হুগলি: উত্তরাখণ্ডে (Uttarakhand) ট্রেকিংয়ে (Trekking) গিয়ে নিখোঁজ চন্দননগরের (Chandannagar) অভিযাত্রী। তিনদিনের তল্লাশির পর মিলল খোঁজ। উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিং করতে গিয়েছিলেন চন্দননগরের রাজীব বিশ্বাস। তিনদিন হয়ে গেলেও তার কোনও খোঁজ না পেয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছিল পরিবার। গত ১৯ সেপ্টেম্বর পর্বতারোহীদের ১১ জনের একটি দল হাওড়া থেকে উপাসনা এক্সপ্রেস ধরে উত্তরাখণ্ড রওনা দেয়। সেই দলে ছিলেন চন্দননগর সুভাষপল্লীর বাসিন্দা রাজীব বিশ্বাস(৫৩)। তাঁদের গন্তব্য ছিল মদমহেশ্বর। ২৬ তারিখ তাঁরা রাশি থেকে মদমহেশ্বরে ট্রেক করেন। সেখানে একজনের পায়ে ব্যথা হওয়ায় তাঁর সঙ্গে থেকে যান রাজীব। বাকিরা বেস ক্যাম্পে নেমে আসেন। পরদিন নীচে নামার সময় শর্টকাট করার জন্য একটা নতুন রুট ধরেন রাজীব।
রাজীবের সঙ্গে থাকা অভিযাত্রী পুরোন রুটে নেমে অপেক্ষা করতে থাকেন। কিন্তু অনেকক্ষণ অপেক্ষার পরেও রাজীবের দেখা না মেলায় রাশিতে ফিরে অন্যদের খবর দেন। শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। উখিমঠ থানার সঙ্গেও যোগাযোগ করে অভিযাত্রী দলটি। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের রেসকিউ টিম খোঁজ শুরু করে। শনিবার রাজীবের সন্ধানে ড্রোন দিয়ে তল্লাশি শুরু হয়।
চন্দননগরে রাজীবের বাড়িতে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী ও মেয়ে। স্ত্রী রানু বিশ্বাস জানান, ২৬ তারিখ শেষবার ফোনে কথা হয়েছিল রাজীবের সঙ্গে। তখনই তিনি জানিয়েছিলেন উপরে উঠলে আর ফোনে টাওয়ার থাকবে না। কথা বলা যাবে না। রানু বলেন, ও উপরে একটা মন্দিরে জুতো খুলে ঢুকেছিল। সেই জুতো পাওয়া গিয়েছে। ফেলে রাখা চশমাও উদ্ধার হয়েছে। ওর পাহাড়ের নেশা ছিল। এর আগে মানস-কৈলাশ, সান্দাকফু-কাশ্মীর-সহ বিভিন্ন জায়গায় ট্রেকিং করেছে। অনেকবার বিপদে পড়েছে। কিন্তু বারণ করলে শুনত না। বলত পাহাড়ের টান তুমি বুঝবে না। এসবে ভীষণ মজা। এরপর কেদারনাথ যাওয়ার কথা ছিল।
আরও পড়ুন: হাসনাবাদে বাজার কমিটির নির্বাচন ঘিরে বিক্ষোভ
রাজীবের জামাইবাবু সুকান্ত লাহিড়ী জানান, রাজীবের ভাগ্নে রাজর্ষি বেঙ্গালুরুতে চাকরি করেন। মামা নিখোঁজের খবর পেয়ে তিনি উত্তরাখণ্ডের পথে রওনা দিয়েছেন। রাজীবের বন্ধু গোপাল দাস বলেন, ও খুব ভালো ফুটবল খেলত। কলকাতা মাঠেও খেলেছে। নেশা ছিল পাহাড়ে ট্রেক করা। আমরাও কয়েকবার গেছি একসঙ্গে। বিভিন্ন দলের সঙ্গে ঘুরতে চলে যেত। এবার যাওয়ার সময় কথা হল। বলেছিল ২ অক্টোবর ফিরবে। কী বিপদে আছে জানি না। তাড়াতাড়ি একটা খবর পেলে চিন্তা দূর হয়।
শনিবার হরিদ্বার থেকে ট্রেন ধরে দু তারিখ ফেরার কথা ছিল রাজীবদের। বাকিরা হয়তো ফিরবেন। কিন্তু রাজীব কবে ফিরবেন এখনও জানে না তাঁর পরিবার। এরপর শনিবার সন্ধ্যায় সবশেষে পাওয়া গেলো।সন্ধান পাওয়া গিয়েছে রাজীবের।আর সেই খবর দিলেন চন্দননগরের আরেক বাসিন্দা প্রশান্ত মান্না,তিনিও রাজীবের সাথেই ট্রেকিংয়ে গিয়েছিলেন।তিনি বলেন, রাজীবের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।রাজিব সর্টকার্ট রাস্তা ধরতে গিয়ে পথ হারিয়ে ফেলেছিল।এরপর নদীর ধার ধরে হাঁটতে শুরু করে।এরপর উদ্ধারকারী দল দুর থেকে ক্যামেরার সাহায্যে তাকে দেখতে পায়।এরপর সেখানে পৌঁছে রাজিবকে উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল।রাজিব সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে।আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই তারা রাজিবকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারবে।আর রাজিবকে উদ্ধারের খবর তার পরিবারের কাছেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও অন্য খবর দেখুন