Friday, August 1, 2025
HomeআজকেAajke | সামাল দিতে এগরায়?

Aajke | সামাল দিতে এগরায়?

Follow Us :

মমতা দিল্লি যাচ্ছেন না, নীতি আয়োগের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে হাজির থাকার থেকেও এগরার খাদিকুলে যাওয়াটা তাঁর জরুরি বলে মনে হয়েছে। এটা আমরা বার বার দেখেছি, এড়িয়ে না গিয়ে ঘটনার মুখোমুখি হওয়াটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্র। কেবল এগরায় বোমা ফেটেছে তা তো নয়, ১১ জন মারা গিয়েছেন, এগরার পরেও আরও দু’ চার জায়গায় বাজি ফেটেছে, মানুষ মরেছে। তার সঙ্গে যোগ হয়েছে বিরোধীদের প্রচার— বাজি নয়, বোমা তৈরি হচ্ছিল, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগের প্রস্তুতি। এবং এই প্রচার কি পুরো ভিত্তিহীন? তাও নয়, মানুষের একাংশ এই প্রচারে কান দেবেন বইকী। সেই প্রচার নিয়ে কংগ্রেস সিপিএম বিজেপি ছড়িয়ে যাচ্ছে জেলায় জেলায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়ার আগেই এই প্রচার যে নির্বাচনী ইস্যু হয়ে যাবে তা মমতা বিলক্ষণ বুঝেছেন। তাই তিনি চললেন খাদিকুলে। অবশ্যই যাবেন সেই সব গ্রামবাসীদের বাড়িতে যাঁদের আত্মীয় স্বজনরা মারা গেছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াবেন। হ্যাঁ, মানস ভুঁইয়াকে দেখে চোর চোর স্লোগান উঠেছিল, তাড়াও করেছিল স্থানীয় মানুষজন। মানসবাবু এমন পলিটিকাল তাড়া খেতে অভ্যস্ত, এর আগে মঙ্গলকোটে তাড়া খেয়েছেন, তখন তিনি কংগ্রেস, তাড়া করেছিল সিপিএম। ধুতি টুতি খুলে সে পলায়নের ছবি স্মৃতিতে জ্বলজ্বল করছে এখনও। এবার ততটা হয়নি বটে, তবে আর খানিকক্ষণ থাকলে কী হত বলা যায় না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুবিধে হল, ওই ঔদ্ধত্য দেখানোর সাহস কারও হবে না, বড়জোর জয় শ্রীরাম বলে চিৎকার করে মমতার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারা যাবে, মমতার পায়ের তলার জমি মানসবাবুর মতো আলগা নয়। সেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগামিকাল চললেন খাদিকুল গ্রামে। কেন? মানুষের পাশে দাঁড়াতে না পঞ্চায়েত ভোটের আগে অবস্থা সামাল দিতে? সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, সামাল দিতে এগরায়?

আসলে এ এক চরিত্র। ভালো হোক, মন্দ হোক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চরিত্র হল মানুষের সঙ্গে থাকা। আমার এক সিনিয়র সাংবাদিক দাদার মুখে শোনা, মমতা যাচ্ছেন সিঙ্গুর, গাড়িতে অন্য কয়েকজনের মধ্যে সেই সাংবাদিকও ছিলেন। মমতা গল্প করতে ভালোবাসেন, নানান গল্প করছেন, পানমশলার গল্প, যা নাকি উনি নিজেই তৈরি করেন, তার নাকি পেটেন্ট নেওয়া যায়। তারপর কোন চাষ কখন হয়, এবারে যা বৃষ্টি হয়েছে তাতে ফসল কেমন হবে। এসবের মাঝে সিঙ্গুর কাছে আসছিল, রাস্তার দু’ধারে মানুষ দাঁড়িয়ে, বদলে যাচ্ছিল মমতার মুখ, মানুষের ভিড়েই তিনি খুঁজে পান অক্সিজেন, মানুষের মাঝেই তিনি স্বচ্ছন্দ। তাঁর সমস্ত কথা বন্ধ হল, জানলার কাঁচ খুলে গেল, তিনি হাত নাড়ছেন, হাসছেন। মাছকে ডাঙা থেকে জলে ছেড়ে দিলে যে স্বাচ্ছন্দ্য আসে, সেই উচ্ছ্বাস তাঁর চোখেমুখে। 

আরও পড়ুন: Aajke | বিজেপিতে মহারাজ? 

জ্যোতিবাবুর একটা ছবি বহুদিন আগে দেখেছিলাম সম্ভবত সাগরদ্বীপে, দূরে একলা একটা চেয়ারে বসে আছেন জ্যোতি বসু, কেউ নেই সামনে বিরাট সমুদ্র। না, হলফ করে বলতেই পারি এমন কোনও একলা মমতার ছবি পাওয়া যাবে না। মমতা মানেই মানুষের ভিড়, যে ভিড় তাঁকে অক্সিজেন দেয়, এনার্জি দেয়। কাজেই মমতা খাদিকুলে যাচ্ছেন আবারও ঘটনার মুখোমুখি দাঁড়াতে, দল বলছে এই সফর মৃত মানুষদের স্বজনদের পাশে দাঁড়াতে, অবস্থা সামাল দেওয়াটা প্রধান নয় গৌণ লক্ষ্য। খেয়াল করে দেখুন খাদিকুল আপাতত শান্ত, মূল কালপ্রিট ধরা পড়ার পড়ে মৃত, আরও যারা জড়িত তাদেরও ধরা হচ্ছে। বেআইনি বাজি নিয়ে একটা কমিটি তৈরি হয়ে গেছে, মমতা চাইছেন বেআইনি বাজি কারখানাগুলো সহজ নিয়মেই আইনি তকমা পাক, নির্দিষ্ট নিয়ম কানুন মেনেই ব্যবসা করুক। কাজ চলছে। কিন্তু মমতা সময় বার করে সেখানে যাচ্ছেন। আর বিরোধী দলের নেতারা? বিজেপির দিলীপ ঘোষ? বলছেন ঠেলার নাম বাবাজি, নীতি আয়োগের বৈঠক ছেড়ে মুখ্যমন্ত্রী অবস্থা সামাল দিতে যাচ্ছেন, বোমা কারখানা চলছে, মানুষ মরছে, মমতা মৃতদের পরিজনদের হাতে কিঞ্চিৎ অর্থ সাহায্য করে ভোটের রাজনীতি করতে যাচ্ছেন। আচ্ছা মানুষ ঠিক কী মনে করছেন? মমতা কি ভোটের রাজনীতি করতেই এগরা যাচ্ছেন? নাকি মানুষের পাশে দাঁড়াতেই এগরা চললেন মমতা? 

রাজনীতির আঙিনায় নেতারা পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড়াতে দ্বিধাবোধ করেন না, অনেক মানুষের সে সাহস থাকে না যে সাহস এক সত্যিকারের নেতার থাকে। গান্ধীজি অনায়াসে দাঙ্গা বিধ্বস্ত এলাকায় চলে গিয়েছিলেন, পুলিশি পাহারাও ছিল না। পুলিশ কর্মচারীরা বিধানসভায় মারমুখী হয়ে ঢূকে পড়েছেন, নেতামন্ত্রীরা পালাচ্ছেন, জ্যোতিবাবু সটান বেরিয়ে কই কোথায় কী হয়েছে বলে বিক্ষুব্ধদের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন। ঠিক উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, একবারের জন্যও সিঙ্গুরে কৃষকদের সামনে গিয়ে দাঁড়ানোর সাহস দেখালেন না, একবারও গেলেন না নন্দীগ্রামে, দাঁড়ালেন না পুলিশের গুলিতে নিহত মানুষের পাশে। এক সাক্ষাৎকারে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় বলেছিলেন, দিল্লির বঙ্গভবনে আমার দেখা হয়েছিল বুদ্ধবাবুর সঙ্গে, তখন উনি খুবই হতাশ, বলছিলেন, বিরোধীরা ওনাকে খুনি বলছে ইত্যাদি। আমি বলেছিলাম আপনি দু’ হাত জোড় করে চলে যান মানুষের কাছে, বলুন ভুল হয়েছে, উনি গেলেন না। বড্ড দাম্ভিক ছিলেন। হ্যাঁ, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এই কথা বলেছিলেন। মমতা সেই ভুল করেন না, সামাল দিতে পারবেন কি না, পারলে কতটা পারবেন জানা নেই, কিন্তু মানুষের মুখোমুখি দাঁড়াতে ওনার কোনও সমস্যাই নেই, সেটা আরেকবার প্রমাণিত।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Randhir Jaiswal | সংবাদিক বৈঠকে রণধীর জয়সওয়াল দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
INDIA | Donald Trump | ট্রাম্পের ২৫% শুল্ক বড় সিদ্ধান্ত ভারতের কী কী পদক্ষেপ দিল্লির? দেখুন
00:00
Video thumbnail
Samik Bhattacharya | BJP | সাংবাদিক বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Hooghly Incident | কী অবস্থা হুগলিতে? তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদ দ্বন্দ্ব? স্কুলে গেলেন রচনা
00:00
Video thumbnail
Vice President | ধনখড়ের উত্তরসূরি কে? কোন কোন সম্ভাব্য নাম উঠে আসছে? দেখুন Exclusive রিপোর্ট
00:00
Video thumbnail
Mamata Banerjee | হুগলিতে বন্যা পরিস্থিতি কীরকম? খতিয়ে দেখতে হুগলিতে যাবেন মুখ্যমন্ত্রী
03:28
Video thumbnail
Tamil Nadu | BJP | NDA-তে বড় ভাঙন, দল ছাড়লেন বড় নেতা! কী করবে বিজেপি?
07:31:05
Video thumbnail
Samik Bhattacharya | BJP | সাংবাদিক বৈঠকে শমীক ভট্টাচার্য দেখুন সরাসরি
06:42
Video thumbnail
Vice President | উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন কবে? তারিখ জানিয়ে দিল নির্বাচন কমিশন, কবে নির্বাচন?
02:24:50
Video thumbnail
BJP | Chakdaha | জমা জলে সাঁতার কেটে বিক্ষো/ভ বিজেপি কর্মীদের
01:13

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39