কাতার: বিশ্বকাপের World Cup) প্রায় ৯২ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার সেমিফাইনালে উঠল কোনও আফ্রিকান (Africa) দেশ। এই অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে মরক্কো (Morocco)। আশরাফ হাকিমি (Achraf Hakimi), হাকিম জিয়েশ (Hakim Ziyech), রোমা সাইসদের জন্য কোনও প্রশংসাই যথেষ্ট নয়। গোটা আফ্রিকা মহাদেশের গর্ব অ্যাটলাস লায়নরা। ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে উঠতে পারুক বা না পারুক, ইতিমধ্যেই বিপ্লব ঘটিয়েছে তারা।
কী সেই বিপ্লব?
প্রথমেই একটা বিষয়ের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করি। এই বিশ্বকাপে খেলা ইউরোপের দেশগুলোর ফুটবলারদের লক্ষ করেছেন কি? প্রতিটি দলেই রয়েছেন একাধিক কৃষ্ণাঙ্গ প্লেয়ার। তাঁদের অনেকেই দলের অন্যতম সেরা তারকা। ফ্রান্সের (France) কিলিয়ান এমবাপের (Kylian Mbappe) কথাই ধরুন, কিংবা ইংল্যান্ডের (England) মার্কাস র্যা শফোর্ড (Marcus Rashford)। এমনকী জার্মানিতেও রয়েছেন একজন অ্যান্টনিও রুডিগার। উদাহরণ দিতে গেলে শেষ করা যাবে না। এঁরা সবাই আসলে আফ্রিকা মহাদেশের মানুষ।
আরও পড়ুন: Qatar World Cup: এই পেনাল্টি মিস হ্যারি কেনকে তাড়া করবে আজীবন, বলছেন প্রাক্তন তারকা
আফ্রিকার দেশগুলোর দৈন্যদশার কথা কারও অজানা নয়। সিংহভাগ মানুষের দু’ বেলা খাবার জোটে না। তাঁদের অনেকেই ভাগ্য অন্বেষণে চলে আসেন ইউরোপে। সংশ্লিষ্ট দেশের নাগরিকত্ব পেয়ে আজ তাঁরা তাদের হয়ে খেলছেন। র্যা শফোর্ড, সাকা, এমবাপে, স্টার্লিং এবং এরকম হাজারো ফুটবলারের নাম করা যায়। শারীরিক সক্ষমতা রয়েছে আফ্রিকার মানুষের যা ফুটবলে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনেকের মধ্যেই রয়েছে সহজাত প্রতিভা। তার দাম পেতে হলে ইউরোপই ভরসা।
বাধ্য হয়ে ফ্রান্স, ইংল্যান্ড, ইতালি, জার্মানিতে চলে আসছেন তাঁরা। সেখানকার লিগে খেলছেন, নাগরিকত্ব নিয়ে ফেলছেন। দুই ভাইয়ের একজন ইউরোপের এবং আর একজন আফ্রিকার নাগরিক, ফুটবলে এই নিদর্শন আকছার। উদাহরণ চান, পল পোগবা ফ্রান্সের নাগরিক এবং তাঁর ভাই, আমাদের মোহনবাগানে খেলা ফ্লোরেন্তিন পোগবা গিনির বাসিন্দা।
কিন্তু আশরাফ হাকিমি, হাকিম জিয়েশদের মতো কেউ কেউ দেশ ছাড়েননি। তাঁরা ইউরোপের ক্লাবে খেলছেন ঠিকই কিন্তু নাগরিক আফ্রিকারই। আফ্রিকায় থেকেই, কম সুযোগ সুবিধা নিয়েই সাফল্য অর্জন করেছেন তাঁরা। যা আজ চোখ ভরে দেখছে প্রাণভরে উপভোগ করছে আফ্রিকার প্রতিটি মানুষ। তারা উদ্বুদ্ধ, অনুপ্রাণিত, স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। আফ্রিকার হয়েই যে বিশ্বমঞ্চে কামাল করা যায় তা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে।