কলকাতা: কলকাতার অন্যতম জনপ্রিয় শপিং মল সাউথ সিটি (South City Mall) বিক্রির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। মার্কিন বিনিয়োগকারী সংস্থা ব্ল্যাকস্টোন প্রায় ৩,৫০০ কোটি টাকা মূল্যে এই মল কেনার চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনায় রয়েছে। যদি এই চুক্তি সফল হয়, তবে এটি হবে কলকাতার ইতিহাসে অন্যতম বড় রিয়েল এস্টেট লেনদেন ।
২০০৮ সালে চালু হওয়া এই বিলাসবহুল শপিং মল পূর্ব ভারতের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ১২.৫ লক্ষ বর্গফুট এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এই মলটিতে রয়েছে ১৫০টিরও বেশি দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের দোকান। ইমামি গ্রুপ, মার্লিন গ্রুপ, পার্ক চেম্বারস গ্রুপ, শ্রাচী গ্রুপ, যুগল কিশোর খেতাবাদ ও রাজেন্দ্র কুমার বাচাওয়াতের মতো রিয়েল এস্টেট সংস্থার কনসোর্টিয়ামের মাধ্যমে এটি তৈরি হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিদিন ৩০-৪০ হাজার এবং প্রতি উইকএন্ডে ৭৫ হাজার থেকে ১.৫ লাখ মানুষের ভিড় হয় এখানে। তবুও কেন এত লাভজনক মল মার্কিন সংস্থার হাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আরও পড়ুন: ভূতুড়ে ভোটার বিতর্কে জরুরি বৈঠক, পূর্ব মেদিনীপুর-মালদার নেতাদের তোপ অভিষেকের
বর্তমানে সাউথ সিটি মল বছরে ১,৮০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন করে। বিশাল পার্কিং সুবিধা রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে ১,২৫০টি গাড়ি রাখা সম্ভব। সূত্রের খবর, বর্তমান ডেভলাপারদের কনসোর্টিয়াম ইতিমধ্যেই ব্ল্যাকস্টোনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছে। এখন চলছে সম্পত্তির আর্থিক ও আইনি যাচাই। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী ১৫ দিন থেকে ২ মাসের মধ্যেই চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে।
ব্ল্যাকস্টোন ইতিমধ্যেই ভারতের ১৪টি শহরে ১৮টি শপিং মল পরিচালনা করছে। তবে কলকাতার বাজারে এটাই হবে তাদের প্রথম বড় বিনিয়োগ। ভারতের অফিস স্পেস ও হোটেল শিল্পে তারা ইতিমধ্যে ১.৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি বিনিয়োগ করেছে। রিয়েল এস্টেট বিশেষজ্ঞদের মতে, এই চুক্তি সফল হলে, কলকাতার খুচরা বাজারে বড় পরিবর্তন আসতে পারে।
সাম্প্রতিক বছরগুলিতে কলকাতার রিয়েল এস্টেট বাজার দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে, বিশেষত খুচরা ও বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে। শহরের অন্যান্য শপিং মলের তুলনায় সাউথ সিটি মল অধিক লাভজনক ফলে বিশ্ব বিনিয়োগকারীদের নজর কেড়েছে। এই বিনিয়োগের ফলে মলটির ভবিষ্যৎ ব্যবস্থাপনায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে, যা ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কলকাতার বাজারে ব্ল্যাকস্টোনের প্রবেশ নতুন আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের পথ খুলে দিতে পারে। ইতিমধ্যে অন্যান্য বড় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি শহরের শপিং মল ও বাণিজ্যিক সম্পত্তিতে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, চূড়ান্ত পর্যায়ের আলোচনার পর এই বিনিয়োগ চুক্তি সফল হয় কি না। যদি হয়, তবে এটি হবে কলকাতার সবচেয়ে বড় রিয়েল এস্টেট চুক্তি, যা শহরের বাণিজ্যিক পরিসরে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। এবিষয়ে প্রতিক্রিয়া পেতে অন্যতম শেয়ারহোল্ডারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তা করা যায়নি।
দেখুন আরও খবর: