কলকাতা: আন্দোলন করাতেই তখনকার শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterje) কথায় চাকরি হয়েছিল বলে মেনে নিলেন এক শিক্ষিকা (Teacher)। স্কুল সার্ভিস কমিশনও (School Service Commission0 স্বীকার করে নিল, ওই শিক্ষিকা নিয়ম মেনে চাকরি পাননি। সোমবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু (Justice Biswajit Basu) নির্দেশ দেন, কমিশনকে ওই শিক্ষিকার চাকরির সুপারিশ (Recommendation) বাতিল করতে হবে। এই ঘটনায় চরম ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি বসু। তিনি বলেন, স্কুল সার্ভিস কমিশনের চাকরি কি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পৈতৃক সম্পত্তি। কীভাবে বেছে বেছে চাকরির সুপারিশ হয়, জানি না।
নবম-দশম শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় মেধা তালিকার (Merit List) ওয়েটিং লিস্টে (Waiting List) প্রথম দিকে নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি হয়নি, এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টে মামলা করেন প্রিয়াঙ্কা দত্ত সমাদ্দার (Priyanka Dutta Samadder) নামে এক চাকরিপ্রার্থী। তাঁর অভিযোগ, তালিকায় ৩৩ নম্বরে নাম ছিল। কিন্তু তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়নি। পরিবর্তে তালিকায় ৫৩ নম্বরে থাকা সরমা ঘোষকে চাকরি দেওয়া হয়। ২০২০ সালের ১৪ জানুয়ারি তাঁকে নিয়োগপত্র দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। মামলাকারীর দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলন এবং অবস্থান বিক্ষোভে সামনের সারিতে ছিলেন সরমা। তখন শিক্ষামন্ত্রী আন্দোলনকারীদের কয়েকজনকে আলাদা করে ডেকে কথাও বলেন। সেখানে ছিলেন সরমাও। তারপরই তিনি চাকরির সুপারিশপত্র পান। পরে সরমাকে হাইকোর্ট এই মামলায় যুক্ত করলে তিনি এর সত্যতা স্বীকার করে নেন। আগামী ১৫ মার্চ এই মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও পড়ুন: Asansol: মেয়র নির্বাচনের এক বছর পর আসানসোলে বোরো চেয়ারম্যান পদে ভোট
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে কলকাতা প্রেস ক্লাবের (Calcutta Press Club) সামনে চাকরির দাবিতে অনশন অবস্থান করছিলেন নবম-দশমের চাকরিপ্রার্থীরা। টানা ২৯ দিন চলে তাঁদের সেই আন্দোলন। একদিন আচমকাই পার্থকে সঙ্গে নিয়ে অবস্থানস্থলে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর নির্দেশেই কয়েকজন আন্দোলনকারীকে নিয়ে পার্থ একটি কমিটি গড়ে দেন। আন্দোলনকারীদের দাবি, সেই কমিটিতে সরমাও ছিলেন। তারপরই সরমার চাকরি হয়ে যায়। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে চাকরিপ্রার্থীরা অবস্থান তুলে নেন।
তখন থেকে আন্দোলন চলছে চাকরিপ্রার্থীদের। সেই সময় পার্থ আন্দোলনকারীদের সম্পর্কে নানা কটু কথাও বলেন। চাকরিপ্রার্থীদের অভিযোগ, পার্থ তখন তাঁদের সঙ্গে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করতেন। চাকরিপ্রার্থীদের নেতা ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, পার্থ চট্টোপাধ্যায় অত্যন্ত ঔদ্ধত্যপূর্ণ ব্যবহার করতেন সেই সময়।