কলকাতা: ইউনূসকে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানালেন শাহবাজ শরিফ (Shehbaz Sharif)। হাসিনা সরকারের পতনের পর ইসলামাবাদ ও ঢাকার সম্পর্কের মধ্যেই বদল এসেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালা বদলের পরই বাংলাদেশের (Bangladesh) উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তান কৌশত গত ভাবে বন্ধুত্বের (Paksitan) হাত বাড়াতে শুরু করেছে। আভাস পাওয়া যাচ্ছে সম্পর্কের নতুন রসায়নের। শত্রুতা ভুলে কাছাকাছি আসতে চাইছে বাংলাদেশ এবং পাকিস্তান। এবার ইউনূসকে তাঁর সুবিধা মতো সময়ে পাকিস্তান সফরের আমন্ত্রণ জানান শাহবাজ শরিফ। অন্য দিকে, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ সফরে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী ইসহাক দারকে।
পাকিস্তানের সঙ্গে নতুন সম্পর্ক চাইছে ইউনূসের। একাত্তরের সমস্যাও মেটাতে চাইছে ইউনূস। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের দায়িত্ব নেওয়ার পরে একে অপরের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে থাকার অবস্থান থেকে সরে এসেছে দুই দেশই। ইউনূস (Md Yunus) এবং শাহবাজ উভয়েই এই বৈঠকের ছবি স্যোশাল মিডিয়ায় পোস্ট করা হয়েছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য প্রসারে আলোচনা হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জোরদার করার লক্ষ্য নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য, খেলাধুলা এবং সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদলের মত বিনিময় বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হয়েছেন ইউনূস এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
দুই দেশের মধ্যে ভিসা ব্যবস্থা সহজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানিদের ভর্তি হওয়া নিয়ে যে বাধা ছিল তাও তুলে দেওয়া হয়েছে। পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে আবার সরাসরি আসছে পণ্যবোঝাই জাহাজ। ইউনূসের প্রেস উইং থেকে জানানো হয়েছে, যাতে ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক এগিয়ে যেতে পারে সেই জন্য ১৯৭১ সালের বিষয়গুলির নিষ্পত্তি করার আহ্বান জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। ওই বৈঠকে শরিফ জানান, দুই দেশের মধ্যে যদি কোনও অমিমাংসিত ইস্যু থাকে তাহলে সেগুলি মেটাতে উদ্যোগী হবেন তিনি।
আরও পড়ুন: এবার পাকিস্তানের ধাঁচে শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশে!
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়াই করেই স্বাধীনতা এসেছে বাংলাদেশের। ভাষা আন্দোলনে শহিদের রক্তে রাঙা বাংলাদেশের রাজপথ। বাংলাদেশ এতদিন পাকিস্তানকে নিজেদের শত্র পক্ষ বলে মানত। ভারতের সঙ্গে ছিল বন্ধুত্ব। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতেরও সম্পর্ক খুব একটা মধুর জায়গায় নেই। হাসিনার সরকারের পতনের পদ্মাপারের আশান্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। পর বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশে যে ঘটনাগুলি ঘটেছে , তার পিছনে কি বিরোধী শক্তি, বিশেষ করে পাকিস্তানের কোনও যোগ রয়েছে?মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এখন বাংলাদেশ জুড়ে বাড়ছে ভারত-বিদ্বেষ। পাকিস্তানের সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক মসৃন করতে চাইছে বাংলাদেশ। ইউনূস ক্ষমতায় বসার পরেই এই সম্পর্ক গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তাঁকে অভিনন্দন বার্তা পাঠিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। যে ভাষার জন্য এত আন্দোলন, রক্ত ঝরল ভাইবোনেদের তা আজ সবই ফিকে। পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক যোগসূত্র বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল বাংলাদেশের অগ্রণী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নিয়ামক কমিটি সিন্ডেকেট। একইসঙ্গে এবার থেকে বাংলাদেশ-পাকিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ছাত্র ভর্তি সংক্রান্তও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অন্য খবর দেখুন