ওয়েব ডেস্ক: এবার বাংলার এক পরিযায়ী শ্রমিককে নৃশংসভাবে হত্যা। উত্তর ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) বাদুড়িয়া থানার রুদ্রপুরের বাসিন্দা আবুবক্কর মণ্ডলকে কুপিয়ে খুন করে তাঁর টুকরো টুকরো দেহ বস্তাবন্দি করে জলে ফেলে দেওয়া হল। ঘটনা মহারাষ্ট্রের ভাসি পুলিশ থানার (Vashi Police Station) ওয়াসিগাও এলাকায়।
সূত্রের খবর, বেশ কয়েকবছর ধরে আবুবক্কর মহারাষ্ট্রে শ্রমিকের (Maharashtra Migrant Worker) কাজ করতেন। মূলত রাজমিস্ত্রির কাজে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেখানে তিনি ও তাঁর স্ত্রী একসঙ্গে থাকতেন। রবিবার ২০শে জুলাই সন্ধ্যার পর থেকে আবু বক্করের কোনও খোঁজ খবর পাচ্ছিলেন না তাঁর পরিবার। তাঁর মোবাইল ফোনও সুইচ অফ ছিল। রবি ও সোমবার তাঁকে খোঁজাখুঁজির পর না পাওয়া গেলে স্থানীয় ভাসি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তাঁর পরিবার। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে ভাসি থানার পুলিশ (Vashi Police Station)।
আরও পড়ুন: বঙ্গোপসাগরে সক্রিয় নিম্নচাপ, ভাসবে কোন কোন জেলা?
মঙ্গলবার তাঁর বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে একটি ডোবার ভিতরে বস্তাবন্দি অবস্থায় টুকরো টুকরো করা তাঁর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরিবারকে সেই দেহ দেখালে তাঁর পরিবার দেহ শনাক্ত করেন। এরপর পুলিশ দেহটি ময়নাতদন্তে পাঠায়। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে মহারাষ্ট্র থেকে তাঁর কফিনবন্দি দেহ বাদুড়িয়ার রুদ্রপুরে তাঁর বাড়িতে আনা হয়। দেহ বাড়ি ফিরতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর মা-বাবা সহ আত্মীয় পরিজনেরা। পরিবারের তরফে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। পাশাপাশি, পরিযায়ী শ্রমিকদের উপর এমন অমানবিক অত্যাচার ও খুনের ঘটনা কেন ঘটছে, সে বিষয়েও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছে পরিবার। ঠিক কি কারণে ভিনরাজ্যে ওই পরিযায়ী শ্রমিককে খুন হতে হল, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে মহারাষ্ট্রের ভাসি থানার পুলিশ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি বিজেপি শাসিত রাজ্যে বাংলা বললেই ‘বাংলাদেশি’ বলে দাগিয়ে দিয়ে আটক করা হচ্ছে বাংলার শ্রমিকদের। বিজেপি রাজ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালিদের হেনস্থার প্রতিবাদে ২১শে জুলাইয়ের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রকে তোপ দেগেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ভিনরাজ্যে বাংলাভাষীদের হেনস্তাকেই হাতিয়ার করতে চাইছে শাসকদল তৃণমূল। এমনকি বাঙালি হেনস্থার প্রতিবাদে পথে নেমেছে বাম সংগঠনও। যদিও বিজেপি অনুপ্রবেশ তত্ত্বেই শাণ দিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবারও মহানায়ক সম্মান অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েও মুখ্যমন্ত্রীর মুখে বাঙালি অস্মিতাকে রক্ষা করার কথাই স্পষ্ট হয়েছিল। এবার ফের ভিনরাজ্যে পরিযায়ী শ্রমিককে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় পরিযায়ী শ্রমিকদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
দেখুন অন্য খবর