কলকাতা: জাতীয় স্তরে (National Level) কোনও তৃতীয় শক্তির (Third Force) সম্ভাবনাকে খারিজ করে দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ এবং সমাজতান্ত্রিক শক্তিগুলিকে (Secular and Socialist Forcees) ঐক্যবদ্ধ (United) হওয়ার ডাক দিল কংগ্রেস (Congress)। রায়পুরে (Raypur) দলের প্লেনারি অধিবেশনে (Plenary Session) গৃহীত রাজনৈতিক প্রস্তাবে (Political Resolution) শনিবার বলা হয়েছে, এই শক্তিগুলিকে এক করাই কংগ্রেসের লক্ষ্য। আমরা সমমনোভাবাপন্ন (Likeminded) ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে চিহ্নিত করে তাদের কাছে টানার জন্য সর্বতোভাবে চেষ্টা করব। যারা কংগ্রেসের মতাদর্শের (Ideology) সঙ্গে সহমত (Agree) হবে, সেই ধর্মনিরপেক্ষ আঞ্চলিক (Regional) দলগুলিকে (Forces) সঙ্গে নেব। এই মুহূর্তে এনডিএকে (NDA) মোকাবিলা করার জন্য সম্মিলিত বিরোধী ঐক্য আশু প্রয়োজন। কোনও তৃতীয় শক্তির (Third Force) উত্থান বিজেপি কিংবা এনডিএকে সুবিধা (Advantage) করে দেবে বলেই মনে করছে কংগ্রেস।
২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে জাতীয় স্তরে বিরোধী জোটের নেতৃত্ব কোন দলের হাতে থাকবে, তা নিয়ে নানা চর্চা চলছে। নীতীশ কুমার, তেজস্বী যাদব, এম কে স্ট্যালিনের মতো আঞ্চলিক দলগুলির নেতারা চাইছেন, আর দেরি না করে কংগ্রেস বিরোধী জোটের নেতৃত্ব দিতে এগিয়ে আসুক। তৃণমূলের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সমাজবাদী পার্টির অখিলেশ যাদব, আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল, টিআরএসের (বর্তমানের বিআরএস) কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের মতো নেতা-নেত্রীরা আবার কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধী জোটে শামিল হতে নারাজ। তাঁরা কংগ্রেসকে বাদ দিয়ে তৃতীয় একটি ফ্রন্টের কথা ভাবছেন। মার্চ মাসের প্রথমে কলকাতায় সমাজবাদী পার্টির জাতীয় সম্মেলন হতে চলেছে। সেই সম্মেলনে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। সম্মেলনের ফাঁকে তৃণমূলনেত্রী মমতার সঙ্গে সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশের আলাদা করে বৈঠক হওয়ারও কথা আছে। কোনও কোনও মহল থেকে প্রচার চালানো হচ্ছে, জি ৮ নামে বিরোধীদের একটি তৃতীয় ফ্রন্টও গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Pat Cummins: মা অসুস্থ তাই দেশে ফিরেছেন কামিন্স, বাকি টেস্টে তাঁকে চাইছে কেন দল, জানুন
রাজনৈতিক মহল মনে করছে, সেই কথা মনে রেখেই কংগ্রেসের প্লেনারি অধিবেশন এদিন রাজনৈতিক প্রস্তাব নিয়ে সরকারিভাবে জানিয়ে দিল, কোনও তৃতীয় শক্তির ভাবনা বা উত্থান পরোক্ষে বিজেপিকেই সুবিধা করে দেবে। পাশাপাশি যাঁরা এ ধরনের চিন্তাভাবনা করছেন, তাঁদের কংগ্রেস একটা চেতাবনিও দিয়ে দিল। একই সঙ্গে তারা আঞ্চলিক দলগুলিকে কিছুটা স্পেস দিতেও চেয়েছে। ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, যেখানে কংগ্রেস প্রধান বিরোধী শক্তি, সেখানে আমাদের অনেক দায়িত্বশীল ভূমিকা নিতে হবে। প্রচারের সময় স্থানীয় ইস্যুগুলির উপর জোর দিতে হবে। প্রসঙ্গত, তৃণমূল অনেক আগেই বলেছে, আঞ্চলিক দলগুলি যে যেখানে শক্তিশালী, তাদের সেখানে নেতৃত্ব দিতে দেওয়া হোক। আবার কংগ্রেস যেখানে শক্তিশালী, সেখানে কংগ্রেস বিরোধী শক্তির নেতৃত্ব দিক।
রাজনৈতিক প্রস্তাবে কংগ্রেস বলেছে, বিজেপির ঔদ্ধত্য এতটাই যে দলের নেতারা বলছেন, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে তাঁদের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখেই পড়তে হবে না। এটা কংগ্রেসের কাছে একটা বড় চ্যালেঞ্জ। কংগ্রেস সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করল। বিজেপির এই ঔদ্ধত্য শুধু কংগ্রস নয়, অন্য রাজনৈতিক দল এবং ভারতের গণতন্ত্রের কাছেও বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২৩ সালে নটি বিধানসভা ভোট এবং আগামী লোকসভা ভোট ভারতের ভবিষ্যতের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।