কলকাতা: বেলেঘাটায় বাড়ি থেকে গৃহবধূর দেহ উদ্ধারের ঘটনায় রহস্যের জট। শ্বশুরবাড়ির লোকজনের অভিযোগ, আত্মহত্যা করেছেন বধূ। মৃতার বাবার অভিযোগ, পুত্র সন্তান না হওয়ায় বেধড়ক মারধর চলত। নির্যাতনের জেরে গতকাল মৃত্যু হয় বেলেঘাটার গৃহবধূর। পরিবারের অভিযোগ, পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে শ্বেতা সাউকে। ইতিমধ্যে নারকেলডাঙা থানায় লিখিত অভিযোগ জানিয়েছে পরিবার। দীর্ঘদিন ধরে এই সমস্যা চলছিল এর আগেও একাধিকবার মারধর করেছে তার স্বামী।
গতকাল ঝামেলা সূত্রপাত হয়, তার বাবা তার শ্বশুরবাড়ি বেলেঘাটায় যখন যান তখন তার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয় না। পরবর্তীতে দরজা জোর করে খুলে যখন ঘরে ঢোকে তিনি দেখতে পান অচেতন অবস্থায় পড়ে রয়েছে খাটে হাসপাতালে নিয়ে আসলে তাকে মৃত বলা হয়। পরিবারের অভিযোগ পরিকল্পনা করে খুন করেছে স্বামী এবং শ্বশুর বাড়ির লোকজন। গত দশ বছর হয়েছে সে তার সঙ্গে রোহিতের বিয়ে। দুই কন্যাসন্তান রয়েছে দম্পতির। পরিবার এবং প্রতিবেশীদের দাবি, গত বছরদুয়েক ধরে দু’জনের মধ্যে অশান্তি লেগেই ছিল। প্রায়শয় নিজেদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় লেগে থাকত। দেহের ময়না তদন্ত করা হচ্ছে মৃত্যুর সঠিক কারণ কি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
আরও পড়ুন: অটিস্টিক শিশুদের জন্য বিশেষ সেনসরি ফ্রেন্ডলি স্ক্রিনিং
মেয়ের মৃত্যুর বিচার চেয়ে নারকেলডাঙা থানার দ্বারস্থ মৃতার পরিবার। জানা গিয়েছে, পুত্রসন্তান না হওয়ায় বুধবার সকালে শ্বশুরবাড়িতে মেয়েকে মারধর করা হচ্ছে বলে খবর পান বাবা ওমপ্রকাশ প্রসাদ। তিনি শিয়ালদহ বৈঠকখানার বাড়ি থেকে বেলেঘাটায় মেয়ের শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হন। মেয়ের শ্বশুরবাড়ি পৌঁছলে শ্বশুর কিশোরীলাল তাঁকে অন্য একটি ঘরে বসিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ। উদ্বিগ্ন বাবা ফোনে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে শ্বেতা জানান, তাঁকে বেল্ট দিয়ে মারধর করা হয়েছে। গলা টিপে মারার চেষ্টাও হয়েছে। মেয়ে যখন বাবাকে অত্যাচারের বিবরণ দিচ্ছেন, তখন শাশুড়ি শ্বেতার হাত থেকে ফোন কেড়ে নিয়ে তা আছড়ে ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। এরপর বাবা জোর করে মেয়ের ঘরে ঢুকে দেখেন সব শেষ। সেই মেয়ে নিথর অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এনআরএস হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্বেতাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। ঘটনায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে।
স্বামীর দাবি, দিনকয়েক আর্থিক সংকটে ভুগছিলেন তাঁরা। সে কারণে মেঘালয়ে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা বাতিল করেছিলেন। তা নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়াঝাটি হয় তাঁর। ঝগড়াঝাটির পর স্ত্রী ভিতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন। বেশ কিছুক্ষণ পর দরজা ধাক্কা দেন। স্ত্রীর সাড়াশব্দ পাননি। এরপর দরজা ধাক্কা দিয়ে ভিতরে ঢোকেন রোহিত। তাজ্জব হয়ে যান তিনি। দেখেন, ঘরে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছেন শ্বেতা। গলায় ওড়নার ফাঁস।
অন্য খবর দেখুন