কলকাতা: স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগ নিয়ে কড়া পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত আগের দিনই দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট(SSC Report)। আদালত যে ভুয়ো নিয়োগ(School Service Commission) বাতিলের পক্ষে, সেই অবস্থানও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল। বুধবার এসএসসি গ্রুপ-ডি(SSC Group-D) মামলার রায়ে ৫৭৩ জনের নিয়োগ বাতিলই করে দিল উচ্চ আদালত। সোজা কথায়, স্কুলে নিয়োগ হওয়া ৫৭৩ জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী চাকরি খোওয়াতে চলেছেন(WBSSC Recruitment Controversy)। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চ এদিন এই মর্মে রায় ঘোষণা করেন।
এদিন রায় ঘোষণার সময় বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে কাউকে চাকরি দেওয়া বেআইনি। গ্রুপ-ডি নিয়োগ অনিয়মে ভরা। বেআইনি ও দুর্নীতিতে ঢাকা। কারণ, জনগণের করের টাকায় এই নিযুক্তদের এতদিন বেতন হয়েছে।’
নিয়োগ বাতিল হওয়ার পর, ওই কর্মীদের কাছ থেকে এতদিনের বেতনের টাকা কী ভাবে পুনরুদ্ধার করা হবে, সেই দায়িত্ব জেলা স্কুল পরিদর্শকে দিয়েছে আদালত। সেইসঙ্গেই প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিত বাগের কমিটিকে এদিন নির্দেশ দেওয়া হয়, তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে ১৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে রিপোর্ট দিতে।
মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে স্কুলে চতুর্থ শ্রেণির কর্মী নিয়োগের অভিযোগ ওঠায়, কাঠগড়ায় উঠতে হয় এসএসসিকে। এসএসসিকে তলব করে হাইকোর্ট। অভিযোগ ছিল, এসএসসি-র সুপারিশেই মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগ করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Jyotipriyo Mullick: নির্দলদের অস্তিত্ব বিপন্ন, প্রচ্ছন্ন হুঁশিয়ারি জ্যোতিপ্রিয়র
কিন্তু, এসএসসি হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছিল, নিয়োগের ক্ষেত্রে তারা কোনওরকম সুপারিশ করেনি। স্বভাবতই আদালত প্রশ্ন তোলে, এসএসসি সুপারিশ না করে থাকলে, কার সুপারিশে মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল থেকে ভুয়ো নিয়োগ হল?
এ নিয়ে চাপানউতোরের জেরে সুপারিশকারীর সন্ধানে একটি কমিটি গড়ে দেয় হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বে মোট চার সদস্যের টিম গড়া হয়। সমস্ত নথি বিচারবিভাগীয় অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল এসএসসিকে।
আদালত সূত্রে খবর, নারাজোল এএল খান বিদ্যালয়ে ‘ভুয়ো’ চাকরির অভিযোগের প্রেক্ষিতেই কলকাতা হাইকোর্টে প্রথম এই মামলাটি দায়ের হয়েছিল। কেঁচো খুঁজতে গিয়ে শেষ পর্যন্ত কেউটে বেরিয়ে আসে। গ্রুপ ডি পদে একাধিক ভুয়ো নিয়োগের অভিযোগ সামনে আসে। ভুয়ো চাকরিপ্রাপকদের আত্মপক্ষ সমর্থনেরও সুযোগ দিয়েছিল হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন: West Bengal Civic Polls: জলপাইগুড়িতে তৃণমূল-বিক্ষুব্ধদের মনোনয়ন জমায় বাধা পুলিসের
এর আগে এই এসএসসি গ্রুপ-ডি নিয়োগ মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছিল স্কুল সার্ভিস কমিশন। তাদের আর্জি ছিল, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা কেন? প্রয়োজনে অবসরপ্রাপ্ত কোনও বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত হোক। স্কুল সার্ভিস কমিশনের সেই আর্জিতে সাড়া দিয়েই সিবিআই তদন্তের নির্দেশ খারিজ করে, বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।