ইনভেস্টরদের সঙ্গে ইস্ট বেঙ্গলের কর্তাদের চূড়ান্ত মতানৈক্যর জন্য সামনের আই এস এল-এ লাল হলুদের টিম গড়া বিশ বাঁও জলে। সেই সমস্যা মেটাতে এবার আসরে নামলেন ইস্ট বেঙ্গলের প্রাক্তন ফুটবলাররা। সোমবার ক্লাবে প্রাক্তন ফুটবলাদের সভায় হাজির ছিলেন ছাপ্পান্নজন ফুটবলার। প্রায় দু ঘণ্টার সভার মূল সুর ছিল, ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্ট ক্লাবের সঙ্গে এগ্রিমেন্টের যে সব শর্ত দিয়েছেন তা মানা সম্ভব নয়। এতে শুধু সদস্য, সমর্থকদেরই নয়, ক্লাবের স্বার্থও ক্ষুন্ন হবে। প্রাক্তনদের বক্তব্য ইনভেস্টর শ্রী সিমেন্টস তো এসেছে ক্লাবের ফুটবল দল গড়া এবং তা চালানোর জন্য। এর সঙ্গে ক্লাবের স্থায়ী সম্পত্তির মালিকানার কী সম্পর্ক? ফুটবল দল চালাতে গেলে তো সম্পত্তির মালিক হওয়ার দরকার নেই। ইনভেস্টরদের শর্তে এই মালিকানার বিষয়গুলি আছে যা কোনও ভাবেই মানা সম্ভব নয়।
এর আগে গত তেইশে জুলাই ইস্ট বেঙ্গলের দুই প্রাক্তন অধিনায়ক সুকুমার সমাজপতি ও চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় ক্লাবের কার্যকরী কমিটির সভায় উপস্থিত হয়ে তাঁদের যে বক্তব্য জানিয়েছিলেন তাতেই মোটামুটি শীলমোহর দিলেন বাকি প্রাক্তনরা। সুকুমার-চন্দনের প্রস্তাবই ছিল বাকি প্রাক্তনদের ডেকে তাদের মতামত নেওয়ার। সেই মতো এদিন জড়ো হয়েছিলেন এক ঝাঁক ফুটবলার, যাঁদের বেশরি ভাগই ক্লাবের প্রাক্তন অধিনায়ক। সুকুমার-চন্দনের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সুভাষ ভৌমিক, ভাষ্কর গাঙ্গুলি, প্রশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়, বিকাশ পাঁজি, দীপেন্দু বিশ্বাস, মেহতাব হোসেন, সৈয়দ রহিম নবি, মিহির বসু, সুমিত মুখার্জি, শ্যামল ঘোষ, স্বরূপ দাস, অলক মুখার্জি, অতনু ভট্টাচার্য, রঞ্জিত মুখার্জি, কবীর বসু, দেবাশিস মুখার্জি, কৃষ্ণেন্দু রায় প্রমুখ। ক্লাবের পক্ষ থেকে সভায় উপস্থিত ছিলেন দেবব্রত সরকার এবং রাজা গুহ। এদিন ছিল ২৬ জুলাই। আঠেরো বছর আগে এই দিনে ইস্ট বেঙ্গল আসিয়ান কাপ জিতেছিল জাকার্তায়। তাই ক্লাব তাঁবুর মধ্যে সভায় শোভা পাচ্ছিল সুদৃশ্য আসিয়ান কাপটি।
সভার শেষে সুকুমার সমাজপতি বলেন, “আমাদের ক্লাবের প্রাক্তনরা আজ একটা ব্যাপারে ঐক্যমত্য হয়েছে ইনভেস্টদের দেওয়া এগ্রিমেন্টে ক্লাবের পক্ষে সই করা সম্ভব নয়। আমরাও তিন দিন আগে এই রকমই ভেবেছিলাম। আজ সেটাই সবাই বলল। এর পর ক্লাবের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সময় চাওয়া হবে। উনি সময় দিলে একটা প্রতিনিধি দল যাবে ওনার কাছে। আমাদের মনে হয়েছে একমাত্র উনিই পারেন ক্লাবের এই সঙ্কট মেটাতে। উনিই তো গত বছর এদের এনেছিলেন। এখন যে সমস্যা হয়েছে তা উনি ছাড়া আর কেউ মেটাতে পারবেন না।”
এদিকে ইস্ট বেঙ্গল ক্লাব এবং তার প্রাক্তন ফুটবলারদের এ সব উদ্যোগের পাশাপাশি এফ এস ডি এল থেকেও ইনভেস্টরদের দেওয়া টার্ম শিট এবং এগ্রিমেন্টের কপি চেয়ে নেওয়া হয়েছে। দুটো ডকুমেন্টস খতিয়ে দেখছে তারাও। এর সঙ্গে যদি মুখ্যমন্ত্রী যদি শেষ পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করেন তাহলে মনে হচ্ছে দেরিতে হলেও সমস্যা মিটতে চলেছে।