কলকাতা: সাধারণতন্ত্র দিবসের ট্যাবলো নিয়ে বিতর্কে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) মঙ্গলবার চিঠি দিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং (Rajnath Singh)। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, আইএনএ ও বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নিয়ে বাংলার তরফে সাধারণতন্ত্র দিবেসের ট্যাবলোর (Tableau of Netaji Subhas Chandra Bose) প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কেন্দ্র তা বাতিল করায়, অসন্তোষ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। রবিবারই তিনি চিঠি দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানান।
মুখ্যমন্ত্রীর সেই চিঠির জবাব প্রধানমন্ত্রী নিজে না দিলেও, প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং সেই প্রেক্ষিতেই মমতাকে চিঠি দিয়েছেন। চিঠিতে বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর তোলা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন রাজনাথ সিং। কিন্তু এই চিঠিতে বাংলার ট্যাবলো বাদ পড়ার কারণ স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা করা নেই।
ট্যাবলো বাদ পড়ার জেরে নেতাজির সম্মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় রাজনাথ সিং চিঠিতে লেখেন, ‘আমি আপনাকে বলতে চাই, দেশের স্বাধীনতার জন্য নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর যোগদান প্রত্যেক ভারতীয়র কাছে অবিস্মরণীয়। সেই ভাবনা থেকে নেতাজির জন্মদিন ২৩ জানুয়ারি দিনটিকে পরাক্রম দিবস হিসাবে ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী।’
আরও পড়ুন: Republic Day 2022: স্বাধীনতার ৭৫ পূর্তির বছরে সাধারণতন্ত্র দিবসের প্যারেডের সময় পিছোল
প্রতিরক্ষা মন্ত্রী উল্লেখ করেন, এতদিন সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হত। নেতাজিকে সম্মান জানাতে চলতি বছর থেকে এই অনুষ্ঠান শুরু হবে ২৩ জানুয়ারি থেকে। সমাপ্তি অনুষ্ঠান ৩০ জানুয়ারি।
নেতাজি নিয়ে বিতর্কে জল ঢালতে রাজনাথ আরও লেখেন, ‘নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ও পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক স্বাধীনতা সংগ্রামীর প্রতি বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কৃতজ্ঞ।’
নেতাজিকে থিম করে বাংলার ট্যাবলো হওয়া সত্ত্বেও তা বাতিল হওয়ায়, কেন্দ্রের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। শুধু বাংলার শাসকদল নয়, কংগ্রেসও কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে। এর প্রেক্ষিতেই রাজনাথ সিং মনে করিয়ে দেন ২০১৬, ২০১৭, ২০১৯ ও ২০২১ সালে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলার ট্যাবলো ছিল। ফলে, কেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হচ্ছে, তা ঠিক নয়।
আরও পড়ুন: PM Modi: দাভোস সম্মেলনে মোদির টেলিপ্রম্পটার স্তব্ধ, তরজা রাজনৈতিক মহলে
কেন্দ্রের তরফে সাফাই গেয়ে রাজনাথ এ-ও উল্লেখ করেন, প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বাছাই কমিটি নানা দিক বিবেচনা করে কোন কোন ট্যাবলো কুচকাওয়াজে থাকবে, তা ঠিক করে। এতে কেন্দ্রের কোনও হস্তক্ষেপ থাকে না। ব্যক্তিগত ভাবে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই চিঠি লিখছেন বলে উল্লেখ করে জানান, এ বার বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি থেকে পাঠানো ২৯টি প্রস্তাবের মধ্যে থেকে ১২টি ট্যাবলো চূড়ান্ত করেছে বাছাই কমিটি।
পশ্চিমবঙ্গের মতোই এ বার বাদ পড়েছে তামিলনাড়ু ও দিল্লির ট্যাবলোও। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ ধরে নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্টালিনও।