কলকাতা: আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের (RG Kar Medical College And Hospital) আর্থিক দুর্নীতি মামলায় চূড়ান্ত চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। সোমবার আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা এই দ্বিতীয় চার্জশিটে তৎকালীন ডেপুটি সুপার আখতার আলি এবং শশীকান্ত চন্দকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে ধরে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই (CBI)।
সিবিআইয়ের দাবি, হাসপাতালের পার্কিং লট থেকে শুরু করে ক্যাফেটেরিয়া পর্যন্ত বিভিন্ন পরিষেবার বরাত পাইয়ে দিতে জালিয়াতির বড় চক্র সক্রিয় ছিল। সন্দীপ ঘোষ ও আখতার আলির নির্দেশে শশীকান্ত চন্দক বিভিন্ন সংস্থার কর্তাদের সই জাল করতেন। ফরেনসিক বিশেষজ্ঞের কাছে নমুনা পাঠিয়েও সেই সই জাল করার বিষয়টি যাচাই করেছে সিবিআই।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশ থেকে ফেরা সোনালি বিবির সঙ্গে দেখা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়
সিবিআই জানিয়েছে, ক্যাফের জন্য আটটি সংস্থার কাছ থেকে কোটেশন নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে একটি সংস্থা ছিল আফসার আলি খানের স্ত্রী নার্গিসের নামে। প্রতিটি সংস্থার কোটেশনের সই নকল করে তৈরি করেছিলেন শশীকান্ত, এমনটাই অভিযোগ। এভাবে নিশ্চিত করা হয়, সন্দীপ ঘোষ ও আখতার আলির ঘনিষ্ঠদের হাতেই বরাত যায়। তিন মাসের বদলে এক বছরের বরাত দেওয়া এবং নার্গিসের সই জাল করে পাঁচ বছরের বরাতের আবেদন করা, সবটাই হয়েছিল পরিকল্পিতভাবে। চার্জশিটে দাবি, এই আবেদনের পাশে ‘বিধানসভার সদস্য’ হিসেবে দুই ব্যক্তির নামও রয়েছে।
আরজি কর চত্বরে গাড়ি পার্কিংয়ের বরাত দেওয়ার ক্ষেত্রে একইভাবে জাল সই ব্যবহার করা হয়। এখানেও সন্দীপ–আখতারদের ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তির হাতে বরাত পৌঁছয়। বিশেষ ক্ষেত্রে দুটি আলাদা সংস্থার ইনভয়েস ব্যবহার করে অর্থ তোলা হয়েছে বলেও সিবিআইয়ের দাবি। এমনকি ক্যাফে বরাত পাওয়া এক ব্যক্তির সই নকল করে ৯৫,৩১৬ টাকা উত্তোলনের কথাও উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে।
সিবিআই জানায়, সন্দীপ ঘোষ আর জি করে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই আখতার আলির সঙ্গে পরিচয় ছিল আফসার আলি খানের। পরে সন্দীপ ঘোষের ‘নিরাপত্তারক্ষী’ হিসেবে কাজ করা আফসার শীর্ষ দুর্নীতির সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন—এই অভিযোগে তাঁকেও গ্রেফতার করে সিবিআই। তিনি বর্তমানে জেলবন্দি।
১৬ ডিসেম্বর আদালতে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আখতার আলি ও শশীকান্ত চন্দককে। সিবিআইয়ের বক্তব্য, শশীকান্তের জাল সইই ছিল পুরো দুর্নীতি চক্রের প্রধান অস্ত্র, যার সাহায্যে বহু বরাত ও আর্থিক সুবিধা নিয়ন্ত্রিতভাবে নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর হাতে পৌঁছে দেওয়া হত।
দেখুন আরও খবর:






