বেলডাঙা: রাজ্যজুড়ে শাসকদলে ভাঙন অব্যাহত। তবে এবার শুধুমাত্র শাসকদল নয়, বিরোধী দলেও ভাঙন। তৃণমূল (TMC) ও বিজেপি (BJP) ছেড়ে প্রায় ২ হাজার কর্মী-সমর্থকের যোগদান কংগ্রেসে। তাদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দিলেন বহরমপুর কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী (Adhir Ranjan Chowdhury)। বুধবার বিকেলে বেলডাঙ্গা ব্লকের মির্জাপুর এলাকার শিবপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক যোগদান সভার আয়োজন করে কংগ্রেস। ওই সভায় বেলডাঙ্গা ব্লকের দেবকুন্ডু, সুজাপুর, কুমারপুর এবং মির্জাপুরের ১ ও ২ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকা থেকে তৃণমূল ও বিজেপি ছেড়ে প্রায় ২ হাজার কর্মী-সমর্থক কংগ্রেসের যোগদান করেন।
যোগদানকারীদের পক্ষ থেকে বিজেপির প্রাক্তন বুথ সভাপতি রাকেশ কোনাই বলেন, বিজেপির মধ্যেও দুর্নীতি ঢুকে গিয়েছে। ফলে গ্রামের মানুষ অন্য দলকে সমর্থন করতে চাইছে। সে কারণেই তিনি অধীর চৌধুরীর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। অন্যদিকে বেলডাঙ্গা ব্লক কংগ্রেস সভাপতি নাজিমউদ্দিন শেখ বলেন, সাগরদিঘি বিধানসভার উপনির্বাচনের ফলাফল জেলায় প্রভাব ফেলেছে। সে কারণে বেলডাঙ্গার চার-পাঁচটি অঞ্চল থেকে বিজেপি এবং তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন প্রায় আড়াই হাজার কর্মী সমর্থক।
অন্যদিকে এই যোগদানের ব্যাপারে বহরমপুরের কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, জেলায় বিজেপি ও তৃণমূল শেষ হয়ে যাচ্ছে। তাই বিভিন্ন দলের কর্মী সমর্থকেরা কংগ্রেসে যোগ দিচ্ছেন। পঞ্চায়েতে এর প্রভাব বোঝা যাবে।
উল্লেখ্য, পঞ্চায়েত ভোট যতই এগিয়ে আসছে, ততই উত্তাপ বাড়ছে রাজ্য রাজনীতিতে। নিয়োগ দুর্নীতি থেকে আবাস যোজনা দুর্নীতি সবক্ষেত্রেই নাম জড়িয়েছে তৃণমূলের। দলের ইমেজ ঠিক করতে ইতিমধ্যে ময়দানে নেমেছে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ২৫ এপ্রিল থেকে তৃণমূলের নবজোয়ার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামী ২ মাস ধরে জেলায় জেলায় এই জনসভা থেকে গ্রাম বাংলার মানুষের জনমত নিয়ে আগামী নির্বাচনে প্রার্থী বাছাই করবে তৃণমূল। তার নেতৃত্বেই রয়েছেন অভিষেক। বিভিন্ন এলাকায় দেখা যাচ্ছে, অভিষেক সভা ছাড়তেই গণ্ডগোল। ব্যালট বাক্স নিয়ে তৃণমূলের দুপক্ষের মধ্যেই চলছে হাতাহাতি। সেই ছবি প্রায়ই দেখা যাচ্ছে রাজ্যজুড়ে। রাজনৈতিক মহলের মতে, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্ব অনেকটাই এফেক্ট করবে। যদিও এই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব মানতে নারাজ তৃণমূল নেতৃত্ব। তাদের দাবি, নির্বাচনে সবাই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখেই লড়াই করবে। তাই কিছু ভুল বোঝাবুঝি থাকলে তা আলোচনা করে মিটিয়ে নেওয়া হবে বলেও দাবি দলীয় নেতৃত্বের।