কাকদ্বীপ: এবার খুন হলেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের ভাইপো। ঘটনা কাকদ্বীপের মধুসূদনপুর (Kakdwip Madhusudanpur) গ্রাম পঞ্চায়েতের রামতনুনগরে। রাজনৈতিক কারণেই এই খুন বলে দাবি নিহতর কাকা মধুসূদনপুর পঞ্চায়েতের সদস্য সালাউদ্দিন শেখ এবং জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা রিনা দাসের। বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বেশ কিছুটা দূরে ফাঁকা মাঠে মধু ওরফে রাকিব শেখের ক্ষতবিক্ষত দেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর মাথার দিক মাঠের মাঝখানে মাটিতে গোঁজা ছিল। রাকিবের মাথায় একাধিক ধারালো অস্ত্রের কোপও রয়েছে। স্থানীয়রা খবর দেন হারুউড পয়েন্ট উপকূল থানার পুলিশে (Harwood Point Coastal Police Station)। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় পুলিশ।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে খবর, বুধবার বিকেলে ভূতোমোল্লার পোল বাজারে যাবেন বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন রাকিব। রাত ৮ টা নাগাদ এলাকায় ফিরে এসে তিনি একটি চায়ের দোকানে বসে ছিলেন। তারপর থেকে তাঁর আর কোনও খোঁজ ছিল না। রাতে বাড়িও ফেরেননি। পরিবারের লোকজনেরা খোঁজ নিয়েও কোথাও কোনও হদিশ পাননি। রাকিবের কাকা সালাউদ্দিন শেখ ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য।
গত কয়েক মাস আগে মধুসূদন পুর গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের (Trinamool) দুই গোষ্ঠী, রিনা দাসের গোষ্ঠী এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা দেবাশীষ দাসের গোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক গন্ডগোল ও মারামারি হয়। ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজও সামনে আসে। সেই সময় ওই গন্ডগোলকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সদস্যা রিনা দাস সুন্দরবন সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি দেবাশীষ দাসের গোষ্ঠীর দিকে আঙ্গুল তুলেছিলেন। ঘটনায় দুই পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে থানাতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিলেন।
আরও পড়ুন: দিল্লিতে বাংলাদেশি সন্দেহে আটক নবদ্বীপের ২ পরিযায়ী শ্রমিক
গত কয়েক মাস আগে মধুসূদনপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটে যাওয়া তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যেকার গন্ডগোলের জেরেই এই খুন বলে অনুমান জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্যা রিনা দাস এবং নিহত রাকিবের কাকা তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য সালাউদ্দিন শেখের। তাঁর অভিযোগ, এর আগেও বহুবার এলাকায় সন্ত্রাস পরিস্থিতি তৈরি করেছে এই সকল দুষ্কৃতীরা। একাধিকবার তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বাড়ির সামনে বোমাবাজিও করা হয়েছিল।
এ বিষয়ে তিনি দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃত্ব থেকে শুরু করে স্থানীয় থানায় অভিযোগও করেছিলেন। তারপরেই নৃশংসভাবে খুন হতে হল তার নিজেরই ভাইপো রাকিব শেখকে। সালাউদ্দিনের আরও অভিযোগ, যে দুষ্কৃতীরা দিনের পর দিন মধুসূদনপুর পঞ্চায়েতে ভাঙচুর এবং মারধরের ঘটনা ঘটাচ্ছে, তাঁকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে সেই দুষ্কৃতীরা নিজেদেরকে তৃণমূল কর্মী হিসেবে দাবি করেছিল। ওই দুষ্কৃতীদের মুখে তৃণমূলের একাধিক নেতৃত্বদের নামও শোনা গিয়েছে। ঘটনাস্থলে মোতায়ন রয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। তাঁরা এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় লিখিত অভিযোগও দায়ের করা হবে। নিহত রাকিবের দেহ উদ্ধার করে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ।
দেখুন অন্য খবর