কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: বগটুই গণহত্যা (Rampurhat Violence:), পেট্রল-ডিজেল ও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির (Petrol-Diesel Price Hike) প্রতিবাদে বামফ্রন্টের ট্রেড ইউনিয়নের (Trade Union All India Strike) ডাকা বনধে (All India Strike) প্রভাব পড়ল বীরভূমের রামপুরহাটে। বনধের সমর্থনে সোমবার রামপুরহাটে মিছিল বের করে সিপিএম। সকাল থেকে বেসরকারি বাস চলছে না। তবে সরকারি বাস চলছে। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কম। বাম সংগঠনের ডাকা দু’দিনের বনধের পাশাপাশি বগটুই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে ১২ ঘণ্টার রামপুরহাট বনধের ডাক দিয়েছে সিপিএম।
কেন্দ্রীয় সরকারের শ্রম আইনের প্রতিবাদে বামেদের ডাকা দু’দিনের ধর্মঘটে সোমবার সকাল থেকে তেমন কোনও প্রভাব পড়েনি আসানসোল শিল্পাঞ্চলে। সোমবার সকাল থেকে বাস চলাচল স্বাভাবিক থাকতে দেখা গেছে। আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ড থেকে দূরপাল্লার বাস-মিনিবাস ও সরকারি বাস অন্যান্য দিনের মতো চলাচল করেছে। জনজীবনও ছিল স্বাভাবিক ছিল।
রানিগঞ্জে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর অটো, টোটো এবং বাস ও মিনিবাস চলাচল করতে বাধা দেয় বনধ সমর্থনকারীরা। এই নিয়ে পুলিসের সঙ্গে বচসা বাধে। পুলিস বনধ সমর্থনকারীদের হটিয়ে দেয়। কোলিয়ারিতেও নিত্যদিনের মতো উপস্থিতির হার ছিল।বনধের সমর্থনে পুরুলিয়া জেলায় মিছিল, পাল্টা মিছিল হল।

সিপিএমের মিছিল ট্যাক্সি স্ট্যান্ড হয়ে সদর হাসপাতাল মোড়ের দিকে যাওয়ার সময় তৃণমূল কংগ্রেসের মিছিলের মুখোমুখি হয়। যদিও স্লোগান, পাল্টা স্লোগানের মধ্যে দিয়েই মিছিল চলে যায়। পুরুলিয়া হেড পোস্ট অফিসের মূল গেট বন্ধ করে বেশ কয়েকজন বনধ সমর্থনকারী বসে ছিলেন। সেই সময় তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীরা জোর করে গেট খুলে দেন। পাশাপাশি স্টেট ব্যাঙ্কের গেটে এসে বিক্ষোভ দেখানো হয়।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড থেকে প্রায় ৬০০ বেসরকারি বাস পরিষেবা দিয়ে থাকে। কিন্তু দুদিনের ধর্মঘটের প্রথম দিনেই রাস্তায় বের হল না বেশিরভাগ বেসরকারি বাস। সরকারি বাস স্বাভাবিক থাকলেও হয়রান যাত্রীরা। মোটা টাকায় দূরদূরান্ত পাড়ি দিতে হচ্ছে অটোর মাধ্যমে। মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডে সারি সারি দাঁড়িয়ে থাকা বাসের মাঝে যাত্রী তুলে নিয়ে যাচ্ছে প্রায় চল্লিশটির বেশি অটো।
আরও পড়ুন All India Strike: দক্ষিণবঙ্গে রাস্তায় বেরিয়ে বনধ প্রত্যাখ্যান মানুষের, বাস-লরির কাচ ভাঙল সমর্থকরা
এদিন সকাল থেকেই ঝাড়গ্রামে বনধ সফল করতে রাস্তায় বামেরা। ঝাড়গ্রামে বনধের আংশিক প্রভাব পড়েছে। দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। বেসরকারি যানবাহন চলাচল বন্ধ। তবে সরকারি বাস চলাচল করছে।
অরণ্যসুন্দরী ঝাড়গ্রাম শহরে বাম সদস্যরা বাইক নিয়ে বনধের সমর্থনে মিছিল করে। অপরদিকে বনধ ব্যর্থ করার জন্য রাস্তায় নেমেছে তৃণমূল।
সকালে পানাগড় বাজারে মিছিল করে বাম কর্মী-সমর্থকরা। স্টেশন রোড পরিক্রমা করে পানাগড় বাজারের ক্যানেল পার মোড় ঘুরে পানাগড় বাজারের সিপিএমের দলীয় কার্যালয়ের সামনে এসে পথ অবরোধ করে বাম কর্মীরা। দীর্ঘক্ষণ পানাগড় বাজার বাসস্ট্যান্ডের সামনে পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। পুরনো জাতীয় সড়কের উপর অবরোধের জেরে যানজট হয়। ঘটনাস্থলে যায় কাঁকসা থানার বিশাল পুলিসবাহিনী।

দুর্গাপুর-বাঁকুড়া মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় বাম নেতাকর্মীরা। শুরু হয় ব্যাপক যানজট। বিক্ষোভে নরেন্দ্র মোদির কুশপুত্তলিকা দাহ করাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। কোকওভেন থানার পুলিসের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তি শুরু হয়। ঘটনায় একজন পুলিস কর্মী পড়ে গিয়ে জখম হন।
আরও পড়ুন Petrol-Diesel Price Hike: টানা সাতদিন বাড়ল পেট্রোল-ডিজেলের দাম, দেখে নেওয়া যাক কলকাতার নয়া দাম
দুদিনের ডাকা ধর্মঘটের প্রথম দিনে সব কিছু স্বাভাবিক থাকলেও বাঁকুড়া জেলায় বেসরকারি বাস চলাচলে ব্যাপক প্রভাব পড়ল। সকাল থেকেই বাসস্ট্যান্ড থেকে গড়ায়নি বেসরকারি বাসের চাকা। সরকারি বাস ও অন্যান্য যানবাহন স্বাভাবিক। দোকানপাট ও বাজার সব কিছু স্বাভাবিক ছিল জেলায়। বনধ সফল করতে রাস্তায় নামে বামেরা। অবরোধ হটাতে গেলে সারেঙ্গায় অবরোধকারী পুলিসের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ দেখান ধর্মঘটীরা।
বনধের মিশ্র প্রভাব পড়ল বীরভূমের সিউড়িতে। সিউড়ি বাসস্ট্যান্ডে মিছিল করে সিপিএম। সকাল থেকে বেসরকারি বাস চলছে না, তবে সরকারি বাস চলছে। রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা কম। বাসস্ট্যান্ড এলাকায় দোকানপাট কিছু বন্ধ থাকলেও শহরের দোকানপাট খোলা।
একইভাবে মিশ্র প্রভাব পুরুলিয়াতেও। সরকারি স্কুল খোলা রয়েছে। শহরের অধিকাংশ দোকানপাট ছিল বন্ধ, বেসরকারি বাস চলেনি। তবে সরকারি বাস নামানো হলেও তাতে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম। ট্রেন যাতায়াত ছিল স্বাভাবিক।
আরও পড়ুন Kerala Floating Bridge: সমুদ্রে দুলছে সেতু, ঢেউয়ের ব্রিজে পর্যটকদের ভিড়