skip to content
Friday, July 5, 2024

skip to content
Homeআজকেসেলিম সুজন শমীকেরা ইন্ডিয়া জোটকে এক সুবিধেবাদী জোট বলেই মনে করেন

সেলিম সুজন শমীকেরা ইন্ডিয়া জোটকে এক সুবিধেবাদী জোট বলেই মনে করেন

Follow Us :

এমনিতে গরু হারালে বউকে মা বলে ডাকে অনেকেই। অতএব সেলিম সুজন শমীক আলাদা হতে যাবেন কেন? ওঁদের তো এতদিনের রাজপাট হারিয়েছে, সেই মৌরসিপাট্টা গেছে সময়ের সঙ্গে ভেসে। অতএব কিছু আবোল তাবোল বলার হক তো ওঁদের আছেই। কিন্তু তারও তো একটা সীমা থাকা উচিত, সেই বলার মধ্যেও অন্তত ক্লাস ফোরের বুদ্ধিশুদ্ধি তো থাকা উচিত, তাও কি খুইয়ে ফেলেছেন ওঁরা? এমনিতে রাজ্যজুড়ে সেটিং সেটিং বলে চিল চিৎকার করছেন, করুন। বালু চুরি, কয়লা চুরি, চাকরি চুরি নিয়ে সরব হয়েছেন, হওয়াই তো উচিত, বিধান সভায় না থাকুন রাজ্যে তো আছেন। বিরোধী দল বিরোধিতা তো করবেই আর এমন লোপ্পা ক্যাচ কেউ ফেলে দেয়, দুর্নীতির এমন মাখোমাখো ছবি নিয়ে বিরোধী দল সরব হবে না তো কারা হবে? কিন্তু সেটা বলছেন যতবার তার চেয়েও বেশিবার বলছেন এক সেটিংয়ের কথা, যে সেটিং নাকি গোপনে হয়েছে বিজেপি আর তৃণমূলের, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আর নরেন্দ্র মোদির। প্রতিটা বক্তৃতায়, সাংবাদিক সম্মেলনে, মিছিলে, মিটিংয়ে, গণশক্তির প্রথম পাতায় প্রতিদিন সেই সেটিংয়ের গপ্পো, সেটিংয়ের কথা। বিজেপি তৃণমূল এক হ্যায় ভুলো মাৎ ভুলো মাৎ। আর সেই চেল্লানো দেখলে এক বেচারা গরু হারানো গরুর মালিকের কথা মনে পড়েই যাবে। সেই লাইন ধরেই কমরেড মহম্মদ সেলিম, যিনি রাজ্য সম্পাদক এবং দলের পলিটব্যুরো সদস্য গতকাল ফিসফিস করে নয়, গোপনে নয়, সাংবাদিক সম্মেলন করেই এক তথ্য আমাদের জানিয়েছেন। ইন্ডিয়া জোটকে জোরদার করতে নয়, রাজ্যের প্রাপ্য আদায় করতেও নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লি যাবেন নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে একান্ত বৈঠকে বিজেপির সঙ্গে সমঝোতা আর আসন সমঝোতা করতে। ভাবা যায়, তাবড় সাংবাদিকেরা জানতেই পারেনি এই খবর, কমরেড সেলিম জেনেছেন এবং ফাঁস করে দিয়েছেন এই ষড়যন্ত্রের কথা। হ্যাঁ সপক্ষে কোনও প্রমাণ দেননি তো কী? জানিয়েছেন তো। সেটাই বিষয় আজকে, সেলিম সুজন শমীকেরা ইন্ডিয়া জোটকে এক সুবিধেবাদী জোট বলেই মনে করেন।

কমরেড মহম্মদ সেলিম যা বলেছেন এবং কমরেড শমীক লাহিড়ি সম্পাদক হিসেবে গণশক্তির প্রথম পাতায় যা ছেপে বের করেছেন তা এক সাংঘাতিক অভিযোগ। দেশজুড়ে বিজেপি বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর এক জোট তৈরি হয়েছে। কাউকে ঘাড় ধরে জোর করে জোট করার জন্য আনা হয়নি, প্রত্যেকেই নিজেদের রাজনৈতিক বাধ্যবাধকতা বুঝেই, হিসেব করেই এই জোটে এসেছে। সেই জোটের এক অন্যতম শরিক নাকি আসলে ফিফথ কলামনিস্ট, আসলে গুপ্তচর, ১৯ তারিখে জোটের বৈঠকে যা যা আলোচনা হবে সেটাই নাকি মোদিজিকে জানানোর দায়িত্ব নিয়েই তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ওই মিটিংয়ে যাচ্ছেন।

আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস-তৃণমূল আসন সমঝোতা হচ্ছে

এর আগে কেবল এক গোপন আঁতাঁতের কথা বার বার করে বলতেন এই সেলিম সুজন শমীকরা। এখন এক্কেবারে দিনক্ষণ জানিয়েই এই গোপন বোঝাপড়ার রহস্য ফাঁস করেছেন। আশা করাই যায় ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি মার্কসবাদীর সাধারণ সম্পাদক এই বৈঠকে গিয়েই যাবতীয় প্রমাণ ইত্যাদি সমেত বৈঠকের বাকিদের জানাবেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল দলকে ওই জোট থেকে বহিষ্কার করার আবেদন জানাবেন, না হলে নিজেরা বেরিয়ে আসবেন। এর থেকে আলাদা কিছু হওয়া সম্ভব কি? আপনি জানেন যে কেবল বিশ্বাসঘাতক আছেই নয়, সে এগজ্যাক্টলি কী কী করবে তারও খবর আপনার কাছে আছে। তাহলে তার সঙ্গে জোটে তারপরেও থাকবেন কেন? আর যদি এরপরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল ওই জোটে থাকল এবং সিপিএমও ওই জোটেই থাকল, এমনটাই দেখা যায়, তাহলে কমরেড সেলিম নিশ্চয়ই ব্যাখ্যা করে জানাবেন এই দ্বিচারিতার কারণ কী। কমরেড সেলিম আরও জানিয়েছেন বামপন্থীদের সমর্থন যত বাড়ছে, তত বেশি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। আমরা আমাদের দর্শকদের প্রশ্ন করেছিলাম, কমরেড মহম্মদ সেলিম বলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আসলে বিজেপিরই লোক, ইন্ডিয়া জোটের যাবতীয় খবরাখবর নরেন্দ্র মোদিকে দিতেই দিল্লিতে যাচ্ছেন, ইন্ডিয়া বৈঠকে, এই কথাটা আপনারা কতজন বিশ্বাস করেন?

কমরেড সেলিম যা বলেছেন তা তিনি নিজে বিশ্বাস করেন বলে আমি মনে করি না। উনি ততটা বোকা বা সরল নন, কিন্তু ওঁর এই কথা সিপিএম-এর র‍্যাঙ্ক অ্যান্ড ফাইলের বহু মানুষজন শুনেছেন, বিশ্বাসও করেছেন। অদূর ভবিষ্যতে সেই কিশোর, কিশোরী, যুবক যুবতীরা যাঁরা সদ্য রাজনীতিতে পা দিলেন তাঁরা দেখবেন এতদিন যাঁদের সঙ্গে আঁতাঁত ছিল সেই কংগ্রেস তৃণমূলের হাত ধরছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইন্ডিয়া জোটে অনেক বেশি গুরুত্ব পাচ্ছেন, তখন তাঁরা হতাশ হবেন, তাঁরা দলের নীতি বুঝে উঠতে পারবেন না আর এমনিতেই কমরেড সেলিমের বিশ্বাসযোগ্যতার হাল টলিউড অভিনেতা যশ দাশগুপ্তের চেয়েও কম, সেটা আরও কমবে। শমীক লাহিড়িকে ওই গণশক্তির পাতায় ইন্ডিয়া জোটের খবর লিখেই যেতে হবে, যে জোটে সিপিএমও আছে, তৃণমূলও আছে, কংগ্রেসও আছে। আর আরেকটা ঐতিহাসিক ভুল হয়ে গেছে বলা পর্যন্ত সরকারি বাম মানে সিপিএম-এর এই দ্বিচারিতা ইতিহাসে জায়গা করে নেবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular