ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪২-৭ (২০ ওভারে)
বাংলাদেশ ১৩৯-৫ (২০ ওভারে)
শেষ পর্যন্ত এবারের বিশ্ব কাপে জয়ের মুখ দেখল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। শুক্রবার শারজায় এক নম্বর গ্রুপের ম্যাচে নাটকীয়ভাবে জিতল দুবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। শেষ বলে জেতার জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ৪ রান। ব্যাট করছেন অধিনায়ক মামুদুল্লাহ। আর বল হাতে আন্দ্রে রাসেল। কিন্তু রাসেলের স্লোয়ার ডেলিভারিটি ব্যাটের সঙ্গে লাগাতেই পারলেন না অধিনায়ক। ৩ রানে ম্যাচটা জিতে গেল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। টস জিতে বাংলাদেশ ফিল্ডিং নেয়। ক্যারিবিয়ানদের নিকোলাস পুরানের ২২ বলে ৪০,রস্টন চেজের ৪৬ বলে ৩৯ এবং জেসন হোল্ডারের ৫ বলে অপরাজিত ১৫ রানের সাহায্যে ওয়েস্ট ইন্ডিজ কুড়ি ওভারে ১৪২ রান তুলতে পেরেছিল। জবাবে বাংলাদেশ এক সময় ভালভাবে রান তাড়া করতে পারলেও শেষ দিকে খেই হারিয়ে ফেলে। লিটন দাস ৪৩ বলে ৪৪ এবং মামুদুল্লাহ ২৪ বলে অপরাজিত ৩১ করলেও টিমকে জেতাতে পারেননি। মিডল অর্ডারে নেমে সৌম্য সরকারের ১৩ বলে ১৭ তাই কাজে আসেনি। ম্যাচের সেরা ওয়েস্ট ইন্ডিজের নিকোলাস পুরান। আর পর পর তিনটে ম্যাচ হেরে এবারের মতো টি টোয়েন্টি বিশ্ব কাপ থেকে বিদায় নিল বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে শ্রী লঙ্কার কাছে হারের পর বাকি দুটি ম্যাচে তারা হেরে গেল ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে।
ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ৫৫ রানে অল আউট হয়ে গিয়ে প্রথম ম্যাচেই বিশ্রি হারের মুখে পড়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের ম্যচে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছেও আট উইকেটে হেরে যায় ক্যারিবিয়ানরা। পর পর দুটো ম্যাচ হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায়ের মুখে চলে গিয়েছিল কায়রন পোলার্ডের দল। এদিন তাই ব্যাটিং অর্ডারে একটু পরিবর্তন করা হয়েছিল। দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে ৩৫ বলে ১৬ রান করা ওপেনার লেন্ডল সিমন্সকে বিশ্রাম দেওয়া হয়। ওপেন করতে নামেন ক্রিস গেল এবং ইভান লুইস। কিন্তু দশ বলে মাত্র ৪ রান করে লেগ স্পিনার মেহেদি হাসানের বলে বোল্ড হয়ে যান গেল। অপর ওপেনার লুইসও নয় বলে ৬ করে মুস্তাফিজুর রহমানের শিকার হয়ে যান। চার নম্বর ব্যাটসম্যান শিমরন হেটমেয়ারও বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। সাত বলে ৯ রান করে তিনি মেহেদি হাসানকে উইকেট দিয়ে দেন। ওদিকে তখন রস্টন চেজ খুবই ভাল ব্যাট করছিলেন। কিন্তু সঙ্গী কায়রন পোলার্ড ১৫ বলে ৮ রান করে অবসর নিয়ে নেন। আন্দ্রে রাসেল প্রথম বলেই রান আউট হয়ে যান। তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থা বেশ সঙ্গিন। এখান থেকে নিকোলাস পুরান এবং রস্টন চেজ টেনে নিয়ে যান তাঁদের দলকে। দুজনে মিলে যোগ করেন ৫৭ রান। এই সময় শরিফুল ইসলামের বলে ফিরে যান পুরান। তাঁর ৪০ রানে একটা বাউন্ডারির সঙ্গে ছিল চারটি ওভারবাউন্ডারি। একই রানে আউট হয়ে যান রস্টন চেজ। তাঁকেও আউট করেন শরিফুল। তাঁর ৩৯ রানে ছিল দুটি বাউন্ডারি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ১১৯-৬। সেই রানটাকেই অনেকটা টেনে দেন জেসন হোল্ডার। একজন প্লেয়ার আহত হয়ে যাওয়ায় হোল্ডার টিমে ঢুকেছেন দু দিন আগে। শেষ পর্যন্ত তাঁর পাঁচ বলে করা অপরাজিত ১৫ রানই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনেকটা এগিয়ে দেয়। শেষ দিকে আবার ব্যাট করতে নেমে শেষ বলে একটি ছয় মেরে আঠেরো বলে ১৪ করে অপরাজিত থাকেন পোলার্ড। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সফল মেহেদি আসান (২-২৭), মুস্তাফিজুর রহমান (২-৪৩) এবং শরিফুল ইসলাম (২-২০)। শাকিব আল হাসান চার ওভারে কুড়ি রান দিয়েও কোনও উইকেট পাননি।
ব্যাট হাতেও শাকিব এদিন ব্যর্থ। ওপেন করতে নেমে করেন বারো বলে ৯ রান। এর পর লিটন দাস ও মামুদুল্লা ছাড়া তেমন বড় রান কেউ পাননি।মহম্মদ নইম (১৭), সৌম্য সরকার (১৭),মহম্মদ রহিম (৮)–টিমকে খুব একটা সাহায্য করতে পারেননি। উনিশতম ওভারের শেষ বলে ছক্কা মারতে গিয়ে একেবারে বাউন্ডারি লাইনের ধারে ধরা পড়েন লিটন। বোলার ছিলেন ডোয়েন ব্রাভো। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ফিল্ডিং ছিল খুবই খারাপ। অনেকগুলো ক্যাচ পড়েছে। রান আউটের চান্স মিস হয়েছে বেশ কয়েকটা। শেষ পর্যন্ত যে তারা জিতল তাতে তাদের কৃতিত্বের চেয়ে বাংলাদেশের ব্যর্থতাই বেশি। তবু বুদ্ধি করে বল করে আন্দ্রে রাসেল শেষ বলে রান নিতে দেননি। জেসন হোল্ডার চার ওভারে ২২ রান দিয়ে একটি উইকেট নিয়েছেন। জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেমিফাইনালে যাওয়া খুব মুশকিলের। এই গ্রূপ থেকে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
বাংলাদেশকে হারিয়ে বিশ্ব কাপে টিকে রইল ওয়েস্ট ইন্ডিজ
Follow Us :