কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: সময়টা খারাপ যাচ্ছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের (Boris Johnson)। ২০২০ সালে লকডাউন চলাকালীন ১০ ড্রাউনিং স্ট্রিটে মদের পার্টিতে (Downing Street party) বরিসের অংশ নেওয়াকে নিয়ে জল ক্রমশই ঘোলা হচ্ছে।
গত সপ্তাহেই ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, ওই দিন বাগানে পার্টির কথা তিনি জানতেনই না। বাগানে উপস্থিত কয়েকজন সরকারি অফিসারদের ধন্যবাদ জানাতে গিয়েছিলেন তিনি। ওই অফিসাররা অতিমারির মধ্যেও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করেছিলেন। তাই ধন্যবাদ জানানো হয়েছিল বলে দাবি জনসনের।
এবার হাটে হাড়ি ভেঙে দিয়েছেন এক কালে বরিসের ঘনিষ্ঠ তাঁর প্রাক্তন উপদেষ্টা ডোমিনিক কামিংস (Dominic Cumming)। তিনি প্রকাশ্যেই অভিযোগ জানান্, প্রধানমন্ত্রী মিথ্যে কথা বলে দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করেছেন। জনসনের দাবি ছিল, ওই দিন ড্রাউনিং স্ট্রিটের বাগানে যে বেশ কিছু লোকের জমায়েত হয়েছিল (Party held during a strict lockdown), তা নাকি তিনি বুঝতেই পারেননি। কামিংসকে পালটা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীও। মঙ্গলবার তিনি বলেন, ‘কামিংস ঠিক কথা বলেননি’। নিভৃতবাস থেকে প্রথম জনসমক্ষে বেরিয়ে জনসন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। তিনি পদত্যাগ করবেন কি না প্রশ্ন করা হলে প্রধানমন্ত্রী জবাব এড়িয়ে যান।
এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রাক্তন উপদেষ্টা সরাসরি তাঁকে মিথ্যেবাদী বলায়, ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়ে গিয়েছে। বিরোধী লেবার পার্টি আগেই বরিসের ইস্তফার দাবিতে হইচই ফেলে দিয়েছে। সোমবার নিজের ব্লগে কামিংস দাবি করেন, বাগানে পার্টির আয়োজন করা ঠিক হবে না বলে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে সতর্কও করেছিলেন। কিন্তু তাঁকে বরিস কোনও পাত্তাই দেয়নি।
২০২০ সালের মে মাসে যখন ওই পার্টির আয়োজন করা হয় তখন ব্রিটেনে করোনার হানা ছিল একেবারে তুঙ্গে। সেই সময় কামিংসের সঙ্গে বরিসের সম্পর্কও ছিল অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ। কিন্তু এখন দু’জনের সম্পর্ক দুই মেরুতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবর, সেদিনের পার্টির আয়োজক ছিলেন বরিস জনসনের প্রধান ব্যক্তিগত সচিব মার্টিন রেনল্ডস। নিজের ব্লগে কামিংস আরও দাবি করেছিলেন, তিনি রেনল্ডসকেও পার্টির আয়োজন করতে নিষেধ করেন। রেনল্ডস তাঁকে জানান, দুরত্ববিধি বজায় রেখে পার্টি চললে কোভিড বিধি অমান্য করা হবে না।
আরও পড়ুন- বিশ্বকে কোভিড অতিমারি থেকে মুক্তি দেবে ওমিক্রনই, দাবি EU বিশেষজ্ঞরা
লকডাউন পর্বে ১০ ড্রাউনিং স্ট্রিটে একাধিক বেআইনি জমায়েত হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। তা নিয়ে তদন্তও চলছে। তদন্তের আওতায় পড়ছেন খোদ প্রধানমন্ত্রীও। দুই-এক সপ্তাহের মধ্যেই ওই কমিটির রিপোর্ট জমা দেওয়ার কথা। সব মিলিয়ে বরিস এখন তীব্র সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দাড়িয়ে একজন প্রধানমন্ত্রী অসত্য কথা বললে তাঁর শাস্তি কী হতে পারে তা নিয়ে ব্রিটেনের রাজনীতিতে নানা চর্চা চলছে।