কলকাতা: তৃণমূলের সর্বস্তরীয় নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়েছিল ভূতুড়ে ভোটার বিতর্কের প্রসঙ্গে। কিন্তু সেই বৈঠকেই পূর্ব মেদিনীপুর ও মালদার নেতাদের কার্যত ক্লাস নিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। গত লোকসভা নির্বাচন -এ এই দুই জেলায় দলের বিপর্যয়ের জন্য সরাসরি জেলা নেতৃত্ব, মন্ত্রী, ব্লক ও বুথ সভাপতিদের কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তিনি।
পূর্ব মেদিনীপুরের প্রসঙ্গে অভিষেক বলেন, কাঁথি ও তমলুকে বিজেপি জিতেছে, কিন্তু কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কতগুলো কাজ হয়েছে? মানুষকে প্রশ্ন করতে বলুন। বিজেপি ক্ষমতা প্রয়োগ করে, এজেন্সি ভয় দেখিয়ে ভোট করিয়েছে। কিন্তু এখন প্রশ্ন, বিজেপি-শাসিত তমলুকে কত টাকা কেন্দ্র থেকে এসেছে?
আরও পড়ুন: ‘বাংলার ক্যাপ্টেন’ বিদায় নিচ্ছেন! ডিওয়াইএফআইয়ের পরবর্তী নেতা কে?
এরপরেই শুভেন্দু-গড়ে দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দেন অভিষেক। তাঁর দাবি, কাঁথিতে তৃণমূল আরও জোরালো লড়াই করলে জয় সম্ভব ছিল। কিন্তু দলের ভিতরেই সমন্বয়ের অভাব থাকায় হারতে হয়েছে। বিজেপি সেখানে মিথ্যা প্রচার চালিয়েছে, অথচ দলের নেতা-কর্মীরা তার পালটা দেননি। তাই পূর্ব মেদিনীপুর নিয়ে বিশেষ বৈঠক করার বার্তা দিয়েছেন অভিষেক। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ, ১৬টি বিধানসভার মধ্যে ৯টি আসনে জেতা যথেষ্ট নয়, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে অন্তত ১২টি আসন জিততেই হবে।
মালদার ফলাফল নিয়েও চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন অভিষেক। সেখানে দুটি লোকসভা আসনের মধ্যে একটিতে বিজেপি ও একটিতে কংগ্রেস জিতেছে। অভিষেকের অভিযোগ, বিজেপি ও কংগ্রেসের ভুল তথ্য প্রচারের মোকাবিলা করতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁর কটাক্ষ, অনেকে মন্ত্রী হয়েছেন, পদ পেয়েছেন, কিন্তু ভোটের সময় সক্রিয় হননি। স্পষ্ট বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, যুদ্ধের সময় দলকে ছেড়ে যারা সুবিধাবাদী রাজনীতি করেন, তারা তৃণমূলের কর্মী হতে পারেন না।
সব মিলিয়ে, দলের অন্তর্দ্বন্দ্ব , কৌশলগত ব্যর্থতা এবং নেতৃত্বের নিষ্ক্রিয়তাকেই পূর্ব মেদিনীপুর ও মালদার হারের জন্য দায়ী করেছেন অভিষেক। তবে অতীত ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে শক্তিশালী হয়ে লড়াইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
দেখুন আরও খবর: