কলকাতা: শিশিরের অধিকার কার? তৃণমূল না বিজেপির- বিতর্কটা বাড়ছিল বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই। খাতায় কলমে তৃণমূলের সাংসদ শিশির অধিকারী। বছর খানেকের বেশি সময় ধরে নিষ্ক্রিয়। দেখা যায় না দলের কোনও কর্মসূচিতে। উল্টে ভোটের আগে বিজেপির কর্মসূচিতে ছেলের বউকে সঙ্গে নিয়ে মঞ্চে দেখা গিয়েছেন।
কাঁথির এই তৃণমূল সাংসদের এহেন অবস্থানের পরই তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি তোলে তৃণমূল। বঙ্গে বিধানসভা ভোটের পর দু-দফায় লোকসভার অধ্যক্ষ ওম বিড়লার কাছে চিঠি দিয়েছিলেন দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এমনকি ব্যক্তিগতভাবে সাক্ষাৎ করেও এই দাবি জানিয়েছিলেন। শিশিরের পাশাপাশি সেসময় সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজেরও দাবি তুলেছিল তৃণমূল। প্রায় ৮-৯ মাস চুপ থাকার পর ফের শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের দাবি জোরাল করল ঘাসফুল শিবির।
আর তৃণমূলের এই দাবির পর বিষয়টি নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ রিপোর্ট এবং তদন্তের নির্দেশ দিয়ে প্রিভিলেজ কমিটির কাছে পাঠালেন স্পিকার। সংসদ সূত্রে খবর, প্রিভিলেজ কমিটি পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে স্পিকারের দফতরে রিপোর্ট পেশ করবে। তারপরই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন অধ্যক্ষ।
আরও পড়ুন: শিশিরবাবুর সাংসদ পদ খারিজের প্রশ্নে মুখে কুলুপ শুভেন্দুর
শিশির অধিকারীর ছেলে তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যোগদানের পরই তৃণমূল-অধিকারী পরিবারের সম্পর্কের সমীকরণ পাল্টে যায়। শুভেন্দু প্রকাশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণ হানতে শুরু করেন। শিশিরও মুখ খোলেন মমতা এবং তৃণমূলের বিরুদ্ধে।
দলের বা সংসদের কোনও কর্মসূচিতে গত এক বছরের বেশি সময় দেখা যায়নি শিশিরকে। দূরত্ব যখন বাড়তে শুরু করে, তখন তৃণমূলের একাধিক শীর্ষ নেতা প্রকাশ্যে মুখ খোলেন শিশির অধিকারীর বিরুদ্ধে। এরই মধ্যে শনিবার ফের একবার শিশিরের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলল তৃণমূল।
শিশিরের পাশাপাশি বর্ধমান পূর্বের তৃণমূল সাংসদ সুনীল মণ্ডলের সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলেছিল তৃণমূল। কিন্তু ৬-৭ মাস আগে আচমকা বিজেপি থেকে তৃণমূলে প্রত্যাবর্তন করেন মুকুল রায়। তার পরই মুকুলের বাসভবনে যেতে দেখা যায় সুনীলকে। সুনীল পর্বে আরও পরিবর্তন আসে। কিছুদিন আগে পর্যন্ত যে সুনীল মণ্ডল তৃণমূলের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেন, তিনি তৃণমূলের পক্ষে বলতে শুরু করেন। শনিবার এই পট পরিবর্তনের আরেক ধাপ দেখা গেল। শিশির অধিকারীর সাংসদ পদ খারিজের কথা বলা হলেও সুনীলকে নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি দল।
আরও পড়ুন: শিশিরের বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী আইন নয় কেন? কলকাতা টিভির প্রশ্ন এড়ালেন শুভেন্দু