বাঁকুড়া: অষ্টধাতুর প্রাচীন দেবী দুর্গা। প্রায় ৫০০ বছরে পা দিল বাঁকুড়ার (Bankura) তালডাংরা ব্লকের ব্রাহ্মনডাঙা গ্রামের (Brahmandanga village in Taldangra) রায় পরিবারের পুজো ( Roy family Durga Puja)। পুজোতে রয়েছে নানান প্রাচীন রীতি। পুজোর সময় মাটির মূর্তিতে বিশেষ পুজো হয়। রায় বংশের আদি পুরুষের স্বপ্নাদেশে পাওয়া দেবী দুর্গার পুজো আজও নিয়ম মেনে পালন করে বর্তমান প্রজন্ম।
বাঁকুড়ার তালডাংরা ব্লকের ব্রাহ্মনডাঙ্গা গ্রামের রায় পরিবারের আদি পুরুষের বসবাস ছিল উত্তর ২৪ পরগনার ভাটপাড়া এলাকায়। মগন রায় নামে পূর্বপুরুষ পুঁথি লিখতেন সেই সুবাদেই সাক্ষাৎ হয় বিষ্ণুপুরের রাজার। শোনা যায় বিষ্ণুপুর রাজার আমন্ত্রণে বিষ্ণুপুরে আসেন মগন রায় ও তার পরিবার। বিষ্ণুপুর রাজার আদেশে তালুকদার হিসেবে নিযুক্ত হয়ে তালডাংরায় ব্রাহ্মনডাঙ্গা গ্রামেই বসবাস শুরু করেন তিনি। বিষ্ণুপুর রাজার থেকেই রায় উপাধি পান তারা। মগন রায় স্বপ্নাদেশে অষ্টধাতুর দুর্গামূর্তি পেয়ে পুজো পাট শুরু করেন। মন্দির নির্মান করে দুর্গাপুজা শুরু করেন তিনি। প্রায় ৫০০ বছর প্রাচীন রায় পরিবারের দুর্গাপুজো।
আরও পড়ুন: ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় কিউআর কোড টিকিটিং সিস্টেম
সারাবছর অষ্টধাতুর দেবী দুর্গার আরাধনা ও নিত্য সেবা করা হয়। দুর্গাপুজার সময় মাটির মূর্তি নির্মান করে প্রাচীন নিয়ম মেনেই দেবী দুর্গার আরাধনায় মেতে উঠেন রায় পরিবার ও গ্রামের মানুষ। মাটির মূর্তিও প্রায় এক বছর রাখা থাকে দুর্গাদালানে। পরিবারের এক সদস্য বলেন, রায় পরিবারের বাড়িতে শাখ বাজানো ও সন্ধ্যে দেওয়া হয়না। বারো মাস দুর্গাদালানে প্রতিদিন সন্ধ্যে আরতি ও শঙ্খধ্বনি ধ্বনিত হয়। পুরানো বাড়ি গুলি আজ জরাজীর্ন। চুর সুরখির পলেস্তার খসে বেরিয়ে এসেছে ইট। অনেকেই পুরানো বাড়ি ভেঙে নতুন বাড়ি করেছেন। রয়েছে প্রাচীন স্মৃতি খিড়কি দিঘী। সেখানেই দেবী দুর্গার স্নান পর্ব ও ঘট উত্তোলন করা হয়।
নতুন রূপে দেবী দুর্গার মন্দিরও নির্মান করেছেন বর্তমান রায় পরিবারের সদস্যরা। পুজোর ভোগ রান্না করেন রায় পরিবারের পুরুষ সদস্যরা। নিয়ম ও প্রাচীন রীতির এতটুকুও খামতি রাখেন না রায় পরিবারের সদস্যরা। আজও নিষ্ঠা ও ভক্তির সাথে দেবী দুর্গার আরাধনা করেছেন রায় পরিবার ও দৌহিত্ররা প্রজন্মের পর প্রজন্মের হাত ধরে। সবমিলিয়ে পুজো কটা দিন জমে উঠে রায় পরিবারের দুর্গাদালান। হারানো ইতিহাস খুজে পান রায় পরিবারের সদস্যরা।
আরও অন্য খবর দেখুন