কলকাতা: দুপুর ২টো ৪০। নবান্ন অভিযান শেষ। ঘোষণা করলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। কিন্তু তারপরেও আন্দোলন অব্যাহত। দফায় দফায় উত্তেজনা চলছে হাওড়া ও কলকাতায়। সাঁতরাগাছির পর হাওড়ায় উত্তেজনা। মধ্য কলকাতার এমজি রোডে পুলিশের গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। শুভেন্দু অধিকারীর পর আটক করা হয় সুকান্ত মজুমদারকে। দিলীপ ঘোষের ঘোষণার পরও দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা।
দলের রাজ্য নেতৃত্বের শীর্ষস্তরের দিলীপ ঘোষ এবং সুকান্ত মজুমদারের বিরোধ যে স্পষ্ট তা মঙ্গলবারের নবান্ন অভিযানেও আরও একবার প্রকাশ্যে চলে এল। কারণ সুকান্ত মজুমদার তখনও কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে তাঁর অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি জানান, আমাদের গ্রেফতার করা না পর্যন্ত তাঁদের অবরোধ চলবেই। বিকেল ৩টের পর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এরপরই উঠে যায় অবরোধ।
এদিন সাঁতরাগাছির মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়ার কথা ছিল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। হাওড়ার মিছিলের নেতৃত্ব দেন সুকান্ত মজুমদার, কলকাতার মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন দিলীপ ঘোষ। শুভেন্দুকে কলকাতার পুলিশ ট্রেনিং স্কুলের সামনে আটকে দেয় পুলিশ। শুভেন্দু বলেন, আমাদের গ্রেফতার করুন। সেখানেই শুভেন্দু বসে পড়েন। পরে তিনি দিব্যি গিয়ে প্রিজন ভ্যানে উঠে পড়েন। তাঁকে এবং লকেটকে লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়। শুভেন্দুর পরিবর্তে সাঁতরাগাছির মিছিলের নেতৃত্ব দেন সাংসদ সৌমিত্র খান।
আরও পড়ুন: Durga Puja 2022: ছয় শর্তে পুজোর অনুদানে ছাড়পত্র কলকাতা হাইকোর্টের, কী কী সেই শর্ত, জেনে নিন
নবান্ন অভিযান ঠেকাতে পুলিশের চেষ্টার কোনও ত্রুটি ছিল না। সাঁতরাগাছি, হাওড়া স্টেশন এবং কলকাতার কলেজ স্ট্রিট থেকে তিনটি মিছিল এগোয় নবান্নের দিকে। পুলিশ দিয়ে নবান্নকে একেবারে দুর্গ বানিয়ে ফেলা হয়। মিছিল যাতে এগিয়ে না যেতে পারে, তার জন্য মাটি খুঁড়ে লোহার ব্যারিকেড বসানো হয়েছিল।
তিনটি মিছিলই নবান্নের অনেক আগেই আটকে দেওয়া হয়। বিজেপি সমর্থকরা বাঁশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেললেও লোহার ব্যারিকেড ভাঙতে পারেনি। নবান্ন অভিযানের শুরুতেই ধুন্ধুমার ঘটে সাঁতরাগাছিতে। মিছিলকারীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করে। পুলিশের উপর সমানে ইট, পাথর, বাঁশের টুকরো ছোড়া হয় তিন জায়গাতেই। পুলিশ বেধড়ক লাঠি চালায়, ব্যবহার করা হয় জলকামান, ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাস।
বিজেপির এই অভিযানের জন্য বেশ কয়েক ঘণ্টার জন্য কলকাতা এবং হাওড়া শহরের বিস্তীর্ণ এলাকায় স্বাভাবিক জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। বহু রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। স্কুল-কলেজ ফেরত পড়ুয়ারা সমস্যায় পড়ে। পথচলতি বহু মানুষও পুলিশের মার খান। আতঙ্কে্ বহু দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।