নয়াদিল্লি: দেশের যুবসমাজকে (Indian Youth) সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা কাজের নিদান দিলেন ইনফোসিস কর্তা (Infosys Founder) নারায়ণ মূর্তি (NR Narayana Murthy)। কাজের সময় ও সামাজিক জীবনের মধ্যে লাগাতার যুদ্ধ নিয়ে তর্কবিতর্কের শেষ নেই। কেউ গলায় রক্ত তুলে খাটার পক্ষে। আবার কেউ দুয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বজায় রেখে কর্মসারণি তৈরি করার পক্ষপাতী। কিন্তু ইনফোসিসের প্রতিষ্ঠাতা কে আর নারায়ণ মূর্তির বক্তব্য সোশাল মিডিয়ায় দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়েছে আর নিন্দার ঝড় তুলেছে।
মূর্তির মতে, দেশের অর্থনীতিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে যুবসমাজকে সপ্তাহে অন্ততপক্ষে ৭০ ঘণ্টা খাটতে হবে। একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে তিনি বলেন, দেশ গঠনে প্রযুক্তির একটি বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। তাঁর কোম্পানি এমনকী বর্তমান দিনের যুবসমাজ নিয়ে তাঁর মত প্রকাশ করেন। তাঁর মতে, চীন যেভাবে অর্থনীতির উন্নয়ন ঘটিয়েছে। সেভাবেই দেশের যুবসমাজকেও নির্দিষ্ট সময়ের বাইরে কাজ করতে হবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপান এবং জার্মানি এভাবেই অর্থনৈতিক ক্ষত পূরণ করেছিল।
আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনে মিলল বালু-র ছ’কোটির ‘দোতারা’
বিশ্বের মধ্যে কাজের উৎপাদনশীলতায় ভারতের অবস্থান নীচের দিকে। যতক্ষণ না আমরা কাজের সময়সীমা বাড়াতে পারছি, সরকারিস্তরে দুর্নীতি কমাতে না পারছি, যতক্ষণ না সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক গড়িমসি কমাতে পারছি, ততক্ষণ আমরা উন্নত দেশগুলির সঙ্গে আর্থিক প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারব না। মূর্তি এরপর বলেন, তাই আমি দেশের যুবসমাজকে বলছি, তোমরাও বলো এদেশ আমার। দেশের ভবিষ্যতের জন্য আমিও সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা শ্রম দিতে পারি।
৭৭ বছরের প্রবীণ কিংবদন্তির এই কথায় সামাজিক মাধ্যমের দেওয়াল পোস্টারে ভরে গিয়েছে। একটি অ্যাপ ক্যাব সংস্থার সিইও মূর্তিকে সমর্থন করে বলেছেন, ওনার কথায় আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। কম সময় কাজ করে বেশি বিলাস করার সময় এটা নয়। অন্যান্য দেশ কয়েক প্রজন্ম থেকে যে কাজ শুরু করে দিয়েছে, সেটা আমাদেরও করতে হবে। এক্স বার্তায় অন্য একজন মূর্তিকে সমর্থন করে লিখেছেন, আমার তো মনে হয় ৭০ ঘণ্টাটাও কম। ২০-৪৫ বছরের যুবসমাজকে সরকারি চাকরির মুখাপেক্ষী হয়ে থাকলে চলবে না। দিনরাত খেটে অন্যকে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার ঝুঁকি নিতে হবে।
অন্যদিকে, নারায়ণ মূর্তির কথাকে উড়িয়ে দিয়েও অনেকে পোস্ট করেছেন। একজন লিখেছেন, উনি যা বলেছেন তাকে সিরিয়াস হিসেবে না গ্রহণ করলেই হল। ভুলে যাও, উপেক্ষা করো। আনন্দ উপভোগ করো। অন্য আর একজনের মতে, কঠিন পরিশ্রম অত্যন্ত জরুরি। তেমনই কাজ আর নিজের জীবনের মধ্যেও ভারসাম্য রেখে চলা উচিত। এর সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য, কর্মচারীর স্বাস্থ্য ও ভালো থাকা, কাজের মানের দিকেও নজর দিতে হবে। শুধু উৎপাদনশীলতার দিকে নজর দিলেই ভারসাম্য বজায় থাকবে না।
দেখুন অন্য় খবর