এটিকে মোহনবাগান কোচ জুয়ান ফেরান্দোর স্বপ্ন ছিল তাঁর টিম আই এস এল-এর এক নম্বর দল হিসেবে লিগ শিল্ড হাতে তুলবে এবং সামনের বছরের এ এফ সি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলবে। কিন্তু এখন যা অবস্থা তাতে জুয়ানের স্বপ্ন এ বছর অন্তত অধরাই থেকে যাবে। পর পর দুটো ম্যাচে কেরালা ব্লাস্টার্স এবং ওড়িশা এফ সি-র সঙ্গে ড্র করে লিগ টেবলে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে মোহনবাগান। সতেরো ম্যাচে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে তারা এখন আছে তিন নম্বরে। হায়দরাবাদ এবং জামশেদপুরের পরে। এই দুটো দল শেষ ম্যাচগুলোতে বিস্ময়করভাবে ব্যর্থ না হলে মোহনবাগানের পক্ষে এক নম্বর দল হওয়া অসম্ভব।
তবে এখন যেখানে আছে মোহনবাগান সেখান থেকে তারা প্লে অফ-এ খেলতেই পারে। খেলবেও হয়তো। রবিবাসরীয় সন্ধ্যায় ফাতোরদার নেহরু স্টেডিয়ামে তাদের সামনে বেঙ্গালুরু এফ সি। সুনীল ছেত্রীর দল এবার লিগের শুরুর দিকে খুবই খারাপ খেলছিল। তবে লিগের মাঝামাঝি থেকে তারা অনেকটাই গুছিয়ে নিয়েছে। এখন তারা আছে ছয় নম্বরে। আঠারো ম্যাচে ২৬ পয়েন্ট তাদের। প্রথম দিকে সুনীল একেবারেই গোল পাচ্ছিলেন না। প্রথম একাদশ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এখন তিনি অনেকটাই নিজের ফর্ম ফিরে পেয়েছেন। আই এস এল-এ পঞ্চাশতম গোলটাও করে ফেলেছেন। দুই বিদেশি স্ট্রাইকার ব্রাজিলের ক্লেটন সিলভা এবং কঙ্গোর প্রিন্স আইবারা নিয়মিত গোল করছেন। তাই ম্যাচও জিতছে বেঙ্গালুরু। ক্লেটন ইতিমধ্যেই নয়টি গোল করে ফেলেছেন। এদের সঙ্গে সার্থক গোলুই, আশিক কুরিয়ান, উদান্ত সিং, হরমনপ্রীত সিং, এডমন্ড লালরিনডিকা, জয়েশ রানে মিলে বেঙ্গালুরু বেশ ভাল দল। গোলে গুরপ্রীত সিং সান্ধু নির্ভরতার প্রতীক। আর ৩৫ বছর বয়স হলেও সুনীল তো আছেনই।
এই টিমের বিরুদ্ধে মোহনবাগানের জেতা অসম্ভব কিছু নয়। তবে ব্যাপারটা যে খুব সহজেই হবে তাও বলা যায় না। মোহনবাগানের বড় সমস্যা হয়ে গেল রয় কৃষ্ণের লাল কার্ড দেখা। কৃষ্ণ সবে ফিট হয়ে টিমের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু লাল কার্ড দেখে আবার পিছিয়ে পড়লেন। ডেভিড উইলিয়ামসও এখনও চোট থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত নন। তাই জুয়ানের হাতে এখন চার ফুটবলার। ডিফেন্সে তিরি, মাঝ মাঠে জনি কাউকো এবং কার্ল ম্যাকহিউ আর সামনে হুগো বুমো। এদের সঙ্গে প্রীতম কোটাল, সন্দেশ ঝিঙ্গন, শুভাশিস বসু, লেনি রডরিগস, লিস্টন কোলাসো এবং মনবীর সিং মিলে মোহনবাগান এখন বেশ ভাল দল। গোলে অমরিন্দর প্রতিদিনই বেশ উন্নতি করছেন। জুয়ানের টিমের যা ফর্ম তাতে বেঙ্গালুরুকে হারানো খুব কঠিন হবে না। কিন্তু নিজেদের খেলাটা ঠিক মতো খেলতে হবে। বিশেষ করে লিস্টন কোলাসো এবং মনবীর সিং যে ফর্মে খেলছিলেন সেই ফর্মটা ফিরে আসা দরকার। মোহনবাগানের ভাল খেলার পিছনে এদের দুজনের বড় ভূমিকা আছে। এখন দেখার বেঙ্গালুরুর বিরুদ্ধে তাঁরা ঠিমতো জ্বলে উঠতে পারেন কি না।
লিগ চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও মোহনবাগান ফুটবলাররা এখন প্লে অফ-এ যাওয়ার জন্য মরিয়া। বেঙ্গালুরুকে হারাতে পারলে তারা সেই লক্ষ্যে অনেকটাই পৌছে যাবে। তাই শেষ চারে যেতে বেঙ্গালুরুকে হারানোই লিস্টনদের মোটিভেশন। সেই লক্ষ্যে তারা পৌছতে পারেন কি না তাই এখন দেখার।