মুম্বই: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের (WTC Final) জন্য ১৫ জনের দল ঘোষণা করল বিসিসিআই (BCCI)। সেই দলের দিকে তাকালেই চোখ আটকে যাবে একটা নামে, অজিঙ্ক্য রাহানে (Ajinkya Rahane)। এই তো মাসখানেক হল সব ধরনের বার্ষিক চুক্তি থেকে বাদ তাঁকে বাদ দিয়েছে ভারতীয় বোর্ড। বার্তাটা পরিষ্কার ছিল, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে আর ভাবা হচ্ছে না। এর মধ্যেই ‘খেলা’ ঘুরে গেল! এতটাই ঘুরল যে সেই ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলা ব্যাটারকে একেবারে ফাইনালে খেলানো হবে।
এখন প্রশ্ন হল, বিসিসিআইয়ের এই উল্টো পথে হাঁটার কারণ কী? কারণ বিবিধ।
প্রথম, পাঁচ নম্বর স্পটে যাঁকে রাহানের উত্তরসূরি মনে করা হয়েছিল সেই শ্রেয়স আইয়ারের (Shreyas Iyer) চোট। তিনি আদৌ বিশ্বকাপ খেলতে পারবেন কি না তার নিশ্চয়তা নেই, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল তো দূরের কথা। এই মুহূর্তে পাঁচ নম্বরে ব্যাট করার মতো আর কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না। অগত্যা বাতিল রাহানেই সই।
দ্বিতীয়, ২০২২-২৩ রঞ্জি (Ranji Trophy) মরশুমে আদৌ আহামরি কিছু পারফর্ম্যান্স ছিল না মুম্বই ব্যাটারের। দুটো সেঞ্চুরি সহ ৫৭.৬৩ গড়ে ৬৩৪ রান করেছেন। মুম্বই নক আউটেই উঠতে পারেনি এবার। ইংল্যান্ডের সুইঙ্গিং কন্ডিশনে শুধু খেলা নয়, রান করার অভিজ্ঞতা আছে রাহানের। সেই অভিজ্ঞতাকেই আঁকড়ে ধরতে চাইছে বিসিসিআই।
আরও পড়ুন: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের দল ঘোষণা বিসিসিআই-র
তৃতীয়, ভারতের দুর্বল ব্যাটিং লাইন আপ। রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), শুভমান গিল, চেতেশ্বর পুজারা এবং বিরাট কোহলি (Virat Kohli), টপ অর্ডারে এই চারজন। কোনও কারণে দ্রুত দু’ তিনটে উইকেট পড়লেই সাংঘাতিক চাপ। ঋষভ পন্থ নেই যে কি না একাই পাল্টা আক্রমণ করে ম্যাচের ছবি পাল্টে দেবে। চাপ সামলানোর জন্যই শুধু রাহানে নয়, কে এল রাহুলকেও জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কে এস ভরতের ভয়াবহ কিপিং দেখার পর কিপার হিসেবেই রাহুলকে নেওয়া হয়েছে। ওপেন করতে নেমে ব্যর্থ হয়েছেন, যদি মিডল অর্ডারে কিছুটা রান করতে পারেন।
খানিকটা ‘অদ্ভুত’ হলেও চতুর্থ কারণ অবশ্যই রাহানের আইপিএল ফর্ম। অবিশ্বাস্য বললেও কম বলা হবে। যাঁকে সাদা বলের ফর্ম্যাট থেকে বহুদিন আগে ছাঁটাই করেছিলেন জাতীয় নির্বাচকরা তিনি কোন জাদুকাঠির ছোঁয়ায় এমন বিধ্বংসী হয়ে উঠলেন তা গবেষণার বিষয়বস্তু হওয়া উচিত। কেকেআরের বিরুদ্ধে আগের দিন ২৯ বলে ৭১ করেছেন। তার আগেও পরপর মারকাটারি ব্যাটিং করেছেন।
তবে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। আইপিএলের ফর্ম কি টেস্ট ক্রিকেটে সুযোগ পাওয়ার মাপকাঠি? তা যদি হয় তবে তো সর্বনাশ। রঞ্জি ট্রফির যৌক্তিকতা তাহলে থাকল কোথায়?