Monday, September 22, 2025
বাঙালি কাউন্টডাউন
HomeScroll১৩১ বছরের ঐতিহ্যের সাক্ষ্য জলপাইগুড়ি গ্রামীণ দূর্গোৎসব
Jalpaiguri

১৩১ বছরের ঐতিহ্যের সাক্ষ্য জলপাইগুড়ি গ্রামীণ দূর্গোৎসব

১৩১ বছরের ইতিহাসে আলোকিত জলপাইগুড়ি এই গ্রামীণ দূর্গোৎসব!

ওয়েব ডেস্ক : ১৩১ বছর একটি গ্রামীণ পুজোর ক্ষেত্রে সংখ্যাটি শুধু পরিসংখ্যান নয়, বরং এক ঐতিহ্যের সাক্ষ্য, এক সংস্কৃতির ধারক। জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার বানারহাট ব্লকের সাঁকোয়াঝোরা-১ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানপাড়া বটতলা কোরিয়ান ক্লাবের দুর্গোৎসব (Durga Puja) যেন আজও বহন করে সেই অতীতের উত্তরাধিকার।

প্রথম প্রজন্মের হাত ধরে শুরু হওয়া এই পূজা আজ বহু বছর পেরিয়ে দাঁড়িয়েছে গৌরবময় এক ইতিহাসে। বৈদিক রীতি মেনে মহাষষ্ঠীতে পূজার সূচনা হয়। সপ্তমী, অষ্টমীতেও দেবী আরাধনা চলে, তবে গ্রামজুড়ে ভক্তদের ভিড় জমে নবমীতেই। কারণ এই দিনেই দীর্ঘদিনের চল আসা রীতি মেনে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলে মাতৃ আরাধনায় অংশ নেন।

আরও খবর : সাঁকরাইলে দুর্গা পুজো ব্রাহ্মণ নন, করেন লোধা জনজাতির পুরুষরা!

এই পূজা (Durga Puja) শুধু একটি ধর্মীয় আয়োজন নয়, বরং গ্রামীণ সমাজের সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক। গ্রামবাসীর আর্থিক সহযোগিতা, সরকারি অনুদান এবং সর্বোপরি মানুষের ভালোবাসা মিলিয়ে পুজোর চার দিন হয়ে ওঠে এক গ্রামীণ উৎসবের মহোৎসব। ভোগের সুবাসে যেমন ভরে ওঠে গ্রাম, তেমনই সুর, নৃত্য আর লোকসংস্কৃতির আবেশে মেতে ওঠেন প্রত্যেকে। দীর্ঘদিন ধরে পূজার পুরোহিত হিসেবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন ক্লাব সদস্য কৃষ্ণ দেব শর্মা। তাঁর হাত ধরে পূজার শুদ্ধতা ও ঐতিহ্য অটুট থেকেছে। এবারের পুজোর বিশেষ আকর্ষণ প্রতিমা। রাজ্য সরকারের অনুদানে বাজেট বেড়েছে, তাই শিল্পীদের কারুকার্যে ধরা পড়বে ভিন্নমাত্রার শৈল্পিক ছোঁয়া।

ক্লাব সদস্যরা বলেছেন ,“রাজবংশী ঐতিহ্য মেনে বহুকাল ধরে এই পূজা চলে আসছে। আমাদের পূজার বিশেষত্ব হল নবমীর পুষ্পাঞ্জলি—যা পূর্বপুরুষ থেকে চলে আসা রীতি।” প্রবীণ বাসিন্দা ফনিভূষন রায়ের চোখে এই পূজা শুধুই ধর্মীয় উৎসব নয়, বরং ইতিহাসের পুনরুজ্জীবন। তাঁর কথায়, “আমরা ছোটবেলা থেকে দেখেছি এই পূজা গ্রামকে একসূত্রে বেঁধে রাখে। পুজোর দিনে সবার মধ্যে যে মিলনমেলা হয়, সেটাই আমাদের আসল ঐশ্বর্য।”পূজা কমিটির সদস্যরা চাইছেন, এই ঐতিহ্যের সাথে তাল মিলিয়ে নতুন প্রজন্মও যেন ইতিহাসের অংশীদার হয়। তাই প্রতিবছর নতুন ভাবনা আর নতুনত্ব নিয়েই পুজোর আয়োজন করা হয়।”

আজকের দিনে যখন শহুরে আড়ম্বর পুজোর ঝলকানি গ্রামীণ মণ্ডপগুলিকে ছাপিয়ে যেতে চাইছে, তখন প্রধানপাড়া কোরিয়ান ক্লাবের এই দুর্গোৎসব প্রমাণ করছে ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর মানুষের মায়া-ভালোবাসার কাছে আধুনিকতার চাকচিক্যও ম্লান।

আরও খবর :

 

Read More

Latest News