জয়রামবাটি: যে এসেছে, যে আসেনি, যে আসছে, যে আসবে সকলের প্রতি ভালোবাসা ও আশীর্বাদ রয়েছে জগজ্জননী মা সারদার (Maa Saradamoni)। তিনি ভক্তদের এই কথাই বলতেন। তাই জয়রামবাটি (Jairambati) মানেই ভক্তদের কাছে এক অন্য আবেগ, অকৃপণ ভক্তি ও শান্তির ঠিকানা। সেই জয়রামবাটির মা সারদার জন্মভিটেতে (Birth Place of Saradamoni) মাতৃমন্দির (Matri Mandir) প্রতিষ্ঠার শতবর্ষ উদযাপন হচ্ছে বিশেষ পূজার্চনা ও নানান আঙ্গিকের অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে। সারদামণির জন্মভিটেতে সেই উৎসবে সকাল থেকে শামিল হয়েছেন অগণিত ভক্ত।
১৯২৩ সালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের উদ্যোগে স্বামী সারদানন্দ মহারাজ জয়রামবাটিতে মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। সারদা মায়ের পুরনো বাড়ি, নতুন বাড়িকে অক্ষত রেখেই যে বাড়িতে মা সারদার জন্ম হয়েছিল, সেই বাড়িতেই গড়ে ওঠে মন্দির। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সেই মাতৃমন্দিরের আকার-আয়তন যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনই মাতৃমন্দিরের কর্মের ব্যাপ্তিও বৃদ্ধি পেতে থাকে। আধ্যাত্মিকতার পাশাপাশি আর্ত ও দুঃস্থের সেবায় জেলা ও জেলার বাইরে দৃষ্টান্ত হয়ে ওঠে মাতৃমন্দির।
আরও পড়ুন: Weather Update | ছিটেফোঁটা বৃষ্টিতে ভিজল তিলোত্তমা, মিলল সাময়িক স্বস্তি
সেই মাতৃমন্দিরের শতবর্ষ উৎসব শুরু হয়েছে। বিশেষ দিনে বিশ্বজননী মা সারদাকেও সুন্দরভাবে সাজানো হয়ছে। মাতৃমন্দির চত্বর ফুলে ফুলে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। সকালে মঙ্গলারতির মধ্য দিয়ে উৎসবের সূচনা হয়। দিনভর বিশেষ পূজাপাঠ, হোম চলবে। সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা জয়রামবাটি গ্রাম প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রায় অংশ নেয় ঢাক, কীর্তন নানান বাদ্যযন্ত্র সহকারে অসংখ্য ভক্ত। দিনভর সানাইবাদন, মায়ের কথা পাঠ, ভক্তিমূলক আলোচনা, ভক্তিগীতি পরিবেশন, যাত্রাপালা সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান রয়েছে। মাতৃমন্দিরের এই শতবর্ষ উৎসবের সাক্ষী হতে সকাল থেকেই বহু মানুষ ও ভক্ত জয়রামবাটিতে এসে উপস্থিত হয়েছেন। মায়ের কাছে এসে এক আলাদা অনুভূতির কথা জানাচ্ছেন ভক্তরা।
১৮৫৩ সালের ২২ ডিসেম্বর সারদামণির জন্ম হয়েছিল। ১৯২০ সালের ২০ জুলাই মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ১৯২৩ সালে অক্ষয় তৃতীয়াতে যে বাড়িতে মা সারদার জন্ম হয়েছিল সেখানেই মাতৃমন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের উদ্যোগে মা সারদার প্রধান সেবক স্বামী সারদানন্দ মহারাজ মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথমে গর্ভগৃহ নির্মাণ করে পটে পুজোপাঠ শুরু হয়। ৩০ বছর পরে কাশী থেকে মা সারদার মূর্তি এনে নাটমন্দির নির্মাণ করা হয়।