Tuesday, August 5, 2025
HomeScrollAajke | শুভেন্দু জানতেন, লাঠিচার্জ হবে? কেন চলল লাঠি?
Aajke

Aajke | শুভেন্দু জানতেন, লাঠিচার্জ হবে? কেন চলল লাঠি?

কাঁথির খোকাবাবু সবে হাতে একটা গরম ইস্যু পেয়েছেন, তিনি চমকে চোদ্দ, বোমকে বারো

Follow Us :

কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদে থাকাকালীন তিনিই SSC দুর্নীতিতে CBI তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই মামলার শুনানির সময়েই জানিয়েছিলেন সিবিআইয়ের উদ্ধার করা হার্ড ডিস্কে ২০১৬ এসএসসি পরীক্ষার ওএমআর শিট-এর ইমেজ কপি রয়েছে। এমনকী, ওএমআর শিট আদৌ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বা নষ্ট করে দেওয়া হয়েছে কি না সে ব্যাপারেও সন্দিহান তিনি। তারপর কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছিল মামলা। মামলার রায় আসার পরে গত শুক্রবার তিনি সাফ জানিয়েছেন যে এখনও যোগ্য-অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের আলাদা করা সম্ভব। উনিই বিচারপতি থাকাকালীন বলেছিলেন ঢাকি সমেত বিসর্জন দেব, বলেছিলেন প্যানেল বাতিল করে দেব, সব ভুয়ো, চাল-কাঁকড় আলাদা করা যাচ্ছে না! অথচ সেই তিনি বললেন, “এখনও যোগ্য অযোগ্য বাছাই করা সম্ভব। এখন দোষারোপ করার সময় নয়।” তিনিই জানালেন, দিদির কাছে তিনি একটা কমিটি গঠন করে SSC চাকরিহারাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আবেদনও জানিয়েছেন। এবং প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রীর তৈরি করা কমিটিতে তিনি থাকতে রাজি আছেন বলেও জানিয়ে দিয়েছেন এই প্রাক্তন বিচারপতি থেকে রাতারাতি বিজেপি সাংসদ বনে যাওয়া অভিজিৎ গাঙ্গুলি। ঘড়ির পেন্ডুলামের মতো দুলছেন আমাদের বিচারপতি, ওনার দেহরক্ষীদের কাছ থেকে শোনা, উনি নাকি গাড়িতে বসেই পেট্রলের গন্ধ শোঁকেন, আমার এক বন্ধু জানিয়েছেন এটাও নাকি এক ধরনের নেশা। তো কোন দ্রব্যগুণে জানি না, উনি এই দোল দোল দুলুনির খেলা বহুদিন ধরেই খেলেছেন, বামপন্থী হয়েছেন, এক্কেবারে আগমার্কা বাম, তখন এসএফআই ওনাকে চে গ্যেভারার ছোট ভাই বলেই মনে করত, উনি সেটা মনে করিয়েছিলেন, তখন উনি ভেবেছিলেন ওই পথেই ক্রমমুক্তি আসবে সুচেতনা। কিন্তু ক’দিন পরে শূন্যের হিসেব কষে আর নিরাপদ আসনের প্রতিশ্রুতি নিয়েই এপাং ওপাং ঝপাং। এবং এক রাতের ব্যবধানে বিচারপতি থেকে বিজেপি হয়ে যাওয়াএই অভিজিৎ গাঙ্গুলি আমাদের বিচারব্যবস্থার আরও আরও অনেক গভীর অসুখের ইঙ্গিত তুলে ধরেছেন। সেই তিনি জানিয়েছিলেন, এই সমাধান সূত্রেরর জন্যই এমনকী রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে রাজি আছেন, ভাবেননি যে অন্য অনেক প্রশ্ন থাকলেও ব্রাত্য বসু স্ক্রিপ্টটা বোঝেন, ভালোই বোঝেন, উনি জানালেন আমি রাজি, এসো কাজি। এবং সেটা ছিল একটা ট্র্যাপ, গেলেও বিপদ, না গেলেও বিপদ, উনি বোঝেননি, বুঝেছেন ডাডা, কাঁথির খোকাবাবু। বুঝেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব, অতএব তিনিই এই ভুলভাল স্ক্রিপ্টটাকে ঠিক করার প্ল্যান করেছিলেন সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, অভিজিৎ গাঙ্গুলির নাটকের স্ক্রিপ্ট লিখলেন শুভেন্দু অধিকারী?

অভিজিৎ গাঙ্গুলি সাংসদ হওয়ার পর থেকেই বেশ কয়েকবার তাঁর বিভিন্ন কথাবার্তায় দলকে বেকায়দাতে ফেলার পরে তাঁকে নাকি বলা হয়েছিল মুখ বন্ধ রাখতে। কিন্তু ওনার মুখ আর মাথা একসঙ্গেই চলে, উনি ২৬ হাজার চাকরিহারাদের মসিহা হতে চান তাই ক’দিন আগেই যাকে ঢাকি সমেত বিসর্জন দেব বলেছিলেন তাঁকেই বললেন, বলা যাক অনুরোধ করলেন, দিদি, যোগ্য আযোগ্যদের বাছার জন্য কমিটি তৈরি করুন আমিও থাকব।

আরও পড়ুন: Aajke | এই মুহূর্তে তৃণমূলকে কেবল তৃণমূলই হারাতে পারে

কাঁথির খোকাবাবু সবে হাতে একটা গরম ইস্যু পেয়েছেন, তিনি চমকে চোদ্দ, বোমকে বারো, সেটা সামলানোর আগেই বিচারপতি থেকে বিজেপি হওয়া সাংসদ জানিয়ে দিয়েছেন সেই ফরমুলা নিয়ে আলোচনা করতেই তিনি ব্রাত্য বসুর কাছে যাবেন, ব্রাত্য বসুও এই লোপ্পা ক্যাচ ছাড়বেন কেন? উনি জানিয়ে দিলেন এসো কাজি, আমি রাজি। এবার গোটা দল ফাঁপরে। কারণ এই ইস্যুতে একদা আমার নেত্রীকে কাঁথির খোকাবাবু ঠিক সেই সময়েই পূর্ব মেদিনীপুরের রেয়াপাড়ায় একটি সভায় বলছেন, “উনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন। চোর বন্দ্যোপাধ্যায়!” এদিকে ওনার জেলার সাংসদ যাচ্ছেন মীমাংসাসূত্র বার করতে। আবার এক মন্ত্রীকে অভিজিৎ গাঙ্গুলি জানিয়েছেন আসছি, কেবল তাঁকেই বলেননি, উনি আবার মিডিয়া ফ্রেন্ডলি, তাই বেশ কিছু মিডিয়ার লোকজন নিয়েই রওনাও দিয়েছিলেন, তাঁকে নাকি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এসব নৌটঙ্কি বন্ধ করুন, কিন্তু অজুহাতটা কী হবে, তো এই সময়ে পরিত্রাতা শুভেন্দু অধিকারী, ওনার দুটো হাতের থেকেও নাকি অজুহাতটা অনেক বড়, তো উনিই কিছু নির্দেশ পাঠালেন কলকাতায়, কিছুক্ষণের মধ্যেই বেশ কিছু শিক্ষক গিয়ে পৌঁছলেন কসবার ডিআই অফিসে, নির্দেশ কি এসেছিল হাঙ্গামা বাঁধাবার? সে তো জানার উপায় নেই, কিন্তু হাঙ্গামা শুরু হল, যে কোনওভাবে পুলিশকে উত্যক্ত করো, মারো ধরো, এমন একটা কিছু করো যাতে পুলিশ লাঠি চালাতে বাধ্য হয়, এবং প্ল্যানমাফিক ফাঁদে পা দিল কলকাতা পুলিশ, কেবল লাঠি নয়, লাথিও চালালেন। ওদিকে চিত্রনাট্য মাফিক শিক্ষা দফতরের রাস্তা ছেড়ে অভিজিৎবাবু চলে গেছেন এসএসসি অফিসে, এবং নেমেই অভিনয় চালু, লাঠি চলেছে, তাই আমি মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করব না, আমি সরকারি দফতরে যাব না, বিচারপতির জ্ঞানভাণ্ডারে এসএসসি অফিসটা মুরলীধর লেনে বিজেপি সদর দফতরের এক্সটেনশন মনে হয়েছিল। গতকাল কসবা ডিআই অফিসের গোটা হাঙ্গামা ছিল একটা পরিকল্পিত ছক, কেবলমাত্র এক সাংসদের আগডুম বাগডুম কথাবার্তায় পাঁকে পড়ছিল দল, তার থেকে বার করে আনার জন্য একটা দুর্বল, অতি দুর্বল চিত্রনাট্য এসেছিল পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। শিক্ষকরা আজ নয় সেই প্রথম দিন থেকেই রাজনীতির বোড়ে হয়ে ঘুরছেন, কখনও কালো শামলা পরা উকিল, কখনও কাঁথির খোকাবাবু যেরকমভাবে পারছেন তাঁদের আন্দোলনের আগুনে নিজেদের রুটি সেঁকে নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম, কথা নেই বার্তা নেই, যে শিক্ষকদের স্কুলে গিয়ে ক্লাস নিতে বললেন, মুখ্যমন্ত্রী, যাঁদের সাফ জানিয়ে দিলেন যোগ্য প্রার্থীদের একজনেরও চাকরি যাবে না, সেই তাঁরা কার বা কাদের প্ররোচনায় হঠাৎ মারমুখী হয়ে উঠছেন? কেন? এর পেছনে কি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র আছে? কেন অভিজিৎ গাঙ্গুলি শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার আগেই এই বিক্ষোভ মারমুখী হয়ে পড়ল? শুনুন মানুষজন কী বলেছেন।

আজ পর্যন্ত কোনও মুখ্যমন্ত্রীর এই সাহস হয়নি যে অ্যাপারেন্টলি রাজ্য সরকারের কিছু গাফিলতি আর কিছু আমলা মন্ত্রীর দুর্নীতির অভিযোগের পরে ছাঁটাই হওয়া এই বিরাট সংখ্যক শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের মুখোমুখি দাঁড়ানোর। না ত্রিপুরার মানিক সরকার তা পারেননি আর মধ্যপ্রদেশে ব্যাপমের অভিযোগ আসার পর থেকে যাঁদের নাম বেরিয়েছে তাঁরা হয় দুর্ঘটনায় মারা গেছেন, না হলে উবেই গেছেন দুনিয়া থেকে, ভ্যানিশ হয়ে গেছেন। এখানে মুখ্যমন্ত্রী পাশে দাঁড়ানোর কথা বলেছেন, বলেছেন যোগ্যদের চাকরি যাবে না, সেই আশ্বাসের পরেই হঠাৎ করে এই বিক্ষোভ কি অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রাখার জন্য? সেই আগুনে নিজেদের রুটি সেঁকে নেওয়ার জন্য? হ্যাঁ, প্রাথমিক খবর তো সে দিকেই ইঙ্গিত করছে।

RELATED ARTICLES

Most Popular


Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39