নামখানা: বয়স বা নবীন-প্রবীণ বিতর্ক কিছুতেই তৃণমূলের পিছু ছাড়ছে না। রবিবার পৈলানে তৃণমূলের এক সভায় ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) নবীনদের পক্ষেই কথা বলেন। নিজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, আমার বয়স এখন ৩৬। আমি দুমাস রাস্তায় ছিলাম। আমার বয়স ৭০ হলে কি সেটা পারব? ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সোমবার সাগরে এক প্রশাসনিক সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বলেন, ৬০ বছর হলেই কাউকে বিদায় দিতে হবে বলে আমি বিশ্বাস করি না। অবসরপ্রাপ্ত আমলাদের অভিজ্ঞতাকে অনেক কাজে লাগানো যায়। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এদিন প্রশাসনিক সভার মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী দলকে ফের বার্তা দিলেন।
নবীনদের হয়ে অভিষেক-সহ দলের যে সব নেতা সওয়াল করে চলেছেন, মমতা বুঝিয়ে দিলেন, তাঁদের সঙ্গে তিনি একমত নন। পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। মমতা যখন এসব বলছেন, তখন মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের সদ্য অবসর নেওয়া মুখ্যসচিব, বর্তমানে রাজ্য সরকারের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, প্রাক্তন আর এক মুখ্যসচিব এবং বর্তমানে মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। অবসরের পর এই দুজনেরই পুনর্বাসন নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন। রবিবার ব্রিগেড ময়দানে দলের যুব সমাবেশে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছিলেন, শিক্ষিত বেকারদের চাকরি হচ্ছে না রাজ্যে। তাঁরা চাকরির দাবিতে রাস্তায় বসে রয়েছেন। আর বছরের পর বছর অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস, আইএএস অফিসারদের রাজ্য সরকার পুনর্বাসন দিয়ে চলেছে। রাজ্যে ৬ লক্ষ সরকারি কর্মীর পদ শূন্য পড়ে আছে।
আরও পড়ুন: গঙ্গাসাগর মেলাকে মর্যাদা দেয় না কেন্দ্র, তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
গত ১ জানুয়ারি দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে নবীন-প্রবীণ বিতর্ক সামনে আনেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি। তিনি বলেন, আগামী লোকসভা ভোটে যদি লড়াই করেন, তবে অভিষেক নিশ্চয়ই ময়দান ছেড়ে পিছিয়ে আসবেন না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই তিনি লড়াই করবেন। সঙ্গে সঙ্গে আসরে নেমে পড়েন অধুনা অভিষেক ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, রাজ্য সভাপতির গলায় অভিষেকের পিছিয়ে পড়া শব্দ নিয়ে আমার আপত্তি আছে। অভিষেকের পিছিয়ে আসার কথা আসছে কেন। তিনি তো সামনে থেকে লড়াই দিচ্ছেন। গত ছদিন চুপই ছিলেন অভিষেক। রবিবার পৈলানে তিনি বলেন, আমি এখন যে কাজ করতে পারছি, বয়স বাড়লে সেটা করতে পারব না। সেটাই স্বাভাবিক।
তৃণমূল সরকার তাদের তিন দফার শাসনে বহু সরকারি অফিসারকে অবসরের পর পুনর্নিয়োগ করেছে। সেখানে নতুন নিয়োগ বন্ধ। তা নিয়ে বিরোধী নেতারা প্রায়ই মমতা সরকারকে নিশানা করেন। রাজনৈতিক মহলের মতে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী নিজের দলকে এবং বিরোধীদেরও বার্তা দিলেন পুরনোদের মর্যাদা দেওয়ার ইস্যুতে।
আরও অন্য খবর দেখুন