ওয়াশিংটন: আর কিউ ফোর গ্লোবাল হক- একটি মানববিহীন বিমান। মার্কিন বায়ুসেনা ও নৌসেনা এই ড্রোন ব্যবহার করে বিভিন্ন গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং বিশেষ কিছু মিশনের জন্য। গ্লোবাল হক বিশ্বের যেকোনও পরিস্থিতির মাঝে দাঁড়িয়েও মার্কিন সেনাকে সব হাঁড়ির খবর পেতে সাহায্য করে। এই ড্রোনটি প্রথম তৈরি করা হয়েছিল ১৯৯৫ সালে। এরপর ২০০১ সালের নভেম্বর থেকে এটিকে বিদেশের অনেক অভিযানে ব্যবহার করা শুরু করে মার্কিন সেনাবাহিনী। আর কিউ ফোর-এর আর-এর অর্থ হল রিকনিসেন্স বা পুনরুদ্ধার; কিউ মানে এটি মানবহীন। গ্লোবাল হক বিশ্বের অন্যান্য ড্রোনের থেকে আলাদা। এতে একটি রোলস রয়েস এই ৩০০৭এইচ টার্বোফ্যান ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়, যা ৭,০৫০ পাউন্ড থ্রাস্ট প্রদান করে। এই ড্রোনের সর্বাধিক গতি ঘন্টায় ৬৫০ কিমি। এটি একটানা ২২,২০০ কিমি পর্যন্ত উড়তে পারে এবং এটি সর্বোচ্চ ৬৫,০০০ ফুট উচ্চতায় উড়তে সক্ষম। ড্রোনটি ২০০০ পাউন্ড পর্যন্ত সরঞ্জাম বহন করতে পারে। অর্থাৎ, যেকোনও শহরের একাংশকে অনায়াসে ধ্বংস করতে পারে এই ড্রোন।
আরও পড়ুন: ইজরায়েল জুড়ে ড্রোনের তান্ডব! দর্পচূর্ণ নেতানিয়াহু’র
পাশাপাশি, এই ড্রোনে বিভিন্ন ধরণের সেন্সর ব্যবহার করা হয়। এতে ইলেক্ট্রো-অপটিকাল, ইনফ্রারেড, এবং সিনথেটিক অ্যাপারচার রাডার থাকে। এছাড়াও, এটি যেকোনও সংকেত এবং ইমেজ থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। এর ব্লক-৩০ মডেলটি একসঙ্গে একাধিক সেন্সর ব্যবহার করে, যেখানে ব্লক-৪০ মডেলটি আরও উন্নত রাডার প্রযুক্তি দিয়ে সজ্জিত। এই দুটি মডেলের ডানা ১৩০ ফুট লম্বা। এটির দাম ২৩৩ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত হতে পারে। মার্কিন সেনার এই ড্রোনটি ২৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে নিরবিচ্ছিন্নভাবে কাজ করতে পারে। এর দীর্ঘ পাল্লা এবং উচ্চ ক্ষমতা এটি যেকোনো পরিস্থিতিতে কার্যকর করে তোলে। এটি বিশ্বের যে কোনো স্থানে রিয়েল টাইম নজরদারি এবং বিশ্লেষণ করতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী ছাড়াও ন্যাটো, দক্ষিণ কোরিয়া, এবং জাপানসহ বিভিন্ন দেশ এটি ব্যবহার করে। ড্রোনটি ২০০১ সালে প্রশান্ত মহাসাগরের উপর একটানা ৮২১৪ মাইল উড়ে বিশ্ব রেকর্ড করেছিল। বর্তমানে এটিকে মার্কিন বায়ুসেনা ও নৌসেনা ব্যবহার করে। তবে মার্কিন নৌসেনার হাতে একটি এমকিউ-ফোর-সি ট্রাইটন নামে একটি মডেল রয়েছে, যা সমুদ্র ও উপকুলে উড়তে পারে। তবে এই ড্রোনের সম্পর্কে এখনও অনেক তথ্য জানা যায়নি। এটাই হয়ত মার্কিন সেনার সিক্রেট স্ট্র্যাটেজি।
দেখুন আরও খবর: