কী? কী টিপস দেবে?
মধুমিতা: আমার কাছে ফ্যাশন বলতে, যেটা খুব কমফর্টেবল। যেটা পরে তুমি রিলাক্স অনুভব করবে, ইউ হ্যাভ টু বি কমফর্টেবল অন দ্যাট। দেখো, পুজোটা ফোটোশুট নয় ডেফিনিটলি। পুজো এমন একটা জায়গা যেখানে, নিজে কমফটেবল না থাকলে, জমিয়ে মজা করাই যায় না। ছোটবেলা থেকেই বাই-ডিফল্ট আমাকে যেই রকমই জামাকাপড় দেওয়া হোক না কেন, আমি সহজেই সেটা ক্যারি করে নিই। এটাই বলব, আমার কাছে কমফর্টটা হচ্ছে ফাস্ট প্রায়োরিটি। আমি কিন্তু পুজোতে হাই হিলও অ্যাভয়েড করি (হেঁসে)। ওই যে বললাম না, আগে ‘কমফর্ট।
সৌমী: খাওয়া-দাওয়া তো পুজোতে থাকবেই…
মধুমিতা: (প্রথমেই হাসি)। হ্যাঁ, সে আর বলতে! আমার ডায়েট দু-তিন মাস আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে (হেসে)। পুজোর সময় আলাদা ভাবে কিছু করি না আমি। সব খাবারই আমি কম-বেশি খাই। তার মধ্যে ঠাকুরের ভোগ কিন্তু মাস্ট। সারা বছরই আমার এদিক ওদিক চলতে থাকে। যেমন, রোল, ফুচকা খেতেই থাকি। আসলে কাছের মানুষগুলো যখন থাকে, তখন ভীষণই হইহুল্লোড় হয়। দেখবে তখন কিন্তু খেতেও বেশি ইচ্ছে করে। আবারও বলব, এই সব ছাড়া কিন্তু পুজোতে মাস্ট হল ঠাকুরের ভোগ খাওয়া।
সৌমী: কোভিডের আগের পুজো আর পরের পুজো, কী পরিবর্তন লক্ষ্য করছো?
মধুমিতা: এখন সেরকম ভাবে কিছু লক্ষ্য করতে পারছি না। পুজো গেলে আরও ভাল বোঝা যাবে। এখন মানুষ কোভিড ব্যাপারটা অনেক ওভারকাম করে ফেলেছে। পুরনো পুজোর মতোই লাগছে কিন্তু এখন। আসলে বাঙালিরা সাবেকিয়ানাটা ভালোভাবে মেইনটেইন করতে পারে।
সৌমী: পুজোর পর কী কী ছবি আসছে তোমার?
মধুমিতা: পুজোর পরে দু-তিনটে প্রজেক্ট আছে। আই থিঙ্ক…আমি টানা ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাস্ত থাকব কাজ নিয়ে। দুটো বাংলা ছবি আছে হাতে। একটা আমি অলরেডি শুট করছি। আরও একটা প্রি-প্রোডাকশন চলছে। এগুলো ছাড়াও একটা হিন্দি ছবি আছে হাতে। আর অ্যাড তো আছেই…। এই সবই। ব্যস।
সৌমী: একদম, পুজো খুব ভালো কাটাও…
মধুমিতা: থ্যাঙ্ক ইউ, তুমিও খুব ভালো পুজো কাটাও…কলকাতা টিভি অনলাইনের পাঠকদের জন্য অনেক অনেক পুজো শুভেচ্ছা
অন্য খবর দেখুন: